প্রিয় আশরাফুর রহমান ভাই,
আওয়ামী লীগের সারা দেশের অনেক নেতা-কর্মী টিকে আছে হৃদয়ের ক্ষত নিয়ে। তারা দলের বিপক্ষে এক সেকেন্ডের জন্যও যায়নি। বাড়ির দুষ্ট ছেলেরা সবসময় খারাপ সময়েও বাড়িতে থাকে। সুসময়ে অভিমান করে দূরে সরে থাকে। কিন্তু পরিবারের কোনো অসময় দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। লড়ে যায় পরিবারের জন্য। তারা জানে, সুবিধা নেওয়ার গ্রুপ পরিবারে আলাদা। ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল থাকার মানুষও আলাদা। রাজনীতির এই আদর্শিক দিকটাই সবার জন্য জরুরি। সবাই স্বপ্নের আগামীকে নিয়ে কঠোর দৃঢ়তা নিয়ে দীর্ঘ সময় থাকতে পারে না। কেউ কেউ পারে। এই জীবনে সব হিসাব মিলবে না। একজন নেতা তিল তিল করে একটি আসন গড়ে তোলেন। সেই আসনকে ঘিরে থাকে আশা-আকাক্সক্ষার আগামী। জোটেভোটে মনোনয়ন বিপর্যয় ভেঙে চুরমার করে দেয় সবকিছু। আর তখনই অনেকে জড়িয়ে পড়েন আত্মধ্বংসের খেলায়। নেতাদের নষ্ট চিন্তায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কর্মীরা। তখনই সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয় রাজনীতি নিয়ে। রাজনীতির মানে শুধু ক্ষমতা নয়। আদর্শও থাকতে হয়। তবু নিজ অন্দরে অপমান, অপদস্থ হয়ে অনেক মানুষ নিজেকে আদর্শিকভাবে খুন করেন না। আমি সম্মান করি ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতাদের কে যারা নীরবে অশ্রু বিসর্জন দেন নবাগত বহিরাগত অথবা কোনো দোকানদারদের কাছে। তবু তারা বদল হন না। নিজেকে টিকিয়ে রাখেন আদর্শিক ধারায়। অথচ তাদের কান্না কেউই দেখে না। সবাই হিসাব মেলায় যার যার। এখন অবশ্য কারও কিছু করারও নেই। কারণ দলীয় মনোনয়নে একসময়ে নেতাদের বাড়িতে ভিড় ছিল। প্রভাবশালী সিনিয়র নেতারা মনোনয়ন বোর্ডে নিজের অনুসারীদের জন্য লড়তেন। এখন সেই যুগ নেই। এখনকার সবকিছুর হিসাব-নিকাশ আলাদা। বিশেষ করে সরকারি দলের মনোনয়ন হয় বিভিন্ন সংস্থার জরিপ নিয়ে। নানা রকম হিসাব নিয়ে। জোট-মহাজোটের লড়াই নিয়ে। এই লড়াইয়ে কে হারল, কে বাঁচল কী যায় আসে! ক্ষমতার রাজনীতি বড়ই কঠিন খেলা। প্রিয় ভাই , আপনি সর্বশেষ ফেসবুকের লেখায় বলেছেন, বাকি জীবন মঠবাড়িয়ার মানুষের পাশে থাকবেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শেখ হাসিনার জন্যই কাজ করে যাবেন। তাই আপনার প্রতি অনুরোধ রাখছি কর্মীদের কে নেত্রীর জন্য কাজ করতে নির্দেশ দিন। আপনি একটি ঐতিহ্যবাহী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে জম্ম নিয়েছেন। আপনার এই ইতিবাচক আদর্শিক চিন্তার আগামীর প্রতি সম্মান থাকবে বলে বিশ্বাস করি। আপনি এগিয়ে যান। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শেষ ঠিকানা। এই ঠিকানার সঙ্গেই থাকুন। আপনার আগামী আরও উজ্জ্বল হবে। কারণ অনেক মানুষের দোয়া আছে আপনার সঙ্গে। সবাই পারে না। আপনি পারবেন। এখন চারদিকে তাকালে শুধুই দেখি অনেক মানুষের চেহারা বদল হয়ে যাচ্ছে। সরকারি কি বিরোধী দল হাইব্রিড ও নবাগতরা সবখানে এমন। সরকারি দলের সি গ্রেডের কারও কারও আচরণে ত্যাগী কর্মীদের মেজাজ খারাপ হয়।সবকিছু অবাক করার মতো। মাঝে মাঝে মনে হয়, দুদিনের দুনিয়া। কেন এত লড়াই। কেন এত বিরোধ। আসলে রাজনীতির কোনো সরল মেরুকরণ নেই। অদ্ভুত ধোঁয়াশা চারপাশে। হৃদয় নিংড়ানো কষ্ট আর ত্যাগের বিনিময়ে একজন রাজনৈতিক কর্মী বেড়ে ওঠে। ক্ষমতার রাজনীতিতে সেই ত্যাগ-তিতিক্ষা মূল্যহীন। বাস্তবতার কাঠিন্য সবাইকে মানতে হবে। রাজনীতির বীজগণিতে আপন-পর বলে কিছু নেই। আজ-কাল বলেও কিছু থাকে না। সময়টাই বড় হয়ে সামনে আসে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
ইতি,
মেহেদী হাসান বাবু ফরাজি
সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী।