ব্রেকিং নিউজ
Home - জাতীয় - মৃৎপাড়ায় বৈশাখী প্রাণ

মৃৎপাড়ায় বৈশাখী প্রাণ

দেবদাস মজুমদার :
আর একদিন পরেই বাঙালীর প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের বর্ষবরণ। বর্ণিল বৈশাখকে বরণে চলছে নানা আয়োজন। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া,কাউখালী, ভা-ারিয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে বৈশাখী মেলা। গ্রাম্য মেলায় মসুগি মুরকি. নানা তৈষসপত্র ও খেলনার পাশাপশি মাটির তৈরী নানা জিনিসপত্রের চাহিদা রয়েছে। কালের আবর্তে মাটির জিনিস বিলুপ্তির পথে হলেও বৈশাখী মেলা মাটির জিনিসের পসরার চাহিদা যুগযুগ ধরে টিকে আছে। প্রায় দুইশত বছর ধরে ক্ষয়িষ্ণু মৃৎশিল্প । পিরোজপুরের কাউখালীতে এখনও টিকিয়ে রেখেছে পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা। বছরের এ সময়টাতেই কেবল যেন প্রাণের চাঞ্চল্য ফিরে আসে কাউখালীর পাল পাড়ায়। এখানে বৈশাখি মেলাকে সামনে রেখে শেষ মূহুর্তে ব্যস্ত সময়ের চাঞ্চল্যে কাটছে কাউখালীর উত্তর বাজার ও সোনাকুর গ্রামের মৃৎশিল্পীদের ।কালের আবর্তে ঐতিহ্য আর পেশা হারিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরানো টিকে থাকা মাত্র ৮ থেকে ১০ পরিবারের সদস্যরা অন্যান্য কর্মহীন দিনের তুলনায় এ মূহুর্তে কর্মে সচল।
এখানকার মৃৎশিল্পী রবিন পাল জানান, বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে মেলার দিনের জন্য তারা একেকটি পরিবার প্রায় আড়াই হাজার খেলনাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেছেন। মেলার মাত্র একদিন বাকী রংয়ের কাজ শেষ করতে হচ্ছে। কুমার পাড়ার কারিগরদের মাটি দিয়ে তৈরিকৃত জিনিসপত্রের মধ্যে রয়েছে হাড়ি-পাতিল, বাঘ, হরিণ,হাঁস, ময়ূর, হাতি, নৌকা, ঘোড়া, গরু, ঘর, ব্যাংকসহ বিভিন্ন দেব দেবীর প্রতিমা। এসব মাটির পসরার চাহিদা রয়েছে মেলায়। পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন গ্রাম্য মেলায় মাটির জিনিস সরবরা করা হবে।
খেলনা সামগ্রী এক একটি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করা হবে তবে খেলনা বিশেষে বাহারি ও বড় আকৃতির অনেক খেলনা ৮০ থেকে ১শ টাকায়ও বিক্রি হবে বলে কুমাররা আরো জানায়।
কাউখালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ মিল্টন বলেন,বছরের অন্যান্য দিনে মৃৎশিল্পীরা বেশ দূরবস্থায় থাকলেও গ্রাম-গঞ্জের মেলা ও পূজা অর্চনা আসলেই তারা একটু কয়েকদিনের জন্য দায় দেনা পরিশোধের সুযোগ পায়। তখন কর্মমূখর হয়ে ওঠে চিরচেনা ঐতিহ্যময় প্রাচীন এই মৃৎশিল্প পল্লী।
কাউখালীর সংস্কৃতিজন ও শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, পালপাড়া আগের সেই প্রাণ নেই। মাটির তৈরী জিনিসের ব্যবহার কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। দুইশত বছরের পুরানো পাল পাড়ার অনেক কারিগর জীবিকার প্রয়েজনে পেশা বদলেছেন। কয়েকটি পরিবার এখনও কোনমতে শিল্প বাঁচিয়ে রেখেছেন। তারা কেবল কৈশাখ এলেই প্রাণ পান । বছরের অন্য সময়গুলে তে মৃৎশিল্পীদের চলে অর্ধমৃত জীবন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় বিএনপির নির্বাচন বিরোধী প্রচারপত্র বিলি

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগের একতরফা নির্বাচন বন্ধের দাবী ও ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না ...