পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী কে.এম লতিফ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। উপজেলার উত্তর মিঠাখালী গ্রামের আবুল কালাম নামে এক দাতা সদস্য মঙ্গলবার(১০ মার্চ) মঠবাড়িয়া জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত শুনানী শেষে মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদকে অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ২৮ মার্চ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে।
মামলার অভিযোগে বাদি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে দাতা সদস্য হিসেবে ২০ হাজার টাকা করে ১৩ জনের সর্বমোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমাকৃত ছিল । সমুদয় অর্থ প্রধান শিক্ষক ব্যাংক হতে উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। ফলে ওই ১৩জন দাতা সদস্যের নাম ভোটার তালিকায় অন্তভূক্ত হয়নি।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, প্রতি দুই বছর পর মঠবাড়িয়ার লতিফ ইনস্টিউশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দাতা সদস্য ভোটার হিসেবে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা ব্যাংক রিসিভের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে । সে অনুযায়ীদাতা সদস্য ভোটার হতে ১৩জন আবেদনকারি ৬ মাস পূর্বে গত ৭ অক্টোবর ২০১৯ সালে মঠবাড়িয়া ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-৩১৬৪ নম্বরে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়ে রসিদ গ্রহণ করেন। কিন্তু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ব্যাংক হতে সমুদয় অর্থ তুলে নিয়ে স্কুল ফাÐে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন। এতে সম্প্রতি স্কুলের নির্বাচনে প্রণয়নকৃত ভোটার তালিকায় ভূক্তভোগি ১৩জন দাতা সদস্য অন্তর্ভূক্ত হতে ব্যর্থ হন। গত ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ ১৪৩ জানের দাতা সদস্যের তালিকা প্রকাশ করলে সেখানে মামলার বাদিসহ ১২জনের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
মামলার বাদি মো. আবুল কালাম অভিযোগ করেন, নির্বাচনে দাতা সদস্য ভোটার হতে নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যাংক হিসেবে টাকা জমা দেওয়ার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমুদয় অর্থ তুলে নেন। এর মধ্যে ১৩জনের টাকা সে স্কুল তহবিলে জমা না করে তসরুপ করেন। পরে ভূক্তভোগিরা প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রতিকার চাইলে তিনি টাকা কথা অস্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, অসৌজন্যমূলক আচরণ, শিক্ষকদের সাথে সমন্বয়হীনতাসহ নানা অভিযোগে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে ।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মামলাটি মিথ্যা দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, দাতা সদস্যদের কাছ থেকে ¯িøপের মাধ্যমে টাকা জমা নিয়ে দাতা সদস্য করা হয়েছে। মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তার স্বপক্ষে সংশ্লিষ্টø কাগজ পত্র যথা সময় আদালতে উপস্থাপন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের যৌথ একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করার কোন একতিয়ার আমার নাই।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর বলেন, প্রধান শিক্ষককে সামাজিক ভাবে হযরানি ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য উদ্দেশ্য মুলক ভাবে একটি মহল এ মামলাটি করেছে। যৌথ একাউন্ট থেকে টাকা উত্তলোন করার প্রধান শিক্ষকের কোন সুযোগ নাই। এটি একটি মিথ্যা মামলা যার কোন ভিত্তি নাই।
উল্লখ্য গত ২ মার্চ ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী মঠবাড়িয়ার লতিফ ইনস্টিটিউশনের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার শেষ মূহুর্তে এসে ভোটার তালিকায় অনিয়ম ও শান্তি শৃংখলার অভিযোগ তুলে নির্বাচন বন্ধে হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন জানালে হাইকোর্ট নির্বাচনের একদিন আগে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন স্থগিতাদেশ দিলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়।