সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক >>
আজ গৌরবের ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবন । ১৯৭১ সালের এই দিনেই স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে রক্তাক্ত পথচলা শুরু করেছিল বাংলার মানুষ। বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণে মন্ত্রমুগ্ধ বাঙালি এই দিনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির যুদ্ধে, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলেছিল সাধারণ মানুষ । দেশ মাতৃকার টানে জীবন দানের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আপামর জনতা। ৯ মাসের গণযুদ্ধের পর অর্জিত হয় মহান বিজয়। ।১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সূচিত বিজয়ের আগে এই উত্তাল মার্চই হয়ে উঠেছিল প্রেরণার উৎস, অভিযাত্রার শুরু।
স্বাধীন বাংলাদেশ আজ ৪৭তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য শ্রদ্ধা ও মর্যাদায় পালন করছে। গোটা দেশ জুড়ে আজ গৌরবের উ’সব।
আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। সূর্যোদয়ের সময় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে।
সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সারা দেশে ও বিদেশে একযোগে একই সময় শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হবে। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে কর্মসূচিতে অংশ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এর আগে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়াও সব সড়ক ও সড়কদ্বীপ সাজানো হয়েছে জাতীয় ও রঙিন পতাকায়। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোয় আলোকসজ্জার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ করতে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে হবে।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সংবাদপত্রে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার হচ্ছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট বের করবে। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রমসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে আছে আজ ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও সকাল ১১টায় টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন। আগামীকাল বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনাসভা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন যুব ও ছাত্র সংগঠন কর্মসূচি নিয়েছে।
এছাড়া সারাদেশে প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগেঠনের আয়োজনে দিনভর স্বাধীনতা দিবসে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
সূত্র > কালের কণ্ঠ।