বিশেষ প্রতিনিধি >>
বরিশাল বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্যাতনের পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়নের গিলাবাদ গ্রামের স্মৃতি কণা বিশ্বাস এবার সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তিনি আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে শুক্রবার জামা দিয়েছেন।
জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের গিলাবাদ গ্রামের স্কুল শিক্ষক রুহিনী কুমার বিশ্বাসের মেয়ে স্মৃতি কণা বিশ্বাস। ১৯৯৫ সালের ৯ আগস্টপ্রতিদিনের বিএনম কলেজ ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে যান । তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির কয়েকজন বখাটে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে স্মৃতি কণা বিশ্বাসকে কলেজ ক্যাম্পাসেই প্রকাশ্য দিবালোকে শারিরীক নির্যাতন করেছিল। এরপর থেকেই স্মৃতি কণা বিশ্বাসের জীবনে নেমে এলো নানামুখী বিপর্যয়। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে থাকলেও সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে বাপ–দাদার বসত ভিটে থেকে সপরিবারে উচ্ছেদ হতে হয় তাদের। স্মৃতি কণাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয় প্রতিদিন।
জীবনে এমন বিপর্যস্ত হয়েও স্মৃতিকণা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন । বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় (লিয়াকত–বাবু) কমিটির সদস্য হিসেবে প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে অংশ নেন। দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক ভোরের কাগজ, আজকের কাগজ, বাংলাবাজার, প্রথম আলো, জনকন্ঠ, ইত্তেফাক–এর প্রদায়ক হিসেবেও দীর্ঘদিন কাজ করেন স্মৃতি। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিউজ শাখায়ও কর্মরত ছিলেন।
২০০০ সাল থেকে ‘সোসাইটি টু আপলিপ্ট সোস্যাল হারমনি’ নামক একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে সেই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া ও নির্যাতিত নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ট্রেনিং প্রদান ও ভিকটিম নারীদের আইনি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এসবের পাশাপাশি মৌলিক লেখালেখিতেও যুক্ত রয়েছেন স্মৃতি কণা। ২০১৮ সালের বই মেলায় তার লেখা উপন্যাস ‘গ্রাস’ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯ সালের বইমেলায় একজন ভিকটিম নারীর জীবনী সম্বলিত তার আর একটি জীবনমুখী উপন্যাস প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এ উপন্যাসের আলোকে স্মৃতি নিজেই তাঁর নিজস্ব প্রডাকশন হাউজ থেকে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা তৈরী করতে যাচ্ছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা এমপি হিসেবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ।
স্মৃতি কণা বিশ্বাস বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি করার কারনে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। গ্রামের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হতে হয়েছে গোটা পরিবারকে। সামাজিকভাবে পদেপদে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমি নির্যাতিত নারীর কষ্টটা বুঝি। আমি নারীর উন্নয়নের সকল বাঁধার বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে নির্যাতিত ও বঞ্চিত নারীর পাশে থেকে কাজ করতে চাই।