ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - মঠবাড়িয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার পরিবার আজও উপেক্ষিত !

মঠবাড়িয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার পরিবার আজও উপেক্ষিত !

বিশেষ প্রতিনিধি >>

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারের হাতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা’র পরিবার স্বাধীনতার ৪৬ বছর ধরে উপেক্ষিত । শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা পাননি। কেউ এ বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের খোঁজও নিচ্ছেন না। এমনকি তালিকাভূক্ত এ শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য প্রমাণসহ বার বার আবেদন করলেও সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা মেলেনি।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের চিত্রা গ্রামের মৃত. আব্দুর রশিদ মাষ্টার ওরফে একরাম আলী হাওলাদারের ছেলে গোলাম মোস্তফা ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মঠবাড়িয়ায় প্রথম যে সাত জন পাকবাহিনী ও রাজাকারদের হাতে নিহত হন তাঁদেও মধ্যে অন্যতম শহীদ গোলাম মোস্তফা । সাত শহীদের ৬জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ভাতাসহ রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও শহীদ গোলাম মোস্তফা’র পরিবার রহস্যজনক কারণেই আজও সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়। অথচ মঠবাড়িয়া দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কেএম লতীফ ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র গোলাম মোস্তফা’র নামানুসারে বিদ্যালয়ের মাঠটি শহীদ মোস্তফার নামে শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠ নাম করণ করা হয়। ওই মাঠে মহান বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ সকল সরকারী ও বে-সরকারী কর্মসূচী পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

শহীদ গোলাম মোস্তফার ছোট ভাই সাবেক সেনা সদস্য গোলাম কবির বাদল জানান, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নং মুবিম/প্রঃ৩/মুক্তিযোদ্ধা/গেজেট/২০০৩/৪৭৯ বাংলাদেশ গেজেটের (অতিরিক্ত) কপি তালিকাভুক্ত করে ২০০৫ সালের ১৪ মে প্রকাশ করে। ওই গেজেটে জাতীয় কমিটির সুপারিশ ক্রমে শহীদ গোলাম মোস্তফা’র ক্রমিক নং ৮৫৯। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সরকারী কোন সাহায্যের তালিকায় আজও এ বীর শহীদকে অন্তভূক্ত করেনি।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়ার বিশিষ্ট আইনজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার পাইক বলেন, শহীদ মোস্তফা মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মঠবাড়িয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। অথচ এ বীর শহীদদের পরিবারটি আজও উপেক্ষিত অবস্থায় রয়েছেন। এটি চরম দুর্ভাগ্যজনক।

মঠবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. বাচ্চু মিয়া আকন বলেন, গোলাম মোস্তফা ছাত্রাবস্থায় শহীদ হন। তার মা-বাবা ও বিধবা বোন কেউ বেঁচে নেই। তাঁর ছোট ভাই বেঁেচ আছেন। তবে সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী ভাতা ও সুযোগ সুবিধায় সে অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি.এম. সরফরাজ জানান, শহীদ পরিবারটি যে সরকারী সুযোগ সুবিধা বা ভাতা পাচ্ছেনা বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পরিপত্রের আলোকেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...