ব্রেকিং নিউজ
Home - দৃশ্যকাব্য - দৃ শ্য কা ব্য : ঔষধি অর্জুন

দৃ শ্য কা ব্য : ঔষধি অর্জুন

দেবদাস মজুমদার > সবুজ সতেজ ঘন পাতা ছাঁপিয়ে বৃক্ষ জুড়ে ছড়িয়েছে মুকুল। নিভৃত গাঁয়ের পথের পাশেই এই মুগ্ধতা চোখে পড়েছে। এখন বৃক্ষের শরীর জুড়ে যৌবনা আমেজ। ঔষধি অর্জুনের এখন কচি পাতার ডগায় মুকুলের সমারোহ। অর্জুন বড় বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ । বৃহৎ গাছ; ৫০/৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, পাতার আকারটা একটু বড় হলেও মানুষের জিভের মত কিন’ পাতার ধারগুলি খুব সরু দাঁত করাতের মত কিন’ মাংসল নয়, শক্ত গাছটির বোটনিক্যাল্ নাম Terminalia arjuna.ফ্যামিলি- Combretaceae. সমগ্র উপমহাদেশে কম-বেশী এ গাছ দেখা যায়। আমাদের দেশে বেড়ি বাঁধ অথবা সড়কের পাশে অর্জুন গাছের দেখা মেলে।
অর্জুন গাছের ছাল, মূল, কান্ড, পাতা, ফল, ফূল ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বনো্ঔষধি অর্জুন দরকারী এক গাছ। আবাদী অথবা অনাবাদী দুইভাবেই এ বনজের বিস্তার ঘটে।
বৃহৎ গাছ; ৫০/৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, পাতাগুলির আকারটা একটু বড় হলেও মানুষের জিভের মত কিন’ পাতার ধারগুলি খুব সরু দাঁত করাতের মত কিন’ মাংসল নয়, শক্ত গাছটির বোটনিক্যাল্ নাম Terminalia arjuna.ফ্যামিলি- Combretaceae. সমগ্র উপমহাদেশে কম-বেশী। এ গাছ দেখা যায়।
অর্জুন গাছের ছাল সংগ্রহ করতে পূর্বের দিকের ছালটা নিতে হয়; কারণ পূর্বের দিকের বায়ুর তরলত্ব বেশী, ওদিকের ছালটা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াকারিত্বেও অনুকূল। সকালের রৌদ্র ও সেদিককার ছালটায় রঞ্জনরশ্মি বেশী সমৃদ্ধ হয়।
যাঁদের বুক ধড়ফড় করে অথচ হাই ব্লাডপ্রেসার নেই, তাঁদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০/১২ গ্রাম অথবা শুষ্ক হলে ৫/৬ গ্রাম একটু থেতো করে, আধ পোয়া দুধ আর আধসের জল একসঙ্গে সিদ্ধ করে, আন্দাজ আধ পোয়া থাকতে নামিয়ে, ছে’কে বিকেলের দিকে খেতে হয়। তবে গরম অবস্থায় ঐ সিদ্ধ দুধটা ছে’কে রাখা ভাল। এর দ্বারা বুক ধড়ফড়ানি নিশ্চয়ই কমবে। তবে পেটে বায়ু না হয় সে দিকটাও লক্ষ্য রাখতে হয়।
রক্তপিত্তে- মাঝে মাঝে কারণ বা অকারণে রক্ত ওঠে বা পড়ে; সে ক্ষেত্রে ৪/৫ গ্রাম ছাল রাত্রিতে জলে ভিজিয়ে রেখে ওটা সকালে ছেকে নিয়ে জলটা খেতে হয়। শ্বেত বা রক্তপ্রদরে- উপরিউক্ত মাত্রা মত ছাল ভিজানো জল আধ চামচ আন্দাজ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে উপশম হয়।
ক্ষয় কালে- অর্জুন ছালের গুড়ো, বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে, সেটা শুকিয়ে (অন্ততঃ সাত বার) নিয়ে রাখতেন প্রাচীন বৈদ্যেরা। দমকা কাসি হতে থাকলে একটু ঘৃত ও মধু বা মিছিরির গুড়ো মিশিয়ে চাটতে দিতেন।
শুক্রমেহে(Spermatorrhoea)- অর্জুন ছালের গুড়ো ৪/৫ গ্রাম আধ পোয়া আন্দাজ গরম জলে ৪/৫ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর ছেঁকে ঐ জলে আন্দাজ ১ চামচ শ্বেতচন্দন ঘষা মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।
যাঁদের প্রস্রাবের সঙ্গে Puscell বা পুঁজ বেশী যায়, তাঁরা ৩/৪ গ্রাম শুকনো অর্জুন ছাল আধ পোয়া আন্দাজ গরম জলে ৪/৫ ঘন্টা ভিজিয়ে পরে ছেকে তার সঙ্গে একটু রান্না করা বার্লি মিশিয়ে খেলে ওটা চলে যাবে।
রক্ত আমাশয়ে- ৪/৫ গ্রাম অর্জুন ছালের কাথে ছাগল দুধ মিশিয়ে খেলে ওটা সেরে যায়।

অর্জুন গাছের সব অংশই কষায় রস (Astringent); এর জন্যই ওর কাথে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। ওদিকটা ও লক্ষ্য রাখা দরকার। তবে এটা দেখা যায় দুধে সিদ্ধ অর্জুন ছালের ব্যবহারে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।
জনশ্রুতি আছে বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা মানে বাড়িতে একজন ডাক্তার থাকা। তাই উপকারীর অর্জুনের আবাদ বাড়াতে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।
-লেখক : সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী

Leave a Reply

x

Check Also

ব্যাঙের ছাতায় ভেষজ গুণ

দেবদাস মজুমদার <> স্থানীয় পরিচিতি ব্যাঙের ছাতা । অঞ্চলভেদে ভূঁইছাতা, কোড়ক ছাতা, ছত্রাক, পলছত্রাক, ভুঁইছাতি, ...