ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - হাইড্রোজেন বোমার কাছে কিছুই নয় অ্যাটম বোমা

হাইড্রোজেন বোমার কাছে কিছুই নয় অ্যাটম বোমা

উত্তর কোরিয়া এই প্রথম ঘোষণা দিয়েছে তারা একটি হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করেছে। হাইড্রোজেন বোমার আগে তারা অ্যাটম বোমা বা পারমাণবিক বোমাও পরীক্ষা করেছে অনেকবার। কিন্তু তাদের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার কথা শুনে আন্তর্জাতিক মহলে যে আতঙ্ক ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে সেটা আগে কখনো হয় নি। প্রশ্ন হচ্ছে কেন হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা এতো উদ্বেগের সৃষ্টি করলো? অ্যাটম বোমা ও হাইড্রোজেন বোমার মধ্যে পার্থক্য কি?

মজার বিষয় হচ্ছে, অ্যাটম বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা দুটোই আসলে পারমাণবিক বোমা। অর্থাৎ বোমার শক্তিটা আসে মূলত পারমাণবিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থেকে। তাহলে পার্থক্য কি? পার্থক্যটা হচ্ছে, বিস্ফোরণের সময় এই দুই বোমার বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হওয়ার প্রক্রিয়াতে। সোজা কোথায় দুটো দুইভাবে ফাটে। কাজেই বিস্ফোরণের পদ্ধতিতে যদি পার্থক্য হয় তারমানে বিস্ফোরণের পরে ক্ষয়ক্ষতিতেও পার্থক্য হবে। সেই দিক থেকে বিচার করলে দুই বোমা মোটেই এক নয়।

hydrogen1

নিউক্লিয়ার ফিশন এবং ফিউশন পদ্ধতি

কিন্তু ঠিক কিভাবে তারা বিস্ফোরিত হয়? সবচেয়ে বড় পার্থক্যটা হচ্ছে, অ্যাটম বোমা বিস্ফোরিত হয় নিউক্লিয়ার ফিশন পদ্ধতিতে। ফিশন পদ্ধতিতে শক্তি উৎপন্ন হয় একটি বড় পরমাণুকে ভেঙ্গে দুটো ছোট হাল্কা পরমাণু তৈরির মাধ্যমে। কিন্তু হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের সময় শক্তি উৎপন্ন হয় নিউক্লিয়ার ফিউশন পদ্ধতিতে। ফিউশন পদ্ধতি ফিশনের ঠিক উল্টো। এখানে দুটো পরমাণু একত্রিত হয়ে একটা বড় পরমাণু তৈরি হয়। দুটোই অবিরত প্রক্রিয়া।

তবে হাইড্রোজেন বোমার ভিতরে নিউক্লিয়ার ফিশন অস্ত্রও দেয়া থাকে যেটার মাধ্যমে ফিউশন পদ্ধতিকে চালু করা হয়। এটা আসলে সুইচের মত কাজ করে। অর্থাৎ একটা হাইড্রোজেন বোমার ভেতরে ছোট একটা অ্যাটম বোমা ভরা থাকে। কারণ ফিশন ছাড়া ফিউশন চালু হবে না। নিউক্লিয়ার ফিউশনে হাইড্রোজেন পরমাণু ব্যবহার করা হয় বলেই এই বোমার নাম দেয়া হয়েছে হাইড্রোজেন বোমা।

কাজেই যে পদ্ধতিতে বোমা দুটো তৈরি করা হয়েছে সেখান থেকে বোঝা যাচ্ছে যে হাইড্রোজেন বোমা আসলে অ্যাটম বোমা থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। যে কারণে উত্তর কোরিয়া যখন প্রথম এই বোমা পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে তখন সারা বিশ্বে সেটা এতোটা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

উত্তর কোরিয়া সর্বপ্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করে ২০০৬ সালে এবং তার পরে আরও দুইবার তারা এটা করেছে। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনকি ভূগর্ভেও শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার কারণে পৃথিবীতে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প। তবে উত্তর কোরিয়া সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছে, তাদের বোমাটা ছিল খুবই ছোট আকৃতির। কিন্তু এখানে মনে রাখা প্রয়োজন ছোট আকারের একটি হাইড্রোজেন বোমার শক্তিও অ্যাটম বোমার চাইতে বেশি হতে পারে।
hydrogen2

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে সাজানো অস্ত্র মামলায় আসামী করে হয়রাণির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গত সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে থানা পুলিশের দায়ের করা একটি ...