বাংলাদের মুক্তিযুদ্ধের এক অন্যতম ঘাঁটি,এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি নিদর্শন,আমাদের সুন্দরবন।সুন্দরবন শুধু বাংলাদেশের নয়,পুরো পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষায়ও অবদান রাখছে।
মাঝে মধ্যে অবাক হই_কিছু কিছু বুদ্ধিজীবীর কথা শুনে,যারা বলে”সুন্দরবন থাকলে বা কি আর না থাকলেই বা কি?”অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এর কী গুরুত্ব আছে?_তারা এই বনের প্রকৃত গুরুত্ব বুঝে কথা বলেন বলে মনে হয় না।
ফারাক্কা বাঁধের পর শুধু আমাদের সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়,সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক ব্যাপক ক্ষতি হয়ে আসছে এবং উজানের দেশ ভারতেরও নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে পলি জমে।
বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে বিহারের গ্রামের পর গ্রাম,সর্বশেষ এবং সর্ব বৃহত্তম যে ঝুঁকি হুমকি সিডরের মতো এসে হাজির হয়েছে সুন্দরবনের সামনে তাহলো_বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে নির্মাণ হতে যাওয়া এবং পশুর নদীর
সাথে সংযুক্ত,ভারত বাংলাদেশ যৌথ বিনিময়ে প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র!কয়লা আসবে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট বড় নদীর মধ্য দিয়ে জাহাজে করে।
বিশেষজ্ঞরা অনেক আগেই বলেছেন,সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী কয়লা,ছাই,সার ও তেলবাহী জাহাজ সুন্দরবনের প্রাণিকুলের জন্য ‘ভ্রাম্যমাণ বোমা’
(ই আই এ) প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন কয়লা পোড়াতে হবে,যাতে গড়ে বছরে ১০ লাখ টনের বেশি ছাই উৎপন্ন হবে।বছরে ৮০ লাখ টন কার্বনডাই অক্সাইড উৎপন্ন হবে।
এ ছাড়াও বছরে ৫১ হাজার ৮৩০ টন বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড ও ৩১ হাজার ২৫ টন নাইট্রোজেন ড্রাই অক্সাইড নির্গত হবে।
এবার হিসাব করুন সুন্দরবনসহ এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ জীবন কোন পথে?তবে আশার দিক হলো এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ইউনেস্কো সুন্দরবনের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে ৩০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে,যাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অন্যত্রে সরিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সরকারের মতামত চেয়েছেন;এখন আমাদের অপেক্ষার পালা |
লেখক:আল আহাদ বাবু, শিক্ষার্থী,মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ