ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - শিক্ষা জাতীয়করন : মধ্যম আয়ের দেশ গঠনের প্রধান হাতিয়ার

শিক্ষা জাতীয়করন : মধ্যম আয়ের দেশ গঠনের প্রধান হাতিয়ার

আলমগীর হোসেন খান >

দেশ ও জাতিকে উন্নত করতে হলে শিক্ষায় জাতিকে উন্নত করতে হবে সর্বাগ্রে | শিক্ষা ছাড়া কোন জাতির উন্নতি আশা করা যায়না| পৃথিবীতে এমন কোন উদাহরণ খুঁজে দেখাতে পারবেন না, কোন অশিক্ষিত কিংবা শিক্ষায় পিছিয়ে পরা জাতি উন্নত হয়েছে| একটি আদি ও পুরাতন কথা “যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত|” আর এ প্রবাদের উপর ভিত্তি করে শিশু শিক্ষিত হয়, তার পিতা মাতার দু:খ –দুর্দশা ঘোচায়, নিজের ও পরিবারের আমুল পরিবর্তন আনে, কেউ কেউ সমাজ ও দেশের উন্নয়ন ঘটাতে বদ্ধপরিকর হন| শিক্ষার কারনেই ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে বাঙালী-জাতির বিজয় অর্জিত হয়েছে| শিক্ষার কারনেই জাতির জনকের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ মাতৃকাকে স্বাধীন করেছেন বাঙালী জাতি| শিক্ষার কারনেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জননেএী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে ডিজিটাল বাংলায় রুপান্তরিত করেছে বাঙালী জাতি| এ জাতিকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে হলে ১০০% শিক্ষিত জাতির পথে এগিয়ে যেতে হবে| এগিয়ে যেতে হবে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়নের পথে | পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে শিক্ষানীতি বিহীন পরিপএ, প্রজ্ঞাপন, কমিশন ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হতো খুড়িয়ে খুড়িয়ে| বিভিন্ন বংশ, গোএ, সম্প্রদায়, নবাব, বৃটিশ,পাকিস্তান, রাষ্ট্র প্রধান, সংগঠন দেশ পরিচালনা করেছেন| কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার তনয়া, জননেএী শেখ হাসিনা ছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে ভাবেন নি কেউ| ছাএজীবন থেকে জাতীয় শিক্ষানীতির জন্য মিছিল করতে করতে শিক্ষকতায় এসে জাতীয় শিক্ষানীতির জন্য মিছিল, মিটিং, আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছি|

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্ব প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি প্রনয়নের লক্ষে ড.কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে শিক্ষা কমিশন গঠন করেন| রিপোর্ট প্রদান করেন কিন্তু বাঙালী জাতির ভাগ্যে কুলোয়নি| জাতির জনকের সাহাদাৎ বরণের মধ্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি ডাস্টবিনে ফেলে দেয়| পরবর্তীতে যিনি বা যারা ক্ষমতায় এসেছেন শিক্ষানীতি নিয়ে ভাবনার তাদের সময় ছিলনা|

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের তনয়া, দেশরত্ন, জননেএী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় এসেই জাতীয় শিক্ষানীতি প্রনয়নের জন্য কমিশন গঠন করেন| কমিশন রিপোর্ট প্রদান করেন কিন্তু ৫ বছরের মধ্যে শিক্ষানীতি প্রনয়ন করতে পারেননি| পরবর্তী সরকার আর শিক্ষানীতি খুলে দেখেননি| আবার ২০০৮ সনের নির্বাচনে জননেএী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই জাতীয় শিক্ষানীতি প্রনয়নের জন্য কমিশন গঠন করেন| তড়িৎ গতিতে কমিশন রিপোর্ট প্রদান করেন এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রনয়ন করেন| যা এখন বাস্তবায়নের পথে| জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে শিক্ষা জাতীয়করন একটি অপরিহার্য দিক| একদিকে দেশটিকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে হলে শিক্ষা জাতীয় করন দরকার| আবার জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়নে শিক্ষা জাতীয়করন দরকার| এমনকি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে শিক্ষা জাতীয়করন দরকার| আর এ জাতীয়করন একমাএ জননেএী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব| যার পিতা এক ঘোষনায় সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করন করেছেন এবং শিক্ষানীতি প্রনয়ন করে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করনের আশ্বাস দিয়েছিলেন| আবার তারই কন্যা জননেএী শেখ হাসিনা এক ঘোষনায় সকল বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করন করেছেন| তার পক্ষেই সম্ভব সকল মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্হাকে এক ঘোষনায় জাতীয়করন করা| আর এ জাতীয়করনে তেমন কোন বাধাও নেই| সরকার এমনিতেই বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের পে-স্কেলের ১০০% দিচ্ছেন, বাড়ীভাড়া ১০০০ টাকা, মেডিকেল ৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা ২৫%, কর্মচারীদের ৫০% করে দিচ্ছেন। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৫% এমনিতেই দিতে হবে, যেহেতু পরবর্তীতে আর জাতীয় বেতন স্কেল প্রদান করা হবেনা। সরকারীদের মতো বৈশাখী ভাতা প্রদান করতে হবে কারণ শিক্ষকরাই বৈশাখী উৎসবকে জাতীয় উৎসবে পরিনত করেছেন। এখন শুধু দরকার বাড়ী ভাড়া সরকারীদের মত শতাংশে নিয়ে আসা| মেডিকেল সরকারীদের সমান করা এবং দুটি উৎসব ভাতা পূর্নাঙ্গ করা। এর জন্য যে টাকা প্রয়োজন হবে তার চেয়ে অনেক বেশী আসবে সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় থেকে| শিক্ষা জাতীয়করন হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় জাতীয় তহবিলে চলে যাবে এটাইতো স্বাভাবিক| তাতে সরকারের কোন লোকসান হবেনা| অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের এক প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বর্ধিত বেতন-ভাতা দেয়া যাবে| সকল প্রতিষ্ঠানের ছাএ বেতন, অন্যান্য ফি সহ যাবতীয় আয় আদায় হয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা হয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যাবে| অথচ এখন জাতীয় করন না হওয়ার কারনে একদিকে সরকার বেতন ভাতা দিচ্ছেন আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন আয় সরকারের খাতে জমা হচ্ছেনা| সে দিক বিবেচনা করলে কিংবা হিসেব করে দেখলে দেখা যাবে শিক্ষা জাতীয়করন করলে সরকার সকল দিক থেকে লাভবান হবেন|

শিক্ষা জাতীয় করন হলে শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি পাবে, মেধাবীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরির জন্য আগ্রহী হবে, জাতি উচ্চ শিক্ষায় ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উন্নত জাতিতে পরিনত হবে, ৫(পাঁচ) লক্ষাধীক শিক্ষক-কর্মচারীর জীবন যাএার মান উন্নত হবে, যার মধ্য দিয়ে দেশ পূর্নাঙ্গ মধ্যম আয়ের দেশে এগিয়ে যাবে| জননেএী শেখ হাসিনার ভিশন ও মিশন সফল হবে ইনশাল্লাহ| দেশে শিক্ষার এক গনজাগরণ সৃষ্টি হবে| আমেরিকা, বৃটেন, কানাডা, জাপান এদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে এসে দাড়াবে। এ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে হলে শিক্ষা জাতীয় করণ করতে হবে। আর সকল হিসাব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে। তিনি সব খবর রাখেন, সব জানেন। মা যেমন সব সন্তানের খোজ খবর রাখেন, তেমনি তিনিও বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের খবর রাখেন। তিনি ছাড়া এদেশের শিক্ষা ব্যবস্হার কেউ উন্নয়ন করবেনা বা করতে পারেনা। ইতিহাস যার স্বাক্ষী।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে বেসরকারী শিক্ষকরা তাকিয়ে আছেন। কখন তিনি এ জাতিকে উন্নত জাতিতে পরিনত করার মানসে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করন ঘোষনা দিবেন। এ প্রত্যাশায় শিক্ষকরা এখন প্রহর গুনছে।

লেখক: মো. আলমগীর হোসেন খান,

অধ্যক্ষ,

মিরুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ

মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।

মোবাইল-০১৭১৬২১৩৮০৭

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...