ব্রেকিং নিউজ
Home - দৃশ্যকাব্য - দৃশ্যকাব্য : লজ্জাবতী লাজুক প্রাণ

দৃশ্যকাব্য : লজ্জাবতী লাজুক প্রাণ

দেবদাস মজুমদার > লজ্জাবতী লতানো উদ্ভিদ। চিড়ল চিড়ল পাতা আর গোলাপী আভার ফুলে শোভন এ প্রাণ । প্রকৃতিগতভাবে জন্মে থাকা লজ্জাবতী গাছ বেশ মজার । শুধু এর চিড়ল পাতাই নয় ফুল দেথতেও বেশ সুন্দর । ছোট ছোট ফুল হালকা গোলাপী রঙের আভায় সুনন্দ বর্ণিল লজ্জাব তী ফুল। সাধারনত পধের ধারে ঝোপঝাড়ে জন্মে এ গাছ। লজ্জাবতী গাছ কন্কময়। ছোট ছোট কাঁটা ভর্তি গাছ। এই গাছ কেটে নষ্ট করলেও প্রতিবছির এরা নতুন করে জন্মায়। লজ্জাবতী পাতারা আসলেই লাজুক প্রাণ। মানুষের স্পর্শে পাতা দলের নেতিয়ে পড়ার অনুভূতি যেন তাই বলে দেয়। স্পর্শ করলে পাতারা বুজে যায়। পড়ে আবার পাতারা মেলে ধরে তার সমস্ত মুগ্ধতা। অতি রোদের তাপ ও সন্ধ্যাবেলায়ও লজ্জাবতী পাতাদল নেতিয়ে থাকে। লজ্জাবতী আসলে উদ্ভিদ জগতে অন্য এক লাজুক প্রাণ। সারাবছর ফুল ফুটলেও এখন এখন লজ্জাবতী ফুলের ভরা মৌসুম। উপকূলীয় বরগুনার পাথরঘাটার মাদারতলী গ্রামের সড়কে পাশে লজ্জাবতীর ঝোপে এখন বর্ণিল ফুলের সমারোহ জানিয়ে দেয় এখন আসলে লজ্জাবতী ফুলের ভরা মৌসুম।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ভাষায়,লজ্জাবতী (লাতিন ”Mimosa”’) হলো প্রায ৪০০ প্রজাতির গুল্ম ও লতার একটি গলের নাম । যা লেপিউম জাতীয ফ্যারায়সি পরবািররে Mimosoideae উপ-পরিবারের অন্তর্গত। এর নাম এসেেছ গ্রীক ভাষার শব্দ (mimos) “নকল” থেকে। এর দ্বি-পক্ষল পাতা বিদ্যমান। লজ্জাবতীর সবচেয়ে পরিচিত প্রজাতি
হলো Mimosa pudica| । এর পাতা ছোঁযা মাত্র বুজে যায় ও গাছ নেতিয়ে পড়ে। এছাড়া প্রখর তাপের প্রভাবে ও সন্ধ্যা বেলায়ও পাতা নেতিয়ে পড়ে। এর আদি নিবাস মধ্য আমেরিকার মেক্সিেেকতে, তবে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সবখানেই এটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের দেশে আগে বেশ চোখে পড়ত । তবে নানা পরিবেশগত বিপর্যয়ে লজ্জাবতী যখন তখন দেখা মেলেনা। এ উদ্ভিদ প্রাণটি এখন অনেকটাই বিলুপ্ত প্রাণ।

লাজ্জাবতী ( Lazzaboti ) উদ্ভিদের স্থানীয় নাম লজ্জাবতী, সমঙ্গা, লজ্জালু, অঞ্জলিকারিকা । এর ভেষজ নাম Mimosa pudica Linn । লজ্জাবতী Leguminosae পরিবার ভূক্ত উদ্ভিদ। এর পাতা,ফুল ও সমগ্র ডাল পালা ব্যবহার্য অংশ। প্রকৃতিগতভাবে জন্মে তবে এ উদ্ভিদ বছরের সব মৌসুমে রোপন করা সম্ভব।
ফলে বছররে যে কোনো সময় লজ্জাবতী সংগ্রহ করা যায়। বারো মাসই ফুল ও ফল হয়। তবে সাধারনত জুলাই থেেক ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ফুল ও ফল বেশি ফোটে। প্রতিটি শুটিতে ৩/৪ টি বীজ বিদ্যমান। ফলের মধ্যে ধূসর চোট ছোট কাঁটা থাকে। সাধারনত বনজ আবস্থায়ই লজ্জাবতী জন্মে।
উপমহাদেশের লজ্জাবতী পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশে ও অসমে এর প্রাচূর্য বেশী।

গুল্ম জাতীয় এ উদ্ভিদ বড়ই স্পর্শকাতর। সারা উদ্ভিদ অসম্ভব বাঁকা কাঁটা থাকে। কথিত আছে লজ্জাবতী ঝোপের ভেতর দিয়ে সাপ চালাচল করনো। পাতার বোঁটা এক থেেক দেড় ইঞ্চি লম্বা। পাতা গুলি ঠিক বিপরীতভাবে সন্নিবেশিত। পুষ্পদন্ড ২ থেেক ৩ ইঞ্চি লম্বা। ফুল তুলার মত নরম ও ফিকে গোলাপী বর্ণ আর কিছুটা হালকা বেগুনী আভায় বর্ণিল ফুল ফোটে। বেশ দৃষ্টিনন্দন এই ফুল।
উদ্ভিদটি প্রকৃতিগতভাবেই একটু ভিন্নতর প্রকৃতির।। স্পর্শকাতর বলেই হয়ত এর নাম লজ্জাবতী হয়েছে। মানুষ আকৃষ্ট প্রাণ এই লজ্জাবতী।
বনজ ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ এ প্রাণ। হাত পা জ্বালা, অর্শ রোগ, যোনি ক্ষতে, নাড়ী সরে আসা, আঁধারযোনি ক্ষত, আমাশয, মল কাঠিন্য, দাঁতরে মাড়ি ক্ষত, বগলে দূর্গন্ধ, দুষ্ট ক্ষত, পোডা , কান পাকা, রমনে অতৃপ্তি, গ্রন্থিবাতসহ নানা রোগের উপশমে এর ্ওষধি গুণ বিদ্যমান। তাই লজ্জাবতী আসলে বনাজি এক ঔষধি প্রাণ। আমাদের উদ্ভিদ প্রাণ বৈচিত্র্যে মহা আশ্চর্য এ প্রাণের এক রহস্যময় স্পর্শকাতরতা।
সূত্র > বারসিক নিউজ ডটকম

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...