ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - বাংলা নববর্ষ বরণ করতে ব্যাস্ত পিরোজপুরের পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ

বাংলা নববর্ষ বরণ করতে ব্যাস্ত পিরোজপুরের পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ

পিরোজপুর প্রতিনিধি: ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইংরেজী পুরাতন বছর বিদায় দিয়ে বরণ করে আরেকটি বছর। যদিও ইংরেজী বর্ষ বরণ যতটা না ঘটা করে পালন করা হয়। তার চেয়ে বেশি ঘটা করে পাঁজির (পঞ্জিকা)পাতা উল্টিয়ে বৈশাখ থেকে চৈত্র পর্যন্ত ১২মাস পর আর একটি নুতন বর্ষ বরণে মেতে ওঠে বাঙালী জাতি। আর পুরাতন বছর ১৪২২ বঙ্গাব্ধকে বিদায় দিয়ে বাঙ্গালী জাতির প্রানের উৎসব বাংলা নববর্ষ ১৪২৩ প্রানবন্ত ও উপভোগ্য করতে এখন ব্যাস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। আর এ উপলক্ষে জেলা,উপজেলা প্রশাসনসহ বৈশাখী মেলাকে আরও বর্ণিল ও জমকালো করতে পিরোজপুরের পাল সম্প্রদায়ের নারী – পুরুষ নির্বিশেষে মাটির তৈরী নানা খেলনা সামগ্রীতে এখন রং তুলির আঁচরে ব্যাস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে শহরের দামোদর নদের উত্তর পাশে পাল সম্প্রদায়ের অসংখ্য পরিবারে মাটির তৈরী নানা ধরনের প্রস্তুতকৃত খেলনা সামগ্রী বিভিন্ন যায়গায় সরবরাহ করতেও ব্যাতি-ব্যাস্ত হয়ে উঠেছেন তারা। এতটুকু দম ফেলবার ফুসরত নেই তাদের পরিবারের শিশু সন্তান থেকে শুরু করে স্কুল পড়–য়া ছেলে মেয়েদেরও। পরিবারের কর্তারা সাংবাদিকদের জানালেন, সকাল থেকে রাত অবধি তৈরীকৃত খেলনা পলিথিনের মোড়কে প্যাকেটজাত করা, রোদে শুকান, রং করা, ডিজাইন করা, রং ম্যাচ করা, পাইকারদের সরবরাহ করা ও পুটিংয়ের কারুকার্য সম্পাদন করায় মহা ব্যাস্ত তারা। তাদের তৈরীকৃত নানা ধরনের খেলনা সামগ্রী ও অন্যান্যের মধ্যে হাঁড়ি-পাতিল, বাসন-কোসন, হাতী ঘোড়া, বিশ্ব কবি রবি ঠাকুর, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, আরবীতে আল্লাহু লেখা, কলস, চুলা, আম, কাঁঠাল, মাটির ব্যাংক, গরু, বাঘ, পুতুল, মাছ, মোরগ, হরিন, কুমড়া প্রভৃতি উপকরনাদি রয়েছে।

তবে তারা যথেষ্ট শঙ্কিত এ কারনে, বাজারে রং ও অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বাড়তি থাকায় তাদের উৎপাদিত পন্যের আসল দাম ঘরে তুলতে পারবেন কি-না তা নিয়ে। তাছাড়া এখন প্লাষ্টিকের খেলনায় সয়লাব বাজার সেখানে তাদের মাটির তৈরী এসব খেলনার কদর কতটা স্থান পাবে তা নিয়েও শঙ্কা তাদের।

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪২৩বঙ্গাব্ধকে নান্দনিক ভাবে বরণ করতে চলছে প্রস্তুতিসভাও। কোথাও ১দিন আবার কোথাও ১’র অধীকদিন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চলছে স্টল বরাদ্ধের কাজ। ওই দিন বিভিন্ন গ্রামীণ ঐতিহ্যের বাহারী সব আয়োজনে সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা ইলিশ, ঘুড়ি ওড়ানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা বর্নিল আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। অন্য দিকে ব্যাবসায়ীরা পুরাতন বছরের বাকি আদায়ের সিলিপ প্রস্তুত,হাল খাতার আয়োজন ,বাড়াটে ব্যাবসায়ীদের মালিককে ঘর ভাড়া পরিশোধ করতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন উত্তোলন, মিস্টি দোকানীদের রসনাদার খাবার মিস্টি তৈরীতে চলছে পুরোদমে কাজ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে সাধ্যানুযায়ী বছর শুরুর দিনে চিড়া,মুড়ি,দৈ মিস্টি ছাড়াও নানা মজাদার খাবার সংগ্রহ চলছে। চলছে চৈত্র সংক্রান্তীতে নিল পূজার আয়োজন। পরিবারের মঙ্গল কামনায় চলছে উপোশ থাকাসহ নানা স্ব স্ব ধর্মীয় আয়োজন। সব মিলিয়ে পাওয়া -না পাওয়া,হতাসা,বেদনা সব বিদায় দিয়ে পুরাতন বছরকে পিছনে ফেলে নুতন বছরে সবাই ভালো থাকবে,সুরক্ষায় থাকবে এ প্রত্যাশায় চলছে বর্ষবরণ প্রস্তুতি।

Leave a Reply

x

Check Also

এফ-কমার্স ভিত্তিক মঠবাড়িয়া ই-বাজারের সাফল্যগাথা

মঠবাড়িয়া ই-বাজার, একটি এফ কমার্স বা অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম। আর অনলাইন ভিত্তিক ব্যাবসার নতুন ধারণাকেই ...