ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - আমুয়ায় ঐতিহ্যবাহী দশোহরা উৎসব সম্পন্ন

আমুয়ায় ঐতিহ্যবাহী দশোহরা উৎসব সম্পন্ন

বামনা প্রতিনিধি >
শত বছরের ঐতিহ্যে লালিত ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার ও বরগুনার বামনা উপজেলার চালিতাবুনীয় সিমান্তবর্তী আমূয়া নদী মোহনায় দুইদিন ব্যাপী দশোহরা উৎসব।

শুক্রবার থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিষখালী নদীর তিনটি শাখা নদীর এ মোহনায় প্রতিবছরের মত এবারও দশোহরা উৎসবে উপকূলীয় এলাকার কয়েক হাজার উৎসব মুখর মানুষ সমবেত হন। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ঐতিহ্যবাহী দশোহরা উৎসব তাঁর ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

শনিবার আমূয়া নদীর মোহনায় সরজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, দশোহরা উৎসবকে ঘিরে দূর দূরান্ত থেকে উৎসব মুখর মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবস্থল যেন জন সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। শতশত যান্ত্রিক ট্রলার আর নৌকায় চড়ে নাচ গানের মধ্য দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ ঐতিহ্যবাহী দশোহরা উৎসব পালন করে। এ সময় উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন দুর্গা পূজা মণ্ডপ হতে সেখানে যান্ত্রিক ট্রলারে করে ৭টি দুর্গা প্রতিমা দশোহরা উৎসবে নিয়ে আসা হয়। প্রতিমা বহনকারী ট্রলার নদীর মোহনার চারপাশ জুড়ে ঘুরে ঘুরে ঢাক ঢোল পিটিয়ে আনন্দ উল্লাস করে এ উৎসব পালন করেন। উৎসবে সকল ধর্মের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, প্রায় আড়াই শত বছর আগে তৎকালীন জমিদার লালা বিশ্বজিৎ মিত্র আমূয়া বন্দরের এ উৎসবের সূচনা করেন। সেই থেকে আজও অবধি প্রতিবছর দুর্গা পূজার দশমী তিথিতে এ নদী মোহনায় দশোহরা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর এ উৎসব ঘিরে নৌকা বাইচ কবিগান,জারী গান,যাত্রা পুতুল নাচ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নদী মোহনার চারপাশ জুড়ে দিনভর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ উৎসরে আগত বিভিন্ন অঞ্চলের দুর্গা প্রতিমা আজ শনিবার সন্ধ্যার পরে নদীর মোহনায় বিসর্জণ দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

আমূয়া ইউনিয়ন দুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সমির চন্দ্র পাল জানান, আমূয়ার দশোহরা উৎসবে সরকারি-বেসরকারি কোন সহায়তা না থাকায় আড়াই শত বছরের এ ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি আগের চেয়ে অনেক ম্লান হতে চলেছে।

এ ব্যাপারে আমূয়া ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফোরকান সিকদার জানান,এ উৎসবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। তাছাড়া উপকূলীয় এলাকার আভ্যন্তরীণ খালগুলোর নাব্যতা হ্রাস ও খালে বাঁধ দেওয়ায় নৌ চলাচল কমে গেছে। ফলে উৎসবে নৌপথে আগের মত প্রতিমা না আসতে পারার কারণে এ উৎসবটি অনেক ম্লান হতে বসেছে। হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে আমাদের এ সংস্কৃতি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার বলেন,আমুয়ার দশোহরা ও বামনা বারদশোহরা শিশুকাল হতেই দেখে আসছি। উপকূলীয় এলাকার হিন্দু মুসলমানদের মিলন মেলা হিসেবে এ উৎসবকে আজও দেখা হয়। বামনা উপজেলা থেকে এখানে পূর্বে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হতো কিন্তু এখন আর দেওয়া হয়না। এখানে প্রতিমা নিয়ে বিসর্জন দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের সকলের উচিত সক্রিয়ভাবে এ মিলন মেলাকে ধরে রাখা।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...