ব্রেকিং নিউজ
Home - খোলা কলাম - ভিক্ষুক

ভিক্ষুক

ইমন নীল >

প্রতিদিনের সূর্যের আলো ফোটার পর ঘুম ভাঙ্গা। তারপর চিন্তা খাবার জোগান। হ্যা আমরা না। এদেশের এক চিরচেনা শ্রেণি। কার্লমার্ক্সের ভাষায়, যাঁদের ইতিহাস শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস। তথাকথিত ভিক্ষুক সম্প্রদায়। সেই দুই বছরের শিশু হতে শুরু করে শতবর্ষী বৃদ্ধ-বনিতার দল।উল্লেখিত শ্রেণি দুটির হিতাহিত জ্ঞান নেই যে কেন তারা ভিক্ষা করে। পেটের দায় নিশ্চয়ই! আচ্ছা প্রতিদিন কত টাকা খরচ করি? প্রোগ্রাম(গান,নাচ)শুনলে অর্থ পকেট হতে যেন দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। তবু নিত্য পরিচিত সেই ভিক্ষুক শ্রেণি দু টাকা চাইলেই আমাদের মুখগুলো পেঁচার আকৃতি ধারন করে।

তুমি নিশ্চয়ই বলিবে,”উন্নয়নে তাহাদের লেশমাএ অবদান নাই”।যাহা করি আমরাই করি, হেতু দু পয়সা খরচের কারনই নাই। তবে ইহারা আজ ভিক্ষুক কেন? এদেরেও তো জমি ছিল,অর্থ ছিল,সংসার ছিল,তারা রাস্তায় কেন? তাদের বসতবাড়ি কাদের দখলে? তাদের অর্থ কাদের ব্যাংকে? উন্নয়নের যোগানে তারা অংশীদার নয়?

জবাবে বলবে “জোর যার মুল্লুক তার”। ইহা নিয়া ভাবিবার জন্য কর্তৃপক্ষ আছে।তাই আমার মত মাকালফলদের এসব প্রশ্ন করবার অধিকার নাই। দোকানি রুটি কাক আর কুকুরের মাঝে বিতরন করিবে, তবু ভিক্ষুককে কেন নহে?

উওর হল ওরা অবলা জীব,ওদের তো ভিক্ষুকদের মত হাত পা নাই যে কাজ করিয়া কিংবা হাত পাতিয়া খাইবে। তোমরা তো কাজও এদের দাও না।

দোকানিঃ এসব বাপুু আমাদের চিন্তার বিষয় নহে। বড় কর্তারা ভাল বোঝেন। বড় কর্তার নিকটে হাজির হইলাম। তা কি বল বাপু! তাই যাই হোক না কেন, ঐ ভিক্ষুক মুক্ত এলাকা আমি করিব।এটা আমার অঙ্গিকার।জ্বালাইয়া মারে।এদের জ্বালায় তো বাজার ঘাট করা বন্ধ করিতে হইবে। পথে চলাচল ও এখন চোরের ন্যায় করিতে হয়! ভাবিতে পার? কি বেহাল দশাতেই না ফেলে?

বলিলাম কর্তা বাবুঃ দুই টাকা খরচ করতে এত্ত কূটকৌশল? স্বয়ং রবার্ট ক্লাইভও আপনাকে কুর্নিশ করতে বাধ্য! এদেরকে কাজ করিবার ব্যবস্থা গ্রহন করিতে আপনাদের এত অমর্জি কেন?

আর কাজ!! কি বল বাপু? কি কাজ করবে ওরা? শরীর দেখেছ? হা হা হা। কুকুরদের নামালেও ওদের চাইতে ভাল করবে। তাতো করবেই। জবাবে বলিলাম। কিঞ্চিত অগ্রসর হইয়া হাসিয়া বলিলেন, তবে সহমত তুমি আমার সঙ্গে? কেন নয় কর্তা? আপনারা কুকুরের যে আহারের যোগান দিয়াছেন,যে বস্ত্রের ব্যবস্থা করিয়াছেন, তাতে কুকুর তো সর্বেসর্বা হবেই! ভিক্ষুকের জন্য এটুকু করিলে কি হয়? যে টুকু কুকুরের জন্য করেন?

তোমাদের মতিভ্রম বাপু। কর্তার জবাব। বয়স কম।রক্ত গরম তো। আস্তে আস্তে বুঝবে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে তো। হা তাতো বটেই। তাল মিলিয়ে ভিক্ষুককে আরও ভিখারি বানান,কুকুরকে বানান লায়ন! কি বিড়বিড় করছো? বুঝলে তো। হা। জবাবে বলিলাম,নেহাৎ। কর্তা মশাই হাফ ছাড়িয়া বাঁচিলেন। এক বিস্তর যৌক্তিক বর্নণায় জয় লাভ করিলেন,যেন দারিদ্র মুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করিবেনই ভিক্ষুক মুক্ত দেশ গড়িয়া!!!! কর্তার চক্ষুদ্বয় খুশিতে নাচিয়া উঠিল, আমি যেন তাহার চোখে দারিদ্র মুক্ত দেশের প্রতিচ্ছবি দেখিলাম!! হয়ত মতিভ্রম!!!

লেখক : শিক্ষার্থী, মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ, ১ম বর্ষ বিভাগ মানবিক

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...