ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মঠবাড়িয়ায় নিখোঁজের একদিন পর বিএনপি নেতার লাশ উদ্ধার : পরিবারের অভিযোগ তুলে নিয়ে হত্যা

মঠবাড়িয়ায় নিখোঁজের একদিন পর বিএনপি নেতার লাশ উদ্ধার : পরিবারের অভিযোগ তুলে নিয়ে হত্যা

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >>

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হাবিবুর রহমান তালুকদার (৫৮) নামে এক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নিখোঁজের একদিন পর তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার তুষখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগারের পেছন হতে ওই বিএনপি নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত হাবিবুর রহমান উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

সে স্থানীয় ধানীসাফা ইউনিয়নের উদয়তারা বুড়ির চর গ্রামের মৃত আবদুল ছত্তার তালুকদারের ছেলে।

পরিবারের অভিযোগ রবিবার সকাল ১০টার দিকে তুষখালী বাজারের একটি ঔষধের দোকানে তিনি বসা থাকা অবস্থায় ধানীসাফা ইউনিয়ন আ. লীগ নেতা ইদ্রিস তালুকদারের নেতৃত্বে তার দলবল তাকে তুলে নেওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় স্বামী নিখোঁজের বিষয়ে স্ত্রী মালেকা বেগম সোমবার বিকালে মঠবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান তুষখালী বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। সকাল ১০টার দিকে তুষখালী বাজারের একটি ঔষধের দোকানে তিনি বসা থাকা অবস্থায় ধানীসাফা ইউনিয়ন আ. লীগ নেতা ইদ্রিস তালুকদারের নেতৃত্বে কয়েজন লোক তাকে ডেকে নেওয়ার পর আর সে বাড়ি ফেরেনি। পরে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা তুষখালী বাজার সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে তার লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে তার লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিস তালুকদারের সঙ্গে হাবিবুর রহমান তালুকদারের পরিবারের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে।
গত রোববার ইদ্রিস তালুকদারের ছেলেদের সঙ্গে হাবিবুর রহমান তালুকদারের ছেলেদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ লোক দিয়ে হাবিবুর রহমানকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল হাবিবুর। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় তুষখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটের কাছ থেকে তার পরিবারের লোকজন হাবিবুরের মৃতদেহটি শনাক্ত করে।

নিহত হাবিবুরের ভাই স্বপন তালুকদার ভাই হত্যার বিচার দাবি করে বলেন,রবিবার দুপুরে ভাই হাবিবকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন তালুকদারের নির্দেশে ইউপি সদস্য ইদ্রিস তালুকদার ও তার পুত্র রাজিব, রুম্মান, সহযোগী সাইফুল, জুয়েলসহ ১৫-২০ জনের দুর্বৃত্তরা তুষখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে নিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। তিনি আরও জানান, গত ইউপি নির্বাচনী জের, দীর্ঘ দিনের পারিবারিক বিরোধ, তুষখালী লঞ্চঘাটের আধিপাত্য নিয়ে ইউপি সদস্য আ’লীগ নেতা ইদ্রিস তালুকদার ও হাবিব তালুকদারের বিরোধ চলে আসছিল। গত শনিবার হাবিব তালুকদারের ছেলে স্কুল ছাত্র রাকিবের সাথে প্রতিপক্ষ ফারুক তালুকদারের ছেলে সাইফুলের ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইদ্রিস তালুকদারের ছেলে রাজীব, তার সহযোগী সাইফুল তুষখালী বাজারের রবিবার সকালে হাবিব তালুকদারকে প্রকাশ্যে মারধর করে। এ সময়ে নিহত হাবিবের ছেলে কলেজ ছাত্র হাফিজুর ও স্কুল ছাত্র রাকিব পিতাকে বাঁচাতে এলে রাজিব ও সাইফুলের দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করলে দুই ভাই পার্শবর্তী এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ওই ঘটনার পর থেকে হাবিব তালুকদার নিখোঁজ হয়।

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে. এম তারিকুল ইসলাম জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত হাবিবুরের পরিবারের পক্ষ হতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পিরোজপুর পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ হোসেন আজ মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...