মো: রাসেল সবুজঃআমাদের দেশের সভা-সমাবেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্লোগান হলো, “জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো”। স্বাধীনতার আগে আমাদের শত্রু ছিলো বিদেশীরা।তাই তাদের সম্পত্তিতে আগুন জ্বালানো হয়তো তেমন আপত্ত্বি ছিলনা। কিন্তু স্বাধীন দেশেও কেন দাবী আদায়ের জন্য আগুন জ্বালাতে হবে? শুধু শ্লোগানেই নয় আক্ষরিক অর্থেই বিভিন্ন সময় দাবী আদায়ের মিছিল আগুন জ্বালানোর মধ্যে দিয়েই শেষ হয়।এই সংস্কৃতি কবে বদল হবে জানিনা? তার চেয়ে বরং জেনে নেয়া যাক “জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো” শ্লোগানের ইতিকথা।
৬২ ছাত্র আন্দোলনের সময় আকস্মিকভাবেই এ শ্লোগানটির উৎপত্তি হয়।১৯৬২ সালের ফেব্রুয়ারী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকাতে নিয়মিত ক্লাশ হয়নি। এর ফলে কোর্সও সমাপ্ত করা হয়নি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ পরীক্ষার তারিখ ঘোষনা করে।এতে ক্রুদ্ধ হয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা পরীক্ষা পিছানোর দাবী তোলে।এই দাবী আদায়ের জন্য যখন মিছিল হচ্ছিলো সেই সময় শহিদুল ইসলাম নামে বাংলা বিভাগের একজন “মেডো মেডো, সো সো” বলে একটা অদ্ভুত শ্লোগান দেয়।তার এই অদ্ভুত শ্লোগান শুনে চমকিত হয়ে কয়েকজন ছাত্র এর অর্থ জানতে চাইলে তিনি জানান এটা হাঙ্গেরী ভাষার একটা শ্লোগান, এর অর্থ হলো, “জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো”।তার এই অর্থ সঠিক না বেঠিক সেটা নিয়ে কেউ আর মাথা ঘামায়নি বরং লুফে নিয়েছে শ্লোগানটিকে।সেই থেকে মিছিলে-সমাবেশে সবাইকে চমকিত করে শ্লোগান ওঠে— জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো, দিকে দিকে আগুন জ্বালো”।
সেই থেকে জাতীয়তাবাদী থেকে শুরু করে সমাজতন্ত্রী, সর্বহারা থেকে মৌলবাদী — সব মহলেরই প্রিয় শ্লোগান এটি।