ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - শীতের প্রকোপে কাবু উপকূলের দরিদ্র শিশুরা

শীতের প্রকোপে কাবু উপকূলের দরিদ্র শিশুরা

দেবদাস মজুমদার >
গত কয়েকদিন ধরে দক্ষিণ জনপদে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। দিনের বেলা শীতের আমেজ না থাকরলও বেলা শেষে হিমেল হাওয়া ও আর কুয়াশায় শীত পড়তে শুরু করছে । সন্ধ্যা শুরুর সাথে সাথে চারিদিকে কুয়াশা ছড়িয়ে পড়ছে। উপকূলীয় পিরোজপুর ও বরগুনা নদী তীরবর্তী এলাকার দরিদ্র জেলে পল্লীর মানুষেরা প্রতিবছর শীত মৌসুমে গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। শীতার্ত দরিদ্র মানুষেরা তাই প্রতিবছর শীত বস্ত্র সহায়তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গোনে। শীতে সবচেয়ে বেশী কষ্টের শিকার হয় শিশু ও বৃদ্ধরা ।1

বরগুনার বিষাখালী নদী তীরবর্তী ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদের নদী তীরবর্তী এলাকায় ইতিমধ্যে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়তে শুরু করছে । শীতের কারণে কষ্ট বাড়ছে দিনমজুর, গরীব, অসহায় এবং ছিন্নমূল মানুষের। খড়কুটা জ্বালিয়ে ও কুণ্ডুলি পাকিয়ে বসে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে নদী তীরবর্তীর অসহায় শিশু কিশোরদের । ইতিমধ্যে তারা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু ও বয়স্ক রোগী ভর্তি হওয়া শুরু করেছে।
অসহায় দিন মজুর ও অতি দরিদ্ররা অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র সংগ্রহ করতে পারছেনা ।
মঠবাড়িয়ার ক্ষেতাছিড়া জেলে পল্লীর সাত বছর বয়সী শিশু জামাল জানায়, বিকাল নামলেই মোগো এইহানে কুয়াশা পড়ে। ঠাণ্ডা বাতাস বয়। তহন খুব শীত লাগে।3

বরগুনার বামনার বিষখালী নদী তীরের কলাগাছিয়া জেলে পল্লীর জেলে বরুণ দাস জানান, এবার শীত মনে হচ্ছে আগে ভাগেই শুরু হইছে। আমাগো এলাকার শিশুদের শীত নিবারণের কোন ব্যস্থা নাই। বাজারে গরম কাপড়ের যে দাম তা কেনার উপায় নাই। বামনার প্রায় ১ হাজার ২০০ জেলে পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের শীতের কষ্ট বাড়ছে। শীত নিবারনে আমাগো গড়ম কাপড় দরকার।

মঠবাড়িয়ার বলেশ্বর নদী তীরের বেতমোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এসময় নদী তীরের দরিদ্র শিশু ও বৃদ্ধরা শীতে কাবু হবে। তবে এখনো সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কোনো শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ কেউ নেয়নি।এখনই দরিদ্র শিশুদের জন্য শীত বস্ত্রের প্রয়োজন।

বরগুনার বামনা উপহজলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুজ্জামান সগীর জানান, ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের ঝাপ্টায় দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। বিশেষ করে দিনমজুর ও বস্ত্রহীন ছিন্নমূল মানুষেরা শীতের তীব্রতায় কাবু হয়ে পড়েছে। শীতের এই তীব্রতা বৃদ্ধি পেলেই দরিদ্র মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে।

মঠবাড়িয়া পৌর শহরের উন্নয়ন কর্মী ইসরাত জাহান মমতাজ বলেন, প্রতিবছর শীতে দরিদ্র শিশুরা বেশী দুর্ভোগের শিকার হয়। শীতের প্রকোপে বর্তমানে শিশুরা ঠাণ্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সমাজের বিত্তবান ও সামাজিক সংগঠনগুলোর এখনই শিশুদের শীত বস্ত্র সহায়তা নিয়ে পাশে দাড়ানো জরুরী।

প্রতিবেদনের ছবিগুলো বামনা উপজেলার বিষখালী নদী তীরের কলাগাছিয়া জেলে পল্লী থেকে তোলা।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...