ফিফা সভাপতি জেপ ব্লাটার ও উয়েফা প্রধান মিশেল প্লাতিনিকে আট বছরের জন্য ফুটবল সংক্রান্ত সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ফিফার এথিক্স কমিটি বিশ্ব ফুটবলের শীর্ষ এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে সোমবার নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
২০১১ সালে ইউরোপিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্লাতিনিকে ‘অবৈধ উপায়ে’ ২০ লাখ ইউরো দেওয়ার জন্য তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ব্লাটারকে ৫০ হাজার সুইস ফ্রাঁ ও প্লাতিনিকে ৮০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করা হয়েছে।
ব্লাটার ও প্লাতিনির ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে এথিক্স কমিটি। দুজনই অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ব্লাটারের একজন মুখপাত্র জানান, নিষেধাজ্ঞার রায়ের বিপক্ষে আপিল করা হবে। বিষয়টি নিয়ে কোর্ট অব আর্বিট্র্যাশন ফর স্পোর্টে যাওয়ারও প্রস্তুতি চলছে।
ব্লাটার পরে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি তার নিজের ও ফিফার জন্য লড়াই করবেন। প্রয়োজন হলে সুইস আইনের আওতায় আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
ব্লাটার জানান, তিনি মনে করেছিলেন, তিনি এথিক্স কমিটিকে বোঝাতে পেরেছিলেন যে প্লাতিনিকে তার অর্থ দেওয়ার প্রক্রিয়াটা বৈধ ছিল। তবে এথিক্স কমিটি জানায়, ব্লাটার যে চুক্তির আওতায় প্লাতিনিকে অর্থ দিয়েছিলেন, তার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
প্লাতিনি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আমার জন্য কোনো বিস্ময় হয়ে আসেনি। আমার বিরুদ্ধে ফিফার এথিক্স কমিটির এই কার্যকলাপ পুরোপুরি ভণ্ডামি।”
উয়েফাও এক বিবৃতিতে জানায়, ফিফার এই সিদ্ধান্তে তারা ‘খুবই হতাশ’।
দীর্ঘ এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ফুটবল প্রশাসক হিসেবে ৭৯ বছর বয়সী ব্লাটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেল।
১৯৯৮ সাল থেকে ফিফা প্রধানের দায়িত্বে থাকা ব্লাটার আগামী ফেব্রুয়ারিতে সভাপতি নির্বাচনের আগেই সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সুইস এই কর্মকর্তার উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছিল ফ্রান্সের সাবেক ফুটবল তারকা ৬০ বছর বয়সী মিশেল প্লাতিনিকে।
২০০৭ সাল থেকে ইউরোপের সর্বোচ্চ ফুটবল সংস্থা উয়েফার দায়িত্বে থাকা প্লাতিনি আর ফিফা সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।
গত ২৯ মে পঞ্চমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ক’দিন পরেই ফিফাকে ঘিরে ঘুষ কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়ায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্লাটার।
গত অক্টোবরের শুরুতে ফিফা সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্লাতিনি। তার কদিন পরেই ব্লাটার ও প্লাতিনির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করে সংস্থাটির এথিক্স কমিটি। এই কমিটি দুজনকে ফুটবলের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করে।