মোঃ রাসেল সবুজ : শহরের মত গ্রামের মানুষও আজকাল যেকোনো অনুষ্ঠান কিংবা অতিথি আপ্যায়নে পছন্দ করে বিদেশী খাবার পরিবেশন করতে। সমাজে নিজেদেরকে অতি-আধুনিক হিসেবে তুলে ধরতে মানুষ ইচ্ছে করেই বর্জন করছে দেশিও খাবার। তাই গ্রামেও এখন খাবার টেবিলে শোভা পায় নুডলস, ফলের জুস, চটপটি, ফুসকা সহ বিভিন্ন খাবার।
অথচ অল্প কিছুদিন আগেও বাড়িতে মেহমান আসলে মানুষ তাদেরকে আপ্যায়ন করতো ডিম পোচ, ডাবের পানি কিংবা এক গ্লাস দুধ দিয়ে। খই, চাল ভাজা কিংবা চালের নাড়ু – এগুলোর স্থান দখল করেছে চিপস, চানাচুর, কেক প্রভৃতি।
গ্রামীণ অনেক জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর খাবারের স্বাদই আমরা ভুলতে বসেছি।আমাদের শিশুরা অনেক খাবারের নামও জানেনা। তেমনই এক জনপ্রিয় খাবার হল বিসকি। এটা আমদের আঞ্চলিক খাবার। সাধারণত বৃষ্টির দিনে এই খাবারটি রান্না করা হয়ে থাকে। খুবই সুস্বাদু।
একসময় গ্রামে অতিথি আপ্যায়নে এটি ছিল অন্যতম পছন্দের খাবার। বিশেষ করে ধান কাটার মৌসুম শেষ হলে কৃষকদের আপ্যায়নে বিসকি ছিল প্রধান খাদ্য। টিনের চালে রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দ আর প্লেট ভর্তি ধোঁয়া ওঠা বিসকির গন্ধ যেকোনো ভোজন-রসিক মানুষের কাছে যেন স্বপ্নের চেয়েও মধুর।
নিচে বিসকির রন্ধন প্রনালি বর্ণনা করা হলঃ
উপকরন:মোটা চাল ১ কেজি(ভাজা), বড় আকারের নারিকেল ৩টি, আখের গুর প্রয়োজন মত, পানি প্রয়োজন মত, তেজপাতা ২টি।
প্রনালি: প্রথমে চাল ভেজে ২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। চাল ভিজে গেলে ধুয়ে ঝুরিতে তুলে রাখতে হবে। কিছু নারকেল কুরিয়ে নিতে হবে। আবার কিছু নারিকেল কিউব করে কেটে নিতে হবে। এরপর একটি পাতিলে পানি, নারিকেল, গুর ও তেজপাতা দিয়ে ফুটাতে হবে। ফুটে উঠলে ভাজা চাল ঢেলে দিতে হবে। ঢেকে রান্না করতে হবে। এটা পোলাউর মত রান্না করতে হয়। যদি পানি শুকিয়ে যায় আর চাল সিদ্ধ না হয় তাহলে আবার পানি দেয়া যাবে। জর্দ্দার মত ঝর ঝরে হলে নামাতে হবে। ঠান্ডা হলে পরিবেশন করতে হবে মজাদার বিসকি।