ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - ইসলামী শরীয়তের আলোকে শবে বরাতের বিধান

ইসলামী শরীয়তের আলোকে শবে বরাতের বিধান

আলহামদুলিল্লাহ। দরুদ, সালাত ও সালাম বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, রাসূলে আকরাম মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর যিনি আমাদেরকে বিশেষ ফজীলতপূর্ণ রাত শবে বরাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। সুপ্রিয় পাঠক, সকলের উপলব্ধি সহজ করণের জন্য পুরো আলোচনাটি প্রশ্নাকারে সাজিয়েছি।(বেশি বেশি কপি, শেয়ার করার অনুরোধ করছি)
★ শবে বরাত অর্থ কি?
উত্তরঃ ফার্সী শব্দ শব অর্থ রাত্রি এবং বরাত অর্থ ভাগ্য বা মুক্তি । সুতরাং শবে বরাত অর্থ হল ভাগ্য রজনী বা মুক্তির রাত।

★কবে এই বিশেষ রাত?
উত্তর: শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতই হচ্ছে এই বরকতপূর্ণ মহিমান্বিত রজনী। উল্লেখ্য বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর রায় অনুযায়ী ২০১৯ সালের লাইলাতুল বরাত ২১ শে এপ্রিল রোজ রবিবার দিবাগত রাতে পালিত হবে। তবে এ বছর চাঁদ দেখা নিয়ে প্রচন্ড বিতর্ক হওয়ায় সবাইকে অনুরোধ করবো ২০ এবং ২১ শে এপ্রিল উভয় দিন রোযা এবং রাতে বন্দেগীর মাধ্যমে শবে বরাত পালন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।


★ শবে বরাত কি কোরআন হাদিসে উল্লেখ আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই কোরআন হাদীসে উল্লেখ আছে।
ক) কুরআন শরীফে শবে বরাতকে লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
খ) হাদীস শরীফে শবে বরাতকে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শা’বান মাসের মধ্য রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

★ আরবদেশে কখনো শবে বরাত নামে তো কিছু নেই, কেন?
উত্তরঃ ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মীয় দিক দিয়ে উর্দু ফারসী ভাষার বিশাল প্রভাব থাকায় এ বিষয়টি ফার্সী শব্দ শবে বরাত হিসেবেই অধিক পরিচিত। আরবদেশে আরবিতে লাইলাতুল বারায়াত বা লাইলাতুল নিসফি মিন শা’বান নামে প্রশিদ্ধ। যেমন নামাজ শব্দটি আরবদেশে কোথাও শুনেননি। কেননা তারা আরবীতে সালাত বলেন।

★ এ রাতের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজীলত কি?
উত্তরঃ ক) কুরআন শরীফে এ রাতকে লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনী বলা হয়েছে।
খ) রাতেই সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ প্রথমবার লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে নাযিল হয়েছিল।
গ) আল্লাহ পাক এ রাতে সমস্ত মাখলুকাতের পরবর্তী এক বছরের রিজিক তাকদীর অনুযায়ী বন্টন করেন।
ঘ) বিশেষ রাত হিসেবে আল্লাহ পাক এ রাতে নেক আমল সমূহে অসংখ্য পূন্য দান করেন, তওবাহ কবুল করেন, গুনাহ ক্ষমা করেন, পরিশেষে অসংখ্য বরকত দান করেন।
—————————————————————
আল কুরআন ও হাদীসের বর্ণনায় মহিমান্বিত শবে বরাত।
—————————————————————
★ কোরআন মাজীদ এবং হাদীস শরীফে কি শবে বরাতের আলোচনা আছে? থাকলে আমাদের জন্য বর্ণনা করবেন।
উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই কোরআন মাজীদ এবং হাদীস শরীফের বিভিন্ন বর্ণনায় লাইলাতুল বরাতের আলোচনা আছে।
নিম্নে কোরআন মাজীদ এবং হাদীস শরীফের বর্ণনা পেশ করা হল।

ক)আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন,
ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦِ
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣُّﺒَﺎﺭَﻛَﺔٍ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻨﺬِﺭِﻳﻦَ
ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺃَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴﻢٍ
ﺃَﻣْﺮًﺍ ﻣِّﻦْ ﻋِﻨﺪِﻧَﺎ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﺮْﺳِﻠِﻴﻦَ
অর্থাৎঃ
“শপথ প্রকাশ্য কিতাবের! নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন নাযিল করেছি। নিশ্চয়ই আমিই সতর্ককারী। আমারই নির্দেশক্রমে উক্ত রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফায়সালা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।”
(সূরা দু’খানঃ আয়াত ২-৫)

এ আয়াতের তাফসীরে রঈসুল মুফাসসিরীন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন, “মহান আল্লাহ পাক লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে শা’বান মাসের মধ্য রাত বা শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। আল্লাহ পাক এ রাতে প্রজ্ঞাময় বিষয় গুলোর ফায়সালা করে থাকেন।” (তাফসীরে ইবনে আব্বাস)।
এ আয়াতের তাফসীরে হযরত ইকরামা রাঃ লাইলাতুল মুবারাকা বলে শবে বরাতের রাতকে মত দিয়েছেন। বিস্তারিত দেখুন, তাফসীরে কাবীর এবং কাশশাফ।

খ) হাদীছ শরীফে শবে বরাত সম্পর্কিত নানা আলোচনা এসেছে। নিম্ন কতিপয় হাদীস উপস্থান করলাম।
১) “হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত আছে। একদা আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ! আপনি কি জানেন, লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাতে কি সংঘটিত হয়? তিনি বললেন, হে আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ রাত্রিতে কি কি সংঘটিত হয়? নবীজী (সাঃ) বললেন, এ রাতে আগামী এক বছরে কতজন সন্তান জম্মগ্রহণ করবে এবং কতজন লোক মৃত্যূবরণ করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। আর এ রাতে বান্দার (এক বছরের) আমলসমূহ আল্লাহ পাকের নিকট পেশ করা হয় এবং এ রাতে বান্দার (এক বছরের) রিযিকের ফায়সালা হয়”।
(বাইহাক্বী, ইবনে মাজাহ্, মিশকাত শরীফ )

২) “হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে কোন এক রাতে একত্রে ছিলাম। এক সময় তাঁকে বিছানায় না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিঁনি হয়ত অন্য কোন বিবির হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে তাঁকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। সেখানে তিনি উম্মতের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফে ফিরে এলে তিনিও ফিরে এলেন এবং বললেনঃ আপনি কি মনে করেন আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন? আমি বললামঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারনা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন স্ত্রীর হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বণী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন”।
(তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ,মিশকাত শরীফ)

৩) “হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ননা করেন, রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক শা’বান মাসের ১৫ তারিখ রাত্রিতে ঘোষনা করেন যে, “শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত তাঁর সমস্ত মাখলুকাতকে ক্ষমা করে দিবেন।”
(ইবনে মাযাহ্, আহমদ, মিশকাত শরীফ,সহীহ ইবনু হিব্বান)

৪) “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ননা করেন, আল্লাহ পাকের হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষাণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন।”
(ইবনে মাযাহ্,মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)

৫) “বিশ্বনবী হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি শা’বানের মধ্য রাতে (শবে বরাত) ইবাদত করবে তারই জন্য সুসংবাদ এবং তার জন্য সমস্ত কল্যাণ।”

৬) মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে এবং অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাতের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করবে, সে ব্যক্তির অন্তর ঐদিন মরবে না বা পেরেশান হবে না যে দিন সকলের অন্তর পেরেশান থাকবে “।
(মুকাশাফাতুল কুলুব)

৭) শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
“নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, পাঁচটি রাত এমন রয়েছে। যেগুলোতে দোয়া করলে তা রদ বা বাতিল হয়না।
(১) পহেলা রজবের রাত।
(২) শা’বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত।
(৩) জুমুয়ার রাত।
(৪) পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত।
(৫) পবিত্র ঈদুল আযহার রাত।
(মুসনাদে ফিরদাউস বা দায়লামী শরীফ )

শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল প্রসঙ্গে অন্য হাদীছ শরীফেও বর্ণনা এসেছে। যা গুনইয়াতুত ত্বালিবীন এবং মুকাশাফাতুল কুলুব গ্রন্থদ্বয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুতরাং কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয় যে, শবে বরাত কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা সাব্যস্ত ইসলামী শরীয়তের আলোকে বৈধ এক মহিমান্বিত রজনী। তাই এ রাতের গুরুত্ব অপরিসীম।
—————————————————————
আহলে হাদিসদের ইমাম ইবনে তায়মিয়া (আফায়াল্লাহু আনহু) এর ফতোয়ায় শবে বরাত বৈধ, আহলে হাদীসদের জবাব আছে ? !!
—————————————————————
প্রশ্নঃ- উপরোক্ত আলোচনায় কোরআন হাদীসের আলোকে শবে বারায়াতের প্রমাণ পেলাম। বর্তমান যুগের নামধারী আহলে হাদীসের সবাইতো তা অস্বীকার করেন। তাদের পছন্দনীয় কোন শাইখ, বিজ্ঞ আলেমদের কি শবে বারায়াত সম্পর্কিত কোন মতামত আছে? শবে বারায়াত সম্পর্কে তাদের মতামত কি?

উত্তর:- শবে বরাত সম্পর্কে আহলে হাদীসের ইমাম, তকীউদ্দীন ইবনে তাইমিয়া হাম্বলী (রহঃ) এর ফতোয়া গুলো উল্লেখ করবো। আল্লাহ তা’য়ালাই একমাত্র তাওফিক দাতা। নিরপেক্ষ বিচারের ভার পাঠকের হাতেই সমর্পিত।

১) আসুন দেখা যাক, আহলে হাদীসদের প্রিয় ব্যক্তি ইবনে তাইমিয়া তার স্বীয় কিতাবে শবে বারায়াত সম্পর্কে বলেন —
“অতঃপর লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান (শবে বারায়াত) তার ফযীলত আছে। এবং সলফে সালেহীনদের অনেকে এই রাতে নামায পড়তেন।”

**রেফারেন্সগুলো লক্ষ্য করুন ——>
★আল-ফাতওয়া আল কুবরাঃ ৫/৩৪৪,
★আল-মুসতাদরেক আলা মাজমুয়ায়ে ফাতওয়াঃ ৩/১১২,
★আল-আখবারুল আলামিয়্যাহ মিনাল ইখতিয়ারাতিল ফিকহিয়্যাঃ ৫/৩৪৪)

২) ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ অন্যত্র আরবী মাস সমূহের নফল রোযার ব্যপারে আলোচনার এক পর্যায়ে শা’বান মাসের আলোচনায় বলেন,

“এই বিষয়ের আরেকটি হল, লাইলাতুন নিছফি মিন শাবান (শবে বরাত) । তার ফযীলত সম্পর্কে রাসূল [ ﷺ ] এর অনেক প্রমানিত মারফু’ হাদীস এবং ছাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) দের উক্তি বর্ণিত হয়েছে। যার চাহিদা হলো, এই রাত ফযীলতপূর্ণ রাত। এবং সলফে সালেহীনদের অনেকে এই রাতে বিশেষ ভাবে নামায পড়তেন। এবং শাবান মাসে রোযা রাখার ব্যপারেও সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। মদীনার এবং অন্য স্থানের কিছু সালাফী আলেম এবং তার পরবর্তী কিছু আলেম এই রাতের ফযীলতকে অস্বীকার করে। এবং তারা এই বিষয়ে সে সকল হাদীস বর্ণিত হয়েছে তা নিয়ে তিরস্কার করে । যেমন, আল্লাহ তা’য়ালা এই রাতে বনী “কালবের” ছাগলের পশমের চেয়েও বেশি লোককে ক্ষমা করে দেন। এবং তারা বলেন, এই রাত ও অন্য রাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। কিন্তু অধিকাংশ আলেম অথবা আমাদের হাম্বলী মাযহাব ও অন্যন্য মাযহাবের আলেমদের মতে এই রাতের বিশেষ ফযীলত রয়েছে। এ ব্যাপারে অনেক হাদীস ও সালফে সালেহীনদের অনেক বক্তব্য থাকার কারণে এই বিষয়ে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) এরও নস তথা বক্তব্য রয়েছে।”
**রেফারেন্স লক্ষ্য করুন ——>
★ইকতেযাউস সিরাতিল মুস্তাকীমঃ ১/৩০২

৩) ইবনে তাইমিয়া কে এই রাতে অন্য দিনের চেয়ে বেশি নামায পড়া যাবে কি না এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন — ” যখন কোন ব্যক্তি লাইলাতুন নিছফি মিন শাবানে (শবে বারায়াতে) একা একা নামায পড়বে অথবা বিশেষ জামাতের সাথে নামায আদায় করবে, যেমন সালফে সালেহীনদের বড় এক দল করতেন তাহলে তা উত্তম।
**রেফারেন্স খেয়াল করুন —->
★আল-ফতোয়া আল-কুবরাঃ ২/ ২৬২
ফতোয়া নং ২২২।
★মাজমুউল ফাতওয়াঃ ২৩/১৩১
—————————————————————
উপরোল্লিখিত ফতোয়া গুলো দ্বারা যা সাব্যস্ত হয়, তার পরেও শবে বারায়াতের বিরুদ্ধে অন্তত আহলে হাদীসগন অপপ্রচার করার কথা নয়। যেহেতু শবে বারায়াতের বিপক্ষে ভিত্তিহীন, মনগড়া অপপ্রচার করেই যাচ্ছেন তখন–
প্রশ্ন থেকে যায়,
নামধারী আহলে হাদীসের কাছে শবে বারায়াতের সহীহ হাদীস কেন পৌছেনি; যা তাদের পূর্বসূরী ইমাম, বিজ্ঞ আলেম ইবনে তায়মিয়া রহঃ এর কাছে পৌছেছিল ?
নাকি শবে বারায়াতের ফযীলত এবং সালফে সালেহীনগনের আমলকে শর্টকাট করে ভ্রান্ত মাযহাব প্রতিষ্ঠা করতেই তাদের এই অপপ্রচার??

অবশেষে আহলে হাদীসের অপপ্রচার বন্ধ করে দ্বীনের সহীহ মানহাযকে গ্রহন করার আহবান রইল।
—————————————————————
প্রিয় বিজ্ঞ পাঠকবৃন্দ, শবে বরাতের বিশেষ ফযীলতের বিষয়ে যেমন সহীহ হাদীস আছে ঠিক তেমনি সালফে সালেহীনদের বক্তব্য এবং আমলও প্রমাণিত আছে। যেমনটি ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) ফাতওয়া দিয়েছেন। নিঃসন্দেহে শবে বারায়াত একটি ফযীলতর্পূণ রাত বলেই সাব্যস্ত হল। এ রাতের সকল নফল ইবাদাত শুধু বৈধই নয়; বরং মুস্তাহাব। এতে ইসলামী শরীয়তের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা নেই।

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে প্রকৃত বিদয়াতি, জ্ঞানপাপী, আহলে হাদীস ফিতনা থেকে হেফাযত করে আমাদেরকে এই বিশেষ রাতের নফল ইবাদাত করার তাওফিক দান করুন এবং এ রাতের উসিলায় আমাদের পরকালীন জীবনে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আল্লহুম্মা আমীন!!
—————————————————————
মহিমান্বিত শবে বারায়াত নিয়ে সংশয় নিরশন! (আপত্তি ও তার জবাব)
—————————————————————
★প্রশ্ন:– শবে বরাত কোরআন ও হাদিসের বিস্তারিত দলীল জানাবেন।
উত্তর: অবশ্যই কোরআন হাদীসে শবে বরাতের উল্লেখ আছে। যা আগেই উল্লেখ করেছি। কুরআনের আয়াতের তাফসীরে যেহেতু প্রখ্যাত মুফাসসিরগণ মত দিয়েছেন, তখন তা অস্বীকার করা নিতান্তই বাতুলতা ও মূর্খতা। যদি তাফসীরের রায় আমরা তর্কের খাতিরে সাময়িকভাবে গ্রহন না করি, তবুও সহীহ হাদীসের আলোকে বর্ণিত বিষয়টিকে অস্বীকার কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
ক) কুরআন শরীফে শবে বারায়াতকে লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন,
ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦِ
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣُّﺒَﺎﺭَﻛَﺔٍ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻨﺬِﺭِﻳﻦَ
ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺃَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴﻢٍ
ﺃَﻣْﺮًﺍ ﻣِّﻦْ ﻋِﻨﺪِﻧَﺎ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﺮْﺳِﻠِﻴﻦَ
অর্থাৎঃ
“শপথ প্রকাশ্য কিতাবের! নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন নাযিল করেছি। নিশ্চয়ই আমিই সতর্ককারী। আমারই নির্দেশক্রমে উক্ত রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়গুলো ফায়সালা হয়। আর নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।”
(সূরা দু’খানঃ আয়াত ২-৫)

★প্রশ্ন:– নামধারী আহলে হাদীস সহ কিছু মানুষ বলে থাকেন যে, সূরা দু’খানের আয়াত শরীফের লাইলাতুম মুবারাকা দ্বারা শবে বারায়াত নয়, শবে ক্বদর-কে বুঝানো হয়েছে।
কারণ, উক্ত আয়াত শরীফে সুস্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন নাযিল করেছি। আর কুরআন শরীফ যে ক্বদরের রাতে নাযিল করা হয়েছে তা সূরা ক্বদরেও উল্লেখ আছে।
এই সংশয়টি কিভাবে নিরশন করবেন?

উত্তর:- এর জবাবে আমরা বলবো —->
১) বারায়াতের রাতেই সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ প্রথম বার লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে নাযিল হয়েছিল। যা সূরা দু’খানে বলা হয়েছে।
আর নবীজী [ ﷺ ] এর দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুয়তী জীবনে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে যেই কুরআন নাযিলের সূচনা হয়েছিল তা ক্বদরের রাত্রিতে শুরু হয়েছিল। এটিই সূরা ক্বদরে বর্ণিত হয়েছে। তাহলে বাহ্যত দৃষ্টিতে দুই আয়াতের মধ্যে কোন বৈপরীত্য থাকেনা।

২)আয়াতের তাফসীরে রঈসুল মুফাসসিরীন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্বীয় তাফসীরে উল্লেখ করেন, “মহান আল্লাহ পাক লাইলাতুম মুবারাকাহ বলতে শা’বান মাসের মধ্য রাত বা শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন। আল্লাহ পাক এ রাতে প্রজ্ঞাময় বিষয় গুলোর ফায়সালা করে থাকেন।” (তাফসীরে ইবনে আব্বাস)।

৩)সূরা দু’খানের ৪ নম্বর আয়াত শরীফ — (ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺃَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴﻢٍ) এই আয়াত শরীফের ﻳُﻔْﺮَﻕُ শব্দের অর্থ হল ফায়সালা করা।
অধিকাংশ মুফাসসিরীনে কিরামগণ ﻳُﻔْﺮَﻕُ (ইয়ুফরাকু) শব্দের তাফসীর করেছেন —->
★ইয়ুকতাবু অর্থাৎ লেখা হয়।
★ইয়ুফাছছিলু অর্থাৎ ফায়সালা করা হয়। ★ইয়ুতাজাও ওয়াযূ অর্থাৎ বন্টন বা নির্ধারণ করা হয়।
★ইয়ুবাররেমু অর্থাৎ বাজেট করা হয়।
★ইয়ুকদ্বিয়ু অর্থাৎ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অতএব, ইয়ুফরাকু শব্দের অর্থ ও তার ব্যাখ্যার মাধ্যমে আরো স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, লাইলাতুম মুবারাকাহ দ্বারা শবে বরাত বা ভাগ্য রজনীকে বুঝানো হয়েছে।

৪) সুরা দু’খান-এর আয়াত শরীফ-
‘আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি’। যার ব্যাখ্যামুলক অর্থ হল–
আমি বরকতময় রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিলের ফায়সালা করেছি’।

আর সুরা ক্বদর এর আয়াত শরীফ- ‘আমি ক্বদরের রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি’ এর ব্যাখ্যামুলক অর্থ হল–
‘আমি ক্বদরের রজনীতে কুরআন শরীফ নাযিল করেছি’।
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক শবে বরাতে কুরআন শরীফ নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন এবং শবে ক্বদরে তা নাযিল করেন।
আশা করি দু’টি আয়াতের সৃষ্ট সংশয় নিরশনে ব্যাখ্যাগুলোই যথেষ্ট।

★প্রশ্ন:- হাদীস শরীফে শবে বারায়াত নামে তো কিছু নেই, তারপরেও আমরা শবে বারায়াত পালন করবো কেন?
উত্তরঃ হাদীস শরীফে শবে বারায়াতকে লাইলাতুল নিসফি মিন শা’বান নামে উল্লেখ করা হয়েছে। শবে বারায়াত ফার্সী শব্দ। ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মীয় দিক দিয়ে উর্দু ফারসী ভাষার বিশাল প্রভাব থাকায় ফার্সী শব্দ শবে বরাত হিসেবেই অধিক প্রসিদ্ধ। একটি অভিন্ন বিষয়; দু’টি ভিন্ন ভাষায় ভিন্ন ভিন্ন নাম। এতে আপত্তির কিছু নেই। যেমন নামায, রোযা, বেহশত দোযখ শব্দগুলোও কোরআন ও হাদীস শরীফের কোথাও নেই। কারণ এগুলো ফারসী শব্দ। তাই বলে কি এগুলো নেই এমন দাবী কি কেউ কখনো করেন!?

খ) হাদীস শরীফে শবে বরাতকে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শা’বান মাসের মধ্য রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সহীহ হাদীসে এর বর্ণনা রয়েছে, যা শুরুতেই প্রাথমিকভাবে আলোচনা করেছি।
শবে বরাত অর্থাৎ ১৫ শা’বানের রজনীর ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। কেউ অস্বীকার করলে তা দৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়।
সহীহ হাদীসে শবে বারায়াত নেই এটি আহলে হাদীসের একটি মিথ্যাচার। এমনকি তাদের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব আলবানী পর্যন্ত শবে বারায়াতের হাদীসকে সহীহ বলেছেন। আমি নিচে মুহাদ্দিসীন গনের মতানুসারী হাদীসের সহীহ মান সহ একটি সহীহ হাদীসের দুটি রেওয়ায়াত উল্লেখ করছি।

০১. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) এর হাদীস-
صحيح ابن حبان – محققا (12/ 481)
—————————————————————
5665 – أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُعَافَى الْعَابِدُ بِصَيْدَا، وَابْنُ قُتَيْبَةَ وَغَيْرُهُ، قَالُوا: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ خَالِدٍ الْأَزْرَقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو خُلَيْدٍ عُتْبَةُ بْنُ حَمَّادٍ، عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ، وَابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَطْلُعُ اللَّهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ»

অর্থাৎ– হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুলল্লাহ [ ﷺ ] ইরশাদ করেন,
‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে (শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’
★সহীহ ইবনে হিব্বান-১২/৪৮১, হাদীস-৫৬৬৫
★কিতাবুস সুন্নাহ-১/২২৪, হাদীস-৫১২
★আল ইহসান-৭/৪৭
★মাওয়ারিদুয যমআন-৪৮৬, হাদীস-১৯৮০
★মাজমাউ যাওয়াইদ-৮/৬৫
★সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪ ★শোয়াবুল ঈমান-৩/৩৮২, হাদীস-৩৮৩৩
★আল মু’জামুল কাবীর-২০/১০৮,১০৯ ★আততারগীব-২/২৪২
(এছাড়া বহু হাদীসের গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ আছে)

🎓 হাদীসটির মান : হাদীসটি সম্পূর্ণ সহীহ।
মুহাদ্দিসীনে কিরামদের অভিমত দেখুন।

১) ইমাম ইবনে হিব্বান (রহঃ) বলেন, হাদীসটি সহীহ।

২) আহলে হাদীসদের মুহাদ্দিস শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী (১৪২০ হিঃ) বলেন-
سلسلة الأحاديث الصحيحة وشيء من فقهها وفوائدها (3/ 135)
1144 – ” يطلع الله تبارك وتعالى إلى خلقه ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن “.
حديث صحيح، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا وهم معاذ ابن جبل وأبو ثعلبة الخشني وعبد الله بن عمرو وأبي موسى الأشعري وأبي هريرة وأبي بكر الصديق وعوف ابن مالك وعائشة.
উক্ত হাদীসটি সহীহ, যা সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এর এক বড় জামাত বর্ণনা করেছেন এবং একটি হাদীস অন্য হাদীস এর সনদকে আরো মজবুত করে তুলে। সাহাবীদের থেকে বর্ণনাকারীগণ হলেন-
১) হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)
২) আবূ সালাবা আল খাসানী (রা.)
৩) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)
৪) আবূ মূসা আল আশআরী (রা.)
৫) আবূ হুরায়রা (রা.)
৬) আবূ বকর সিদ্দীক (রা.)
৭) আউফ ইবনে মালেক (রা.)
৮) হযরত আয়েশা (রা.)।
সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪।

৩) আল্লামা মুনজেরী (রহ.) (৬৫৬ হিঃ) বলেন, উক্ত হাদীসটি সহীহ। আত তারগীব ওয়াত তারহীব-২/৭৩, হাদীস-১৫৪৬।

৪) আল্লামা হাইছামী (রহঃ) মৃত্যু-৮০৭ হিজরী, তিনি বলেন-

مجمع الزوائد ومنبع الفوائد (8/ 65)
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْكَبِيرِ وَالْأَوْسَطِ وَرِجَالُهُمَا ثِقَاتٌ.

উক্ত হাদীসটি ইমাম তাবরানী তার মুজামুল কাবীর ও আওসাতে সংকলন করেছেন, এবং সংকলিত হাদীস এর সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। মাজমাওজ যাওয়েদ-৮/৬৫, হাদীস-১২৯৬০।
—————————————————————

০২. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) এর হাদীস-
مسند أحمد (6/ 197)
—————————————————————
6642 – حدثنا حسن حدثنا ابن لَهِيعة حدثنا حييُّ بن عبد الله عن أبي عبد الرحمن الحُبُلّي عن عبد الله بن عمرو، أن رسول الله -صلي الله عليه وسلم – قال: “يطَّلعُ الله عَزَّ وَجَلَّ إلي خلقه ليلةَ النصف من شعبان، فيغفر لعباده، إلا لاثنين: مشاحنٍ، وقاتِلِ نفسٍ”.

অর্থাৎ– হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ [ ﷺ ] বলেছেন : ১৫ই শা’বানের রাত্রে আল্লাহ পাক তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেন দুই ব্যক্তি ছাড়া।
এক. পরশ্রীকাতর (হিংসুক)।
দুই. অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যাকারী।

★মুসনাদে আহমদ-৬/১৯৭, হাদীস-৬৬৪২।
★মাজমাউস জাওয়ায়েদ-৮/৬৫, হাদীস-১২৯৬১।
★আত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল মুনজেরী-৩/৩০৮।

যে সমস্ত আহলে হাদীসগন সহীহ হাদীস নেই বলে মিথ্যাচার করেন, তারা লক্ষ্য করুনতো আপনাদের প্রসিদ্ধ শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাতে এই হাদীসটিকে ছহীহ বলার পরেও কি এখনো বলবেন হাদীসটি ছহীহ নয়? শবে বরাতের কোন ফযীলত নাই? তাহলে আপনাদের চেয়ে দ্বিমুখী স্বভাব আর কারো আছে কি!?

আসলে আহলে হাদীসগন হিংসাপরায়ণ হয়ে ‘সহীহ হাদীস নেই’ মর্মে শুধু শবে বারায়াতকেই অস্বীকার করেনি বরং তারা রাসূলে কারীম [ ﷺ ] এর উপরেই মিথ্যাচার করেছে এবং নিজেদের জ্ঞানের জাহালাত-ই প্রকাশ করেছে।

কুরআন হাদীসের আলোকে শবে বরাত নিয়ে ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসার মুহতারাম অধ্যক্ষ সাহেবের অসাধারণ লেখা পড়ুন নিচের লিংকে। (৪৫ মিনিটের টিভি লাইভ প্রোগ্রাম সহ)
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=631336140646207&id=100013094793949

শবে বরাত নিয়ে নানা প্রশ্ন এবং তার জবাব নিয়ে শাইখ সাইফুল আজম আল আযহারী ভাইয়ের চমৎকার লেখা পড়ুন এই লিংকে।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=576948469455138&id=100014199703589

আর বিস্তারিত জানতে মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর, ইয়ামেনের শাইখ, সৌদির স্কলার এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের ৮ টি ভিডিও দেখুন এই লিংকে।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=575495252933793&id=100014199703589

শাইখ আব্দুল্লাহ আল মুতলাক সাহেব,সদস্য, উচ্চ উলামা পরিষদ, সৌদি আরব। তার বক্তব্যে শবে বরাতকে ফজীলতপূর্ণ রাত বলে স্বীকার সহ ইবনে তায়মিয়া রহঃ এর মতামতও স্পষ্ট করা হয়েছে নিচের লিংকে।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=577948596021792&id=100014199703589

#বিঃদ্রঃ স্টীকারে নামের আগের ও পরের লকবের অযোগ্য আমি এমনকি ভিন্নমত পোষন করি। এর দায়বদ্ধতা Muhibbullah Al-mahdi

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...