সাইফুল বাতেন টিটো >
এদেশের ১০০% শিশুকে ছোট বেলায় একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হয় আর তা হল
-বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও?
৯৯.৯৯ ভাগ শিশু উত্তর দেয় তিনটি
১। ডাক্তার হতে চাই
২। ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই
৩। পাইলট হতে চাই
এই তিনটি লক্ষ্য তাদের বাবা মায়ের। শিশুটির একদম-ই নয়। শিশুটি যখন তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা বলে তখন আদতে সে বোঝেই না যে আসলে ভবিষ্যৎ কি আর লক্ষ্য কি? আমাদের দেশের সকল পিতামাতাই তাদের সন্তানের আলোয় আলোকিত হতে চান। তারা চান তাদের সন্তানেরা যেন তাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। বাবা মায়ের বদ্ধমূল ধারনা হয়ে যায় সন্তানেরা শুধু মাত্র ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কিংবা পাইলট হলেই বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল হবে। সন্তান অন্য কোন পেশায় গেলে ঔজ্জ্বল্যয় ঘাটতি হবে। ক্লাশ এইট থেকে নাইনে ওঠার সময় সেই সন্তান যখন অঙ্কে পায় ৪৭ আর বিজ্ঞানে পায় ৪০ তখন বাবা মায়ের স্বপ্নটা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আর পাইলট থেকে টার্ন করে যায় বাংলাদেশ কর্ম কমিশন সচিবালয়ের দিকে, অর্থাৎ তারা তখন বিসিএস ক্যাডারের গর্বিত পিতামাতা হয়ার চিন্তা করেন। বস্তুত সন্তান কি হতে চায় তার দিকে বাবা মা কখনও-ই ভ্রুক্ষেপ করেন না।
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এমনিতেই জর্জরিত। তার উপর পরিবারের এমন চাপিয়ে দেয়া স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে ঝরে পরে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। বর্তমানে দেশের স্নাতক পর্যায়ের ছাত্রদের মধ্যে ৬৫% ছাত্র-ই পরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কচ্ছপ গতি আর সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বল্পতাই দেশের ৬৫ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী কে প্রয়জনের তুলনায় অধিক ফী দিয়ে নাম সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নাম মাত্র শিক্ষা গ্রহনের বিনিময়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় যা আসলে টাকা দিয়ে সারটিফিকেট কেনার একটি রূপ মাত্র। ছাত্রটা আসলে অশিক্ষিতই থেকে যায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার দ্রুত গতির উদাহরন দিতে গিয়ে অনেকে বলে থাকেন যেদিন দুনিয়া ধ্বংস হবে সেদিনও যদি এক্সাম থাকে তাহলে এক্সাম হবে। ফলে একটি স্টুডেন্ট নির্দিষ্ট সময়ে তার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাশ করে ফেলে। বেকারত্বের ন্যাশনাল গ্রীডে যোগ হয় কিছু তথা কথিত শিক্ষিত বেকার। তখন তারা বাবা মায়ের মুখের মাস্কারার বদলে হয়ে যায় মেসতা। বাবা মায়ের মুখ আর উজ্জ্বল হয় না। তখন অধিক পয়সা ওয়ালা বাবা মায়েরা মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে খুজতে থাকেন একটি নিরাপদ সরকারী চাকরি। দুর্নীতির হাতে খড়ি নিয়ে সরকারী চাকরিতে যোগ দেয় কিছু মূর্খ, অথর্ব, নেশা খোর। নিজের অতিত ভুলে গিয়ে তখন এরা ঘুষ খেতে থাকে আর দিন কে রাত আর রাত কে দিন করার সপ্নে বিভর থাকে। মাঝে একটা বিরাট অংশ থকে তারা সারা জীবন পার করে দেয় বেসরকারি চাকরি করে। তারা সারা জীবন এটা ভেবে জীবন পার করে
” একদিন আসবে সুদিন………”
লেখক > মিডিয়া কর্মী