ব্রেকিং নিউজ
Home - অন্যান্য - বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - পাখি কেন একই গান বারবার গায়?

পাখি কেন একই গান বারবার গায়?

আজকের মঠবাড়িয়া ডেস্কঃ গ্রীষ্ম আর বসন্ত জুড়ে গাছে গাছে পাখির অবিরত কলতান শোনা যায়।কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে তারা একই একই গান বারবার উচ্চারণ করে।একই শব্দ বারবার গেয়ে চলার কারণ কী? কোনো সমস্যা নয়তো?

আসলে আমরা যে শব্দগুলোকে ‘গান’ বলে ধরে নিচ্ছি সেগুলো পাখিদের কাছে শুধুই গান নয়।এর চেয়ে বেশি কিছু।পাখিরা তাদের মুখ থেকে উচ্চারণ করা শব্দের মাধ্যমে নিজেদের সীমানা নির্ধারণ করে।কুকুরদের বেলায় যেমনটা দেখা যায় অনেকটা তেমন।কুকুররা নিজের অধিকৃত এলাকাকে ঘিরে মূত্র বিসর্জন দেয়।যতটুকু এলাকা জুড়ে মূত্রের গন্ধ বিরাজমান ততটুকু এলাকা তার নিজের বলে অন্য কুকুরদের জানান দেয়।অন্যরাও এই নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলে।ভুলে কোনো কুকুরের এলাকায় ঢুকে পড়লে লেজ গুটিয়ে রাখে।নাছোড়বান্দা বাঁকা লেজ কীভাবে যেন তখন সোজা হয়ে যায়!

অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এরকম নিজের সীমানা নির্ধারণের প্রবণতা দেখা যায়।কেউ কেউ মূত্রের মাধ্যমে এই কাজটা করে আবার কেউ কেউ নিজের গায়ের গন্ধ ছড়িয়ে দেবার মাধ্যমে এই কাজটা করে।এমনকি মানুষের মাঝেও এই প্রবণতা বিদ্যমান।মানুষ বেড়া বা দেয়াল তৈরি করে নিজের সীমানা নির্ধারণ করে।পাখিদের বেলায় এমন সুবিধা নেই।কিন্তু তাদের নিজেদের এলাকা নির্ধারণ করার প্রবণতা ঠিকই আছে।পাখিরা তাদের এলাকা নির্ধারণের কাজটা করে চিৎকার চেঁচামেচির মাধ্যমে। যতটুকু এলাকা এলাকা ঘিরে শব্দ বিস্তার লাভ করলে ততটুকু এলাকা তার অধীনে।একই গান বারবার গাইবার মাধ্যমে অন্যান্য পাখিদের এই বার্তাই দেয় পাখিরা।

পাখিদের বেলায় চেঁচামেচি আরো বাড়তি সুবিধা দেয়।পুরুষ প্রজাতির চেঁচামেচি নারী প্রজাতিদের আকর্ষণ করে।অধিক চেঁচামেচি, কোনো পাখিকে অধিক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচনা করতে সাহায্য করে।নারী সদস্যরা যখন ডিম দেয় এবং ডিমে তা দেয় তখন নারীরা অন্য কোনো কাজ করার ফুরসত পায় না।অনাগত সন্তানদের নিরাপত্তার দিকটা একদমই দুর্বল হয়ে পড়ে।এমন পরিস্থিতিতে বিপরীত লিঙ্গের যে সদস্যটি তাকে অধিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিবে নারী সদস্যটি তার সাথেই জোড়া বাধবে।

পুরুষদেরও গান গাইতে অনেক শক্তি ব্যয় হয়।যখন গান গায় চেঁচামেচি করে তখন খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে না।শক্তি ব্যয় হওয়া এবং নতুন শক্তির যোগান না হওয়া- দুই দিক থেকেই লোকসান।পাশাপাশি আরো একটি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।পাখিরা যখন গান গায় তখন অন্য শিকারি প্রাণী সহজে তাদের শনাক্ত করে ফেলতে পারে, যা তাদের জীবনের জন্য হুমকি।এতসব লোকসান থাকার পরেও পাখিরা চেঁচামেচির কাজটা করে যায়।উদ্দেশ্য একটাই, বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করা।

গান গাওয়ার মাধ্যমে সে যেন বলে চলছে- হে নারী, তুমি এদিক দিয়ে উড়ে যাচ্ছ, নিশ্চয় আমার গান শুনতে পাচ্ছ, শ্রাব্যতার সীমার বিস্তৃতি বেশি হয়ে থাকলে নিশ্চয় দেখবে আমার গলা কতদূর পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করছে, এই সীমানায় তোমার ক্ষতি করে এমন কেউ প্রবেশ করেছে তো মরেছে, দেখো আমার কণ্ঠ কত দারুণ, বিবেচনা করে দেখ এই রাজ্যে আমিই তোমার জন্য সবচেয়ে যোগ্য পাত্র!

শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্য চেঁচামেচি অন্য বার্তা বহন করে।শিশুরা চেঁচামেচির মাধ্যমে তাদের খাদ্যের চাহিদার কথা জানান দেয়।

(তথ্য সূত্রঃ বিজ্ঞান পত্রিকা)

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে জমি দান করতে চান অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি 🔴🟢 পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার অবসরপ্রাপ্ত মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক রণজিৎ কুমার সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ...