ব্রেকিং নিউজ
Home - উপকূলের মুখ - মঠবাড়িয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের অর্থকষ্টে সুচিকিৎসা চলছেনা !

মঠবাড়িয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের অর্থকষ্টে সুচিকিৎসা চলছেনা !

দেবদাস মজুমদার >>

মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিন মো. ফজলুল হক ফরাজি। সত্তোরোর্ধ বয়সী এ মুক্তিযোদ্ধা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে চিকিৎসাধিন । একাধিকবার স্ট্রোকের পর অকুতভয় এ মুক্তিযোদ্ধা প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন মৃত্যু পথযাত্রী।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন তাঁর এখন উন্নত চিকিৎসাধী প্রয়োজন। তবে অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছেনা।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ফরাজী এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপজেলা সদরের হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক উপজেলার উত্তর মিঠাখালী গ্রামের মৃত মো. শামসুল হক ফরাজীর একমাত্র ছেলে।

হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, কয়েকদফা স্ট্রোক ও পরবর্তীতে প্যারলাইসিসে আক্রান্ত হন। এমনিতে তার পরিবার দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ফজলুল হক ফরাজীকে একাধিকবার ঢাকার সোহরাওয়াধী, পিজি হাসপাতাল, বেসরকারী ইবনেসিনা, এশিয়ান ও খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতলে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আজ সর্ব শান্ত। মঠবাড়িয়া উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তাঁর আরও উন্নত মঠবাড়িয়া হাসপাতালে শয্যাশায়ী চিকিৎসাধীন আছেন। কিন্তু অর্থাভবে তার আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আর্থিক সংকটে এ মুক্তিযোদ্ধার সুচিকিৎসা করাতে পারছেনা তাঁর পরিবার।
মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ফরাজী বর্তমানে খুুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন ডা. হালিম সরদারের অধীনে চিকিৎসাধীন থাকলেও বেসরকারী হাসপাতালের ব্যায় বহন করতে না পেরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. সিদ্দিকুর রহমানের অধিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধার এখন আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে এ চিকিৎসা ব্যয়বহুল।

মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হকের মেয়ে শিরীন আকতার জানান, ১৯৯৯সালে প্রথম ব্রেইন স্ট্রোক করার পর থেকে তার বাবার সকল ব্যবসাপাতি বন্ধ হয়ে যায়। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে পৌর শহরের চারটি ভিটি ও দুই একর জমি বিক্রি করতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন তিন হাজার টাকা চিকিৎসা খরচ হচ্ছে। আমার একমাত্র ভাই সেও বেকার থাকায় আমাদের পক্ষে ব্যায়বহুল এ চিকিৎসা চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এই অপারগতা খুব বেদনার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক দয়া ছাড়া আমার বাবা সুচিকিৎসা সম্ভব হচ্ছেনা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা কমান্ডার মো. বাচ্চু মিয়া আকন জানান, সুন্দরবন হয়ে ভারতের আমলানী ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বীর সৈনিক ফজলুল হক সরাসরি পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯নম্বর সেক্টরের উপকূলীয় অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মঠবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদে প্রায় ১৫ বছর সহকারী কমান্ডারের (অর্থ) দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন উপজেলা আ’লীগের সম্পাদক মন্ডলীরও দায়িত্বে ছিলেন। আমরা তার জন্য যতটুকু পেরেছি সংসদ থেকে সহযোগিতা করেছি।

তিনি আরও জানান, ছয় সন্তানের জনক ফজলুল হক ফরাজীর ব্যায়বহুল চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য মঠবাড়িয়ার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...