ব্রেকিং নিউজ
Home - খোলা কলাম - জনগনের দাবি নিরাপদ সড়ক

জনগনের দাবি নিরাপদ সড়ক

নূর হোসাইন মোল্লা > দ্রুত যাতায়াতের জন্যে মানুষ আবিস্কার করলো নানান ধরণের যানবাহন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেল। কিন্তু অপর্যাপ্ত এবং সংকীর্ণ থাকে রাস্তাঘাট বা সড়ক পথ। সংকীর্ণ সড়কে যানবাহনের চাপবৃদ্ধি পেল। সাথে সাথে বৃদ্ধি পেল সড়ক দূর্ঘটনা। ভোর হলেই শুরু হয় মানুষের কর্মব্যস্ততা। মানুষের এ কর্মব্যস্ত জীবনে সকালে কেউ যায় বাজারে, কেউ যায় অফিস-আদালতে, কেই যায় স্কুল-কলেজে, আর কেউ যায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এমনিভাবে নানা প্রয়োজনে এবং নানা কাজে মানুষ ঘর থেকে বের হয়। রাস্তায় হাটতে হাটতে দেখতে পায় রাস্তাঘাট ভরে যায় বাস, ট্রাক, লরী, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, মোটর সাইকেল টেম্পু, অটো রিকশা, রিক্সা, সিএনজি, ভ্যান,অটোভ্যান, ঠেলাগাড়ী ইত্যাদিতে। সকালে বের হয়ে কেউ সন্ধ্যায় ঘরে ফেরে, আর কেউ ফেরে না। সড়ক দূর্ঘটনার মরণ ছোবল কেড়ে নেয় তাদের জীবন। আর কেউ পংগু হয়ে অসহায় জীবন যাপন করে। যারা ছিল পরিবারের আশা এবং বেঁচে থাকায় আশ্রয় অপ্রত্যাশিত কারণে তারা অকালে চলে যায় বা পংগুত্ব বরণ করে। সড়ক দূর্ঘটনার শিকার মানুষের পরিবারে শুরু হয় বুক ফাটা আর্তনাদ।
বর্তমানে সড়ক দূর্ঘটনা এক বিরাট সমস্যা। সড়ক দূর্ঘনায় প্রতিদিন শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ। খালি হচ্ছে বহু মায়ের বুক। অংসখ্য পরিবারের বেঁচে থাকার আলো নিভে যায়। নানা কারণে রাস্তাঘাট বা সড়ক সংকীর্ণ হওয়ায় নিরাপদে হাটার উপায় নেই। আপনি রাস্তা বা সড়কের উপর দিয়ে হাটবেন বা রাস্তা পার হবেন তাতে আপনার রক্ষা নেই। সামনে বা পেছনের দিক থেকে দৈত্যের মত বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, টেম্পু ইত্যাদি আচমকা ধাক্কা দিয়ে আপনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে। অনেক সময় ড্রাইভার অতিদ্রুত গাড়ী চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে নদীতে নিমজ্জিত হয়। অনেক সময় ফেরীতে উঠতে গিয়ে সকল বাঁধা অতিক্রম করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ নদীতে নিমজ্জিত হয়। অনেক সময় সংকেত না দিয়ে অন্য গাড়ীকে ওভার টেক করতে গিয়ে রাস্তার পাশে গাছে ধাক্কা খায়। অনেক সময় ড্রাইভার বেপরোয়াভাবে গাড়ী চালিয়ে বিপরীত দিক থেকে চলমান বাস, ট্রাক, টেম্পু ইত্যাদির সাথে সংষর্ষে লিপ্ত হয়। এছাড়া, অতিরিক্ত মাল বোঝাই ট্রাক দূর্বল সড়ক সেতু অতিক্রম করতে গিয়া দুর্ঘটনা ঘটায়। এভাবে প্রতিদিন অসংখ্য দূর্ঘটনা ঘটছে এবং বিভিন্ন পেশার অসংখ্য মানুষ মৃত্যু এবং পংগুত্ব বরণ করছে। সড়ক দূর্ঘটনায় যেন কেউ প্রাণ না হারায়, কোন মায়ের বুক খালি না হয় বা কেউ পংগু না হয় এটাই আমাদের কাম্য। সড়ক দূর্ঘটনা রোধ করতে হবে নচেৎ আমাদের জাতীয় জীবন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না। যে সব কারণে দূর্ঘটনা ঘটছে তা হলঃ-(১) সংকীর্ণ সড়ক বা রাস্তার উপর দিয়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করা (২) ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় চলাচল করা (৩) বেপরোয়াভাবে গাড়ী চালানো। অনেক সময় ড্রাইভার মাতাল অবস্থায় গাড়ী চালায় (৪) অদক্ষ ড্রাইভার এবং হেলপার কর্তৃক গাড়ী চালানো (৫) ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে কড়াকরি আরোপ করা (৬) গাড়ী চলমান অবস্থায় ড্রাইভার মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, (৭) রাস্তায় খানাখন্দ হওয়া (৮) প্রতিযোগিতা করে গাড়ী চালানো (৯) দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা (১০) হরতাল, অবরোধ, পথসভা করে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করা (১১) হকারদের ফুটপথ দখল করা (১২) পথচারীরা পথ চলার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সচেতন না হওয়া (১৩) ড্রাইভার ট্রাফিক আইন অমান্য করা (১৪) পথচারীরা ওভার ব্রীজ বা জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার না করা (১৫) পরিকল্পনা বিহীন সড়ক বা রাস্তা নির্মাণ করা (১৬) সড়কের পাশে যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা নির্মাণ করা (১৭) জনসংখ্যা অনুপাতে সড়ক বা রাস্তা নির্মাণ না করা (১৮) রাস্তা প্রশস্ত না হওয়া (১৯) দূর্বল সড়ক সেতু (২০) যত্রতত্র যাত্রী উঠানো এবং নামানো (২১) চলমান যানবাহন যুুক্তি সংঘত দূরুত্ব বজায় না রাখা ইত্যাদি। সড়ক দূর্ঘটনার এসব কারণগুলোর প্রতিকার করা হলে সড়ক দূর্ঘনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।

লেখকঃ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক,
মোবাঃ ০১৭৩০-৯৩৫৮৮৭

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...