ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - মাটির বেদীতে কলা গাছের মিনার !

মাটির বেদীতে কলা গাছের মিনার !

দেবদাস মজুমদার >>

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ২০৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজও গড়ে ওঠেনি ভাষার শহীদ মিনার। সরকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে আন্তুর্জাতিক মহান মাতৃভাষা দিবস পালন বাধ্যতামূলক করলেও বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা একুশের প্রভাত ফেরী শেষে শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারেনা। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিশুরা মাটির বেদীর ওপর কলা গাছে শহীদ মিনার বানিয়ে সেখানে ভাষা শহীদদের পুষ্পমাল্য অর্পণ করে আসছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় ২০৫ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দৃষ্টনন্দন কোনও শহীদ মিনার নেই। তবে এর মধ্যে ২০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছিল। যা খর্বকায় ও জ¦ীর্ণদশা। এসব বিদ্যালয়ে একুশ উদযাপন করা হয় শহীদ মিনার ছাড়াই। কিছু বিদ্যালয়ে কলাগাছ ও মাটি দিয়ে বিকল্প শহীদ মিনার বানিয়ে তাতেই ফুল দেয় শিশু শিক্ষর্থীরা।

জানাগেছে, ৫৬ নম্বর মঠবাড়িয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েই কোনও শহীদ মিনার নেই। স্কুলটি একটি মডেল স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় প্রতিবছর শিশু শিক্ষার্থীরা প্রভাত ফেরী শেষে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাইনুল ইসলাম মডেল স্কুলে শহীদ মিনার না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্কুলে শহীদ মিনার তো দুরের কথা খেলার মাঠও নেই। শহীদ মিনার নির্মাণে আমাদের জায়গা নেই। তবে প্রতিটা স্কুলেই একটা করে শহীদ মিনার থাকা উচিত।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখাগেছে, দিনভর মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ৯২ নম্বর উদয়ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী মিলে কলাগাছ,কাদা মাটি আর রঙিন কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে একুশ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ মহান মাতৃভাষা দিবসে বিকল্প এ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ওরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ফাতিমা আক্তার বলে, আমাগো স্কুলে কোনও শহীদ মিনার নাই। তাই প্রতিবছর স্যারদেও সহযোগিতায় আমরা নিজেরা মিলে স্কুলে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দেই। আমাদের স্কুলে একটা শহীদ মিনার দরকার।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রমা রানী বল বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় আমরা বিব্রত। মাতৃভাষা দিবসে শিক্ষার্থীরা বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে শ্রদ্ধা জানায়। শুধু একুশ পালনের জন্যই নয় প্রতিটা স্কুলে আমাদের ভাষার দৃষ্টি নন্দন মিনার থাকা উচিত।

তিনি আরও বলেন, গতবছর স্কুলের উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসছিল । ওই সময় ওই বরাদ্দের কিছুটা দিয়ে স্কুলে একটা শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি করেছিলাম। কিন্তু কেউ তা আমলে নেননি।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) কিরন চন্দ্র রায় বলেন, তবে শহীদ মিনার নির্মাণে কোন বরাদ্দ নেই । কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের উদ্যোগে শহীদ মিনার থাকলেও তা খর্বকায় ও জ¦ীর্ণদশা। আমাদের প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টি নন্দন শহীদ মিনার থাকা উচিত। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...