মির্জা থালেদ, পাথরঘাটা >
পাশাপাশি দুটি মাছের ঘের । প্রচুর মাছ ঘের দুটিতে কিলবিল করত। হঠাৎ গত ১৫ দিন ধরে সেখানে মাছের আনাগোনা কমে যায়। ঘের মালিকের সন্দেহ হল রাতে আঁধারে হয়ত মাছ চুরি হচ্ছে। চোর ধরতে রাতে পাহারা বসানো হল । রবিবার রাত ৮টার দিকে পাহারাদারের টর্চের আলোয় ধরা পড়ে বিশাল এক অজগর। এক ঘেরের মাছ সাবার করে অজগরটি অন্য ঘেরের দিকে যাচ্ছিল। পাহারাদারের ডাক চিৎকার লোকজন এগিয়ে আসে ততক্ষণে বিশাল অজগরটি ঘেরের পানিতে ডুবে মারে। তারপর রাতভর সেই ঘেরে পাহারা বসিয়ে আজ সোমবার সকালে ঘেরটিতে মেশিন লাগিয়ে সেচ করে আটক করা হয় সাড়ে ১২ হাত লম্বা অজগরটি। বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আমড়াতলা গ্রামের মিরাজ শরীফের বাড়ির মাছের ঘের থেকে এভাবে আটক হয় সাড়ে ১২ হাত লম্বা অজগরটি। খবর পেয়ে বনবিভাগের কর্মীরা অজগরটি উদ্ধার করে আজ সোমবার দুপুরে হরিণঘাটা বনে অবমুক্ত করে।
উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের মাছের ঘেরের মালিক মিরাজ শরীফ জানান, তার বাড়ির সামনে দুটি মাছের ঘের। প্রতিদিন সকালে ঘেরের মধ্যে খাবার দিলে প্রচুর পরিমাণ মাছ দেখা যেত। কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে ঘেরের মধ্যে মাছ দেখা যাচ্ছিল না। পরে ঘেরের মাছ চুরি হওয়ার সন্দেহে রাতে পাহারা বসানো হয়। গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে টর্চ লাইটের আলোতে সাপটিকে এক ঘের থেকে অন্য ঘেরে যেতে দেখেন। এ সময় তার চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে আসলে সাপটি ঘেরের পানিতে চলে যায়।
আজ সকালে ঘেরের পানি সেচ করে সাপটিকে ধরা হয়। খবর পেয়ে আজ সকালে টাইগার টিমের বাঘবন্ধুরা পাথরঘাটা বন বিভাগের কর্মচারী ইউসুফ হাওলাদার ও হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় সাপটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় সাপটি এক নজর দেখার জন্য গ্রামের শত শত মানুষ ভিড় জমায়। ঘের মালিক মিরাজ শরীফ জানান, গত ১৫ দিনে তার ঘেরে অন্তত এক লাখ টাকার মাছ খেয়ে ফেলেছে। সাপটির ওজন প্রায় প্রায় এক মণ।
বন বিভাগের বোটম্যান ইউসুফ হাওলাদার জানান, তিনি ধারণা করছেন সাগরের তিন মাস ধরে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের অস্বাভাবিক পানিতে পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওই সময় সুন্দরবন থেকে কুমিরসহ অনেক সাপ পানিতে ভেসে এসেছে। এর আগেও পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুমির ছানা ও অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। আটক অজগরটিকে পাথরঘাটা উপজেলার হরিণঘাটা বনে আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে অবমুক্ত করা হয়েছে বলে পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সোলায়মান হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।