ব্রেকিং নিউজ
Home - অন্যান্য - বাঘারপাড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী

বাঘারপাড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী

যশোর প্রতিনিধি: এবার যশোরের বাঘারপাড়ার বন্দবিলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত হোসেন মন্ডল নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর এতে করে এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

শুধু তাই নয়, এলাকার কয়েকশ’ হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শওকত হোসেন মণ্ডল। তাকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

জানা গেছে, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নে চার বারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন মণ্ডল। তিনি ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি। ১৯৭৬ সালে শওকত হোসেন মণ্ডল প্রথম চেয়ারম্যান হন। এরপর তিন দফায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনিই দায়িত্বেই রয়েছেন।

বন্দবিলা ইউনিয়নের প্রেমচারা এলাকার আব্দুল বারী মণ্ডলের ছেলে শওকত হোসেন মণ্ডল। আব্দুল বারী মণ্ডল স্বাধীনতাযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার কারণেই তিনি বেশি পরিচিত। এরশাদ আমলে জাতীয় পার্টি এবং পরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। সেই সুবাদে শওকত হোসেনও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং উপজেলা বিএনপির বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তার ছোটভাই তরিকুল ইসলাম টুকুল চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবা বারী মন্ডল ছিলেন এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক। স্বাধীনতার পরে শওকত ও তার ভাই টুকুলের অত্যাচারে বন্দবিলা ইউনিয়নের বহু হিন্দু পরিবার দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ইউনিয়নের প্রেমচারা, সাদীপুর, গাইদঘাট, বড়খুদড়া, বন্দবিলা, খাজুরা এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অত্যাচার করতো। তাদের পরিবারের এহেন কার্যকলাপের বিষয়টি স্থানীয়রা সকলেই জানেন। আর এ বিষয়টি ভালো চোখে দেখেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।

এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বাস্তুহারালীগের সহ-সভাপতি সাইফুজ্জামান ভোলা জানান, তিনিই মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তা পরিবর্তন হয়ে শওকতের নাম আসে। কী কারণে এমনটি হলো, তা তিনি বলতে পারেন না।
তিনি জানান, শওকত ও তার পরিবারের অত্যাচারের কাহিনী সবাই জানে। তাদের কারণে এখানকার কয়েক হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।

তার মনোনয়ন না দেওয়ায় ইউনিয়নের ভোটাররা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন তিনি জানান। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সবদুল হোসেন খান। তিনি জানান, এমন কোন অপকর্ম নেই যা শওকত ও তার পরিবারের লোকজন করেননি। খুন, ডাকাতি, সন্ত্রাস, লুটতরাজের বহু অপকর্মের ঘটনা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের কারণে এই এলাকার হিন্দু পরিবার দেশছাড়া হয়েছেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শওকত হোসেন মন্ডল সব কিছু অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে তারা দলত্যাগ করলেও এখন ‘ঘরের ছেলে ঘরে’ ফিরে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘পাঁচ বার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেছি। একবার সামান্য ভোটে হেরেছিলাম।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ মে পঞ্চম দফা ইউপি নির্বাচনে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় নয়টি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

Leave a Reply

x

Check Also

এফ-কমার্স ভিত্তিক মঠবাড়িয়া ই-বাজারের সাফল্যগাথা

মঠবাড়িয়া ই-বাজার, একটি এফ কমার্স বা অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম। আর অনলাইন ভিত্তিক ব্যাবসার নতুন ধারণাকেই ...