শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেন। প্রতন্ত অঞ্চলের মানুষের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরি ও স্বাস্থ্য সহকারীর পদ তৈরি করেন। কিন্তু মাত্র কয়েক বছর পরেই তাকে হত্যার পরে সে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর সিটি কলেজ প্রাঙ্গণে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা ও বেতন স্কেলের দাবিতে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ পুনরায় ৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য-সেবা খাতকে সু-সংগঠিত করে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। কিন্তু জোট সরকার ক্ষমতায় এসে সে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে ২০০৯ সাল থেকে সেই বন্ধ হওয়া ক্লিনিকগুলো চালু করে এবং নতুন করে ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু করে। নিয়োগ দেওয়া হয় চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
আপনাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত যে, এ সরকার আপনাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় আপনারা মানুষের সেবা করতে পারছেন। বেকারত্ব দূর হয়েছে। আবার মানুষের সেবা করে আপনারা পরকালও অর্জন করছেন। তিনি আরো বলেন, আপনারা বলেন যারা গরু-ছাগলের টিকা দেয় তাদের বেতন বাড়ে কিন্তু
আপনাদের বাড়েনা এ কথাটা ঠিক নয়। কাউকে হেয় করা উচিত নয়। আপনারা বলতে পারেন তাদের বেতন বাড়ায় আমরা খুশি, এবার
আমাদেরটা দেখুন। আর আমি আপনাদের সমস্যার কথা অবশ্যই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবো। তিনি অবশ্যই এগুলোর সমাধান করবেন।
তিনি বলেন, আজ এ সরকারের সদিচ্ছায় স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে গেছে। আপনাদের অবদান রয়েছে বলেই আজ সরকার সাউথ, এমডিজি-৪সহ নানাবিধ পুরস্কার অর্জন করছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে,দেশ পোলিও মুক্ত হয়েছে। জাতিসংঘের ছয়টি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে, দেশে দারিদ্রতার হার কমেছে, আমরা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছি। দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকছে, ফলে আমরা বিদেশে খাদ্য রপ্তানি করছি। এ সব কিছুই দেশের মানুষের
জন্য সম্ভব হয়েছে। আমরা এভাবে চলতে থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্যম আয় ও ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বে উন্নত রাষ্ট্র হিসেব মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ড. বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার সকল
ক্ষেত্রেই নানান সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে স্বাস্থ্য সহকারীদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে এখনো পায়ে হেটে দূর দূরান্তের পথ পাড়ি দিতে হয় এবং নানা প্রতিকূলতার সম্মুখিন হতে হয়। তাদের জন্য মোটরসাইকেলের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। এছাড়াও স্বাস্থ্য সহকারী পদে যেসব স্থানে নিয়োগ আটকে আছে তা দ্রুত সমাধানের দাবিও জানান তিনি।বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন বরিশাল বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মো. জিয়াউল হাসান কাবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. এ.এফ.এম শফিউদ্দিন। মো. জুবায়ের হোসেনের পরিচালনায় সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন বরিশাল বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.বশির। বক্তব্য রাখেন শাহানাজ বেগম, এ.কে.এম মাইনুদ্দিন খোকন, মো. জাহিদুল ইসলামসহ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, আমরা ১৯৭৭ সালে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী ১৬ তম গ্রেড স্কেলে ছিলাম। ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট, ব্লক সুপারভাইজার ছিল ১৯ তম গ্রেড স্কেলে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছিলো ১৭ তম গ্রেড স্কেলে। বর্তমানে এরা সবাই ১৪ থেকে ১১ তম গ্রেডে চলে এসেছে। কিন্তু আমরা এখনো ১৬ তম গ্রেডেই বেতন পাচ্ছি। যা মারাত্মক বেতন বৈষম্য এবং আমাদের কর্মী বাহিনীর জন্য চরম হতাশার। এ সময় তারা তাদের এ দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।