ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - কাউখালীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র নাদিম সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে

কাউখালীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র নাদিম সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে

 

সৈয়দ বশির আহম্মেদ, কাউখালী :

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা বাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র ছিল নাদিম সিনামা হল । এক সময় এ সিনেমা হলের আশ পাশ জুড়ে ছায়ছবি প্রিয় মানুষের মিলনস্থল ছিল। এ সিনেমা হল ঘিরে মানুষের মুখরতা ছিল সুখের। এখন সে সিনেমা হলের আশপাশে জুড়ে এখন যেন সুনসান নিরবতা। গত একছর ধরেই শহরের একমাত্র নাদিম সিনেমা হলটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। সিনেমা প্রদর্শণে লোকসান দিতে দিতে হল মালিক বিপর্যস্ত। সেই সাথে দর্শক শূণ্যতায় কুলিয়ে উঠতে না পেরে একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। কাউখালীর নাদিম সিনামা হলের ভবন ও জমি বিক্রির জন্য সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন হল মালিক। এতে বেকার হয়ে গেছে এ সিনেমা হলের সাথে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারীরা। সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার পর কর্মচারী রিকশা-ভ্যান, অটো রিকশা চালানোসহ নানা পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
নাদিম সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানাগেছে, নিম্নমানের সিনেমা, সিনেমায় অশ্লীলতা, ডিশ লাইনে সিনেমা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিয়মিত সিনেমা প্রচার, ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন, ভিডিও পাইরেসির কারণে সিনেমা দর্শকরা হাতের কাছে বিনোদন পাচ্ছেন। ফলে সিনেমা হলে কেউ আর সিনেমা দেখতে আসেন না। ফলে হলে দর্শক শূণ্য অবস্থা। এমন অবস্থায় লোকসান গুনতে গুনতে আর্থিক ক্ষতির কারনে সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
কাউখালী শহরেরর উত্তর বন্দরের পান বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নাদিম সিনেমা হলে জীবনে বহু সিনেমা দেখেছি। এখন সেসব স্মৃতি । এই সিনেমা হল চালু থাকার সময়গুলোতে শহরে মধ্যরাত অবধি মানুষের কোলাহল থাকতো।
এ বিষয়ে কাউখালীর শিক্ষক ও সংস্কৃতিজন সুব্রত রায় বলেন, সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেলে এই শিল্পের সাথে জড়িত শিল্পী কলা-কুশলী, মালিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একজন হল-মালিক লাখ টাকা খরচ করে সিনেমা কিনে আনেন। তিনি যখন দেখেন সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমা হলের পাশের চায়ের দোকানে বসে লোকজন দেখছেন। তখন দর্শক কেন সিনেমাটি দেখবে? তিনি বলেন, সিনেমা হলে যাওয়ার আগেই বেশিরভাগ চায়ের দোকানেই সেসব সিনেমা দেখা যায়। বর্তমানে মানুষ মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপে সিনেমা দেখতে পারে। অর্থাৎ সিনেমা মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।

উল্লেখ্য দেশে এক সময় প্রায় ১৪০০ সিনেমা হল ছিল। এখন এ সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় আড়াইশ’তে নেমেছে। এর মূল কারণ হিসেবে হল মালিকরা বলছেন, মানসম্মত ও দর্শক গ্রহণযোগ্য্য সিনেমা নির্মিত না হওয়া এবং যে সব সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো চালিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে না পারা। এতে তারা দিন দিন লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন। একটি সিনেমা চালিয়ে হলের কর্মচারীসহ যে সব আনুষঙ্গিক খরচ হয়, তা উঠে আসে না। ফলে তারা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই সারা দেশে বন্ধ হওয়া সিনেমা হলগুলোর জায়গায় এখন শপিং কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...