মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি <>
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় একটি কলেজের ৫৫জন পরীক্ষার্থীর সকলেই ইংরেজী বিষয়ে ফলাফলে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে তাদের শিক্ষাজীবনে চরম হতাশা নেমে এসেছে। এসব শিক্ষার্থীরা অন্যসব বিষয়ে সন্তোষজনক নম্বর পেলেও কেবল ইংরেজি বিষয়ে সকলেই কম নম্বর পাওয়ায় চরম ফলাফল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। উপজেলার মিরুখালী স্কুল এ- কলেজের ৫৫জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী এ ফল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে এখন শিক্ষাজীবনে চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন।
ভূক্তভোগি শিক্ষার্থীদের দাবি কেবল ইংরেজী দুই পত্রের মধ্যে কেবল একপত্রের ফলাফল ফলাফল দিয়ে দুই পত্রের ফলাফল হিসেব করায় তারা ভাল ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বরিশাল বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভুলে এসকল শিক্ষার্থীর ইংরেজি বিষয়ের দুই পত্রে কেবল এক পত্রের নম্বর দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করে। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে পরামর্শ দিলে সকল পরীক্ষার্থী ফলাফল পূনর্বিবেচনার আবেদন জানালেও সংশ্লিষ্ট বোর্ডের এখন সড়া মিলছেনা। এদিকে বিপর্যস্ত পরীক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট কলেজে ধর্ণা দিচ্ছেন।
সংশিলষ্ট কলেজ সূত্রে জানাগেছে, ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় মিরুখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে স্কুল এ- কলেজে উন্নীত করা হয়। প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটি সন্তোষজনক ফলাফল করে আসছে। এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ৫৫জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ফলাফল প্রকাশের পর দেখা য্য়া ১১জন উত্তীর্ণ ও ৪৪জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এদের সকল বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর প্রতিটা বিষয়ের দুই পত্রে গড়ে ১৪০ থেকে ১৭৫নম্বর হলেও কেবল ইংরেজি বিষয়ে ৪৪ পরীক্ষার্থী গড়ে ১২ থেকে ৫৭ পর্যন্ত নম্বর অর্জণ করেছে। এ্ছাড়া কৃতকার্য ১১জন পরীক্ষার্থীর ৯জন কেবল ইংরেজি বিষয়ে ৬৬ ও ২জন পরীক্ষার্থী ৮১ ও ৮৩ নম্বর অর্জণ করে। ফলে ৫৫জন পরীক্ষার্থীর সবার কেবল ইংরেজি বিষয়ে ফল বিপর্যয় ঘটে।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী মুক্তা আক্তার বলেন, আমি পিএসসি,জেএসসি ও এসএসসিতে এ প্লাস সহ মেধা বৃত্তি লাভ করেছি । আশা করেছিলাম এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জণ করবো। কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভুলে ইংরেজি বিষয়ে এক পত্রের নম্বর দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করেছে। ফলে আমি ফল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছি। শুধু আমি নই আমার সহপাঠি ৫৫জন পরীক্ষার্থীই এমন বিপর্যয়ের শিকার।
মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী মো. ইউসুফ আলী দাবি করেন, আমি পরীক্ষায় সব বিষয়ে গড়ে ১৪৫ করে নম্বর লাভ করেছি । অথচ কেবল ইংরেজিতে মাত্র ৫৭ পেয়েছি। আমার বিশ্বাস এত কম নম্বর ইংরেজি দুই বিষয়ে আমি পেতে পারিনা। ইংরেজি দুই পত্রের নম্বর যোগ হয়নি হয়েছে এক পত্রের নম্বর। তাই ফলাফল পূণর্মূল্যায়ের জন্য আমিসহ সকল পরীক্ষার্থী বোর্ডে আবেদন করেছি। কিন্তু গত ১৬ আগস্ট আবেদনকৃতদের ফলাফল ঘোষণা করলেও কেবল আমাদের প্রতিষ্ঠানের ৫৫জন পরীক্ষার্থীর ফলাফল পূণর্মূল্যায়ন করা হয়নি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মিরুখালী স্কুল এ- কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ৫৫জন শিক্ষার্থীই অন্যসব বিষয়ে ভাল নম্বও অর্জণ করেছে। কেবল ইংরেজি বিষয়ে তাদের নম্বর রহস্যজনক ও হতাশাজনক । আমার ধারনা ইংরেজির দুই পত্রের একপত্রের নম্বর দিয়ে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। আমি কয়েকদফা বরিশাল বোর্ডে গিয়ে ফলাফলের শীট নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানে আশ্বস্ত করার কথা বলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করার পরামর্শ দেন। পরীক্ষার্খী ফলাফল পূণর্মূল্যায়নের আবেদনও করে। গত ১৬ আগস্ট অনলাইনে আবেদনকৃত অন্য সব প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের ফলাফল পূণর্মূল্যায় করে ঘোষণা দিলেও কেবল আমার প্রতিষ্ঠানের ৫৫ পরীক্ষার্থীর ফলাফল পূণর্মূল্যায়নের বিষয়টি রহস্যজনক কারনে চাপা পড়ে যায়।
এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আনোয়ারুল আজিম সাংবাদিকদের বলেন, যাদের ফলাফল পূণর্মূল্যায়ন করা হয়েছে কেবল তাদের ফলাফল ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে।