ব্রেকিং নিউজ
Home - অন্যান্য - পহেলা বৈশাখ জাতীয় অর্থবছর প্রবর্তন

পহেলা বৈশাখ জাতীয় অর্থবছর প্রবর্তন

আমানউল্লাহ অয়নঃ পাল, সেন, তুর্কী, আফগান, আরবী, মুঘল, ইংরেজ এবং সবশেষে পাকিস্তানী শাসনের বিপরীতে দেশজ, বিপ্লবাত্মক ও গণমুখী রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে বাঙালী বিদেশী শাসন বিরোধী লড়াই-সংগ্রামের পাশাপাশি গড়ে তুলেছে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য। অন্যের চিন্তাধারাকে ধার না করে নিজস্বতা ধারণ করার মধ্য দিয়েই এগিয়েছে বাঙালী।

পাকিস্তান বিরোধী ৪৮-৫২ ‘ভাষা আন্দোলন’, ৬২’র ‘শিক্ষা আন্দোলন’, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা ভিত্তিক স্বাধিকার আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-অভ্যূত্থান, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী চিন্তার বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে।

১৯৭১ সালের সশস্ত্র সংগ্রামে স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ‘জাতীয়তাবাদী’ চিন্তা রাষ্ট্রীয় রূপ লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূল নীতিতে বাঙালী জাতীয়তাবাদ স্থান পেলেও গণমানুষের আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে উত্থিত নির্যাসটি রাষ্ট্রীয়-কাঠামো ও শাসনব্যবস্থায় উপেক্ষিত। দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাঙালীত্বকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় অর্থবছরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিও ‘পরাধীন’ চিন্তা-চেতনায় আক্রান্ত।

বিগত ৪৪ বছরে রাজনৈতিকদলগুলো এ বিষয়ে শুধু ‘শব্দ বোমা’ই ফাঁটিয়েছেন; কার্যত জাতীয়তাবাদ ফাঁকাবুলিতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানে জাতীয় অর্থ-বছর ছিল ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন স্বাধীন বাংলাদেশে একই হওয়ায় জাতীয় জীবনে ‘পাকিস্তান আমল’ আর ‘বাংলাদেশ আমল’ পৃথক করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।

দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করার পাশাপাশি দেশীয় সাংস্কৃতির বিকাশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে মুক্তি ও কথিত উগ্রবাদী চিন্তা মোকাবেলায় জাতীয় জীবনে নিজস্বতা চর্চার কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কুটির শিল্প, ছোট-মাঝারি দেশীয় শিল্পের পাশাপাশি আধুনিক যুগের চাহিদায় কৃষি পণ্য ভিত্তিক শিল্প গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমী ফসল চাষে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ‘মৌসুমী কৃষি ঋণ’ ব্যবস্থা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষি পণ্য রফতানীসহ অর্থনীতির নানা দিক উন্মোচিত হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার সংগ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন সমাজ শক্তি। আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন, সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে বাঙালীর বিকাশমান চিন্তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার ‘খোরাক’ না করায় জাতীয় জীবনের গতি মন্থর হয়েছে একাধিকবার। আজকের বাঙালীরা পৃথিবীর যে যেখানেই দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে তার পেশাগত যোগ্যতা নিয়েই অবস্থান করছে।

একদিকে পঞ্চম বৃহত্তম জনগোষ্ঠী হিসেবে বাঙালীর সমগ্র বিশ্বব্যাপী সুদৃঢ় অবস্থান, অন্যদিকে বাঙালী জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ পৃথিবীর সকল ‘বাঙালীর কেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচিত হবে। ১ বৈশাখ থেকে জাতীয় অর্থ বছর চালুর মাধ্যমে বাঙালীর স্বকীয়তা ফুটে উঠবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় বিএনপির নির্বাচন বিরোধী প্রচারপত্র বিলি

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগের একতরফা নির্বাচন বন্ধের দাবী ও ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না ...