ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - বর্ষায় শোভন চালতা ফুল

বর্ষায় শোভন চালতা ফুল

দেবদাস মজুমদার >
আমরা সবুজে বাঁচি । তবু আমাদের প্রাণ প্রকৃতির অনেক চেনা জানা প্রাণ খুঁটিয়ে দেখা হয়না । তবে প্রকৃতির যা কিছু শোভন তা দেখে আমরা মুগ্ধ হই।আসলে প্রাণ ও প্রকৃতি আমাদের নিয়ত বাঁচিয়ে রাখে, আমাদের মনের ও দেহের খাদ্যও জোগায় ।
মাঝারি আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ চালতা গাছ। সাধারনত গৃহস্থ বাড়ির আনাচে কানাচে দেখা মেলে। আবার উদ্যানেও শোভাবর্ধনে লাগানো হয়। লম্বাটে খাঁজ কাটা ঘন পাতার ডালের জগায় বর্ষায় ফোঁটে চালতা ফুল। ধবধবে সাদা চালতা ফুল বেশ শোভন এক ফুল। ভীষণ পরিচিত চালতা বাংলাদেশে বহুকাল ধরে টিকে আছে। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। শ্রীলঙ্কা, চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু দেশে এই ফুল হয়। বিশেষত এটি ভারতবর্ষীয় উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে অঞ্চলভেদে চালতাকে চালিতা ও চাইলতে নামে পরিচিত।অম্ল মধূর রসে ভরা চালতা ফল বেশ লোভনীয় ফল।শরত-হেমন্ত ফল পাকার সময়। শীতকাল পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। চালতার ফল হয় টকমিষ্টি। আচার, চাটনি, টক ডাল রান্নায় ব্যবহৃত হয়। পাকা ফল পিষে নিয়ে লবণ, কাঁচামরিচ দিয়ে মেখে খাওয়া যায়। চালতার শাঁস নানা খাদ্যে ব্যবহার করা হয়। জেলি ও শরবত তৈরির হয় চালতা ফল থেকে।
গাছটি দেখতে সুন্দর বলে শোভাবর্ধক তরু হিসাবেও কখনো কখনো উদ্যানে লাগানো হয়ে থাকে।গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারা খাঁজ কাটা, শিরা উঁচু সমান্তরাল। চালতার সাদা রঙের ফুল দেখতে সুন্দর ; এটি সুগন্ধযুক্ত। বছরের মে-জুন মাসে চালতা ফুল ফোটার মৌসুম। এখন চালতা গাছে পরিপক্ক ফল ধরেছে।চালতা ফুলের গড়ন অত্যন্ত আকর্ষণীয়। চালতা ফুলের বৃতিই একসময় ফলে রূপান্তরিত হয়।
চালতার বৈজ্ঞানিক নাম: Dillenia indica) ,ইংরেজী নাম Elephant Apple।
চালতা গাছ মাঝির আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ উচ্চতায় ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। গ্রাম বাংলায় সাধারণত বনে জঙ্গলে এ গাছ জন্মে ; কখনো কখনো দু’একটি গাছ বাড়ির উঠানে দেখা যায়। চালতা ফলের যে অংশ খাওয়া হয় তা আসলে ফুলের বৃতি। প্রকৃত ফল বৃতির আড়ালে লুকিয়ে থাকে। চালতা অপ্রকৃত ফল; মাংসল বৃতিই ভক্ষণযোগ্য।
এ গাছ অচাষকৃতভাবেই বেঁচে থাকে। গাছে পাকা ফল বেশিদিন থাকলে তা এক সময় ঝরে পড়ে। সেই বীজ থেকে গাছের নিচে আরও গাছ জন্ম নেয়। গাছের ঘন পাতার আড়ালে চোখ জোড়ানো সৌন্দর্য নিয়ে ফুটে থাকে চালতা ফুল।ধবধবে সাদা পাঁচটি পাপড়ি। বেশ মোটা ও মাংসল। গোলাকৃতি ফুলের পরাগকেশর অসংখ্য। সব মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন চালতা ফুল। চালতা গাছ মূলত বেঁচে থাকে গ্রামে। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে খোঁজ করলে গাছটির দেখা মেলে। গাছটি থেকে শক্ত কাঠ হয়। নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এ কাঠ।
চালতার সৌন্দর্যগুণে প্রকৃতিপ্রেমীরা বিমোহিত হয়। অনিন্দ্যসুন্দর চালতা ফুল নিসর্গে ছড়িয়ে দেয় বর্ষায় মায়া মুগ্ধ রূপ। তাই আসুন এই গাছ লাগানোর উপযুক্ত মৌসুমে সবাই অন্যান্য বনজ ফলদ হাছের সাথে একটি করে চালতা গাছের চারা রোপন করি। সবুজ বাঁচাই..সবুজে বাঁচি।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...