, , ,

মঠবাড়িয়ায় গ্রামীণ সড়কে সংগঠিত কৃষকের তালবীজ রোপণ

দেবদাস মজুমদার :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সড়কে মাটির ক্ষয়রোধ ও বজ্রপাত থেকে জীবন সুরক্ষার লক্ষে সংগঠতি কৃষকরা গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে পরিবেশবান্থ তালবীজ রোপণ করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উদ্যোগে স্থানীয় টিকিকাটা ইউনিয়নের ভেচকী গ্রামেরআড়াই কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে এ তালবীজরোপণ করা হয়।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ূম বুধবার বিকেলে এ তালবীজ রোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে কৃষকরা সড়কের দুই পাশে সারি করে প্রথম দফায় ৩২০টি তালবীজ রোপণ করেন।

এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুন নেছা সুমী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জেরিন রহমান,উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার কর্মকার, পার্থ প্রতীম হাওলাদার,মো. সোহাগ হাওলাদার ও সুজন গাইন সহ স্থানীয় কৃষক ও গ্রামবাসি উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকটা জনপদ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশী বজ্রপাত প্রবণ । প্রতিবছর বজ্রপাতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সেই সাথে নিচু ভূমির কারনে মাটির ক্ষয় বেশী। তাল গাছ পরিবশে বান্ধব। এ গাছ মাটির ক্ষয়রোধ সহ বজ্রপাত প্রশমণে কার্যকর। কৃষি দপ্তরের কর্মীরা ওখানকার কৃষকদের সংঘঠিত করে স্থানীয় ভেচকী গ্রামের আড়াই কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে সাড়ি করে তালবীজ বপনের উদ্যোগ নেই। এতে স্থানীয় কৃষকরা সংগঠিতভাবে এগিয়ে আসেন। সভা করে কৃষকদের মাধ্যমে গ্রামের গৃহস্থবাড়ি হতে এ মৌসুমে তালের বীজ সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দফায় ৩২০ টি তালের চারা সংগ্রহ করে এ পরিবেশ বান্ধব কর্মসূচি শুরু করা হয়। এভাবে আড়াই কিলোমিটার বৃক্ষহীন সড়কের দুই পাশে তালবীজ বপন করা হচ্ছে। সেই সাথে গাছ সুরক্ষায় বাঁশের খাাঁচাও স্থাপন করা হচ্ছে। যাতে গাছ সুরক্ষিত থাকে। এ বিষয়ে গ্রামবাসিদের তালগাছ সুরক্ষায় সচেতন করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ভেচকী গ্রামের ষাটোর্ধ বয়সী কৃষক মো. আলীম মাতুব্বর বলেন, আমাদের গ্রামে খুব বজ্রপাত হয়। জলাবদ্ধতা ও অতিবর্ষনে মাটির ক্ষয় হয়। ভেচকী গ্রামের অন্তত তিন কিলোমিটার রাস্তা বৃক্ষহীন। কৃষি দপ্তর ও বনভিাগ আমাদের সেখ নে তালগাছ লাগানোর পরামর্শ দেয়। আমরা কৃষকরা দলবদ্ধ হয়ে সভা করে সবাই একমত হই। এরপর আমরা গ্রামের গৃহস্থবাড়ি হতে তালবীজ সংগ্রহ করে তা সড়কের দুই পাশে রোপন করি।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুন নেছা সূমী বলে, কৃষকরা সংগঠিত হয়ে সম্মত হলে কৃষিদপ্তর এ পরিবেশ সুরক্ষার কর্মসূচি বাস্তবায়নে পরিকল্পনা নেয়। কেননা তালগাছ এমনিতেই হারিয়ে যাচ্ছে। এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহিষ্ণু বৃক্ষ। বিলুপ্ত বাবুই পাখিরা তালগাছে বাসাও বাঁধে। ফলে তালগাছ আমাদের প্রণবৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষা করে।
তিনি আরো জানান, মোট আড়াই কিলোটিার সড়কে এ তালবীজ রোপণ কর্মসূচি সফল হলে প্রত্যন্ত এলাকার কৃষক ও গ্রামবাসির মাঝে এ কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা হবে।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ূম বলেন, বৃক্ষ আমাদের জীবন প্রকৃতির অংশ। তালগাছ একটি পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষ। নানা সংকটে এটি হারিয়ে যাচ্ছে। কার এর পরিকল্পিত আবাদ নেই। পরিকল্পিতভাবে তালবীজ কৃষিবিভাগ ও স্থানীয় সংগঠিত কৃষকদের একটি প্রশংসনীয় পরিবেশ উদ্যোগ। আশা করছি এ পরিবেশ উদ্যোগের ফলে অন্য এলাকার কৃষ ও গ্রামবাসি তাল গাছ রোপণে আগ্রহী হবেন।

About The Author

Leave a Reply