মোঃ রাসেল সবুজ >
সুশান্ত সরকার কালু।গ্রামের সাধারন এক যুবক।কিন্তু এবারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।প্রভাবশালী, শিক্ষিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শতাধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন বরিশালের আগৈলঝাড়ায় হতদরিদ্র এই যুবক।কালু জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ায় শুধুমাত্র তার নির্বাচনী এলাকাই নয়, সমগ্র উপজেলাবাসীকেই তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।তিনি অনেক বাঘা বাঘা প্রভাবশালী, শিক্ষিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের পরাজিত করে জয়ের মালা গলায় পরেছেন।
উপজেলার রাহুৎপাড়া গ্রামের সুশান্ত সরকার কালু পিতা সুধন্য সরকারের মৃত্যুর পরে দরিদ্রতার কারণে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে পারেননি।জায়গা-জমি না থাকায় জীবিকার প্রয়োজনে কালু মুক্তিযোদ্ধা অফিসে মাসে দু’হাজার টাকা বেতনে অস্থায়ী ভিত্তিতে পিওনের চাকরী করতেন।সবাই তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের কালু বলেই চেনেন।
গত ২২ মার্চ প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে এলাকাবাসীর অনুরোধে তিনি ৪নং গৈলা মডেল ইউনিয়নের তালতা ও রাহুৎপাড়া মৌজা নিয়ে গঠিত ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বর পদে অংশগ্রহণ করেন।নিজের সঞ্চিত ১ হাজার টাকা ও অন্যের দেয়া ৫শ’ টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।ব্যাংকের ৩০ হাজার টাকা ঋণখেলাপীর দায়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হবার সময় তার বড়ভাই বাবুলাল সরকার ওই ঋণ পরিশোধ করেন।
কালুর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ওই গ্রামের অজিত রায়, আলবার্ট অচিন্ত্য বিশ্বাস, রাজেন হালদার, অজয় সরকার, শিশির অধিকারী জানান, নির্বাচনী সভায় আমাদের রাহুৎপাড়া গ্রামের সকল বাসিন্দারা ঘোষণা দেন, কালুর নির্বাচনী খরচের জন্য তারা প্রত্যেকে ১ দিনের বাজার খরচের টাকা ব্যয় করবেন।সেভাবেই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কালুর নির্বাচনী প্রচারণা চালান। কালুর মা বিনোদিনী সরকার বলেন, আমার কালুকে মানুষ এত ভালবাসে তা আগে জানতাম না। তাদের ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারবোনা। তাই সেই জনতার হাতেই কালুকে তুলে দিলাম।নির্বাচনে কালু ওই ওয়ার্ডের ৭জন প্রভাবশালী, শিক্ষিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শতাধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন।নির্বাচিত হবার পরে এলাকাবাসী তাকে নতুন পোশাক কিনে দিয়েছেন।
নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য সুশান্ত সরকার কালু নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক দাবি করে জানান, জনগণ আমাকে ভালবেসে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে।আমি যেন সুখে-দু:খে ওয়ার্ডবাসীর পাশে থেকে তাদের ভালবাসা অক্ষুন্ন রাখতে পারি।