ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - মঠবাড়িয়ার মাঝেরচরে ভোট কেন্দ্রের দাবি চরবাসিদের

মঠবাড়িয়ার মাঝেরচরে ভোট কেন্দ্রের দাবি চরবাসিদের

দেবদাস মজুমদার, মাঝেরচর থেকে ফিরে >>
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরে ওদের বসতি। মূল ভূখ-ের সাথে এদের আসা যাওয়া কম। প্রকৃতির সঙ্গে বেঁচে থাকা চরবাসিদের জীবন। প্রতিটা নির্বাচন এলেই চরে একটি ভোট কেন্দ্রের দাবি তোলেন এসব চরবাসি।
পিরোাজপুরের মঠবাড়িয়া বলেশ^র নদের মধ্যবর্তী মাঝের চরবাসি যুগযুগ ধরে চরে ভোট কেন্দ্র না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ চরে আজও কোন ভোট কেন্দ্র গড়ে উঠেনি।ফলে প্রতিটি নির্বাচনে চরবাসিরা সাড়ে তিন কিলো মিটার নদী ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসছেন।
শনিবার দুপুওে মঠবাড়িয়া উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলো মিটার দুরে মাঝের চরে গেলে চর বাসিরা এবার সংসদ নির্বাচনে চরে একটি ভোট কেন্দ্রের দাবি জানান। ভুক্তভোগি চর বাসিরা জানান, চল্লিশের দশকে উপজেলার বেতমোড় ইউনিয়নে বলেশে^র নদির মধ্যবর্তী স্থানে জেগে উঠে এ চর। পরে স্থানীয় ভুমিহীন জেলে ও বনজীবীরা নানা লড়াই সংগ্রাম করে সেখানে বসতি গড়েন। বর্তমানে সুন্দরবনের কোলঘেঁষা বলেশ^র নদের মাঝখানে ১২ একর জমিতে জুড়ে মাঝের চরে ১ হাজার ৪০০ মানুষের বসবাস। এদের জীবনধারণের উৎস বলেশ^র নদে মাছ শিকার,কৃষি আবাদ ও বননজীবী। বিচ্ছিন্ন এ চর জনপদের মানুষ বৈরী প্রকৃতির সাথে লড়াই করে যুগযুগ ধরে টিকে আছেন। বর্তমানে এ চরে ভোটারের সংখ্যা ৪৩০ জন। কিন্ত চরে কোন ভোট কেন্দ্র না থাকায় নদী পার হয়ে সাংরাইল খেয়াঘাটে নেমে আরও দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে বেতমোড় ইউনিয়নের উলুবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রায়োগ করে আসছেন। এতে প্রতিটি নির্বাচনে নারী ও বৃদ্ধ ভোটাররা দুর্ভোগে পড়েন।
৪০ বছর ধরে মাঝের চরে বসবাসরত জেলে আবদুস সালাম জেলে (৭৮) বলেন, প্রতিবার ভোট আইলে সব নেতারাই কয় চরে ভোট কেন্দ্র দিমু পরে আর দেয়না। আমাগো দুর্ভোগ দেহার মত কেউ নাই।
জেলে কবির বিশ^াস (৪০) বলেন ঘুর্ণিঝড় সিডরে আমাগো জানমালের ব্যাপক ক্ষতি অইছে। আমাগো বেরিবাধ ভেঙ্গে গেছে। তিন একর জমি বলেশ^রে বিলীন হয়ে গেছে। আমাগো স্বাস্থ্য কেন্দ্র নাই । আমরা নদির পানি খাই। বোড আইলে সবাই কয় চরে বোড কেন্দ্র অইবে। পরে আর কোউ খোঁজ লয়না।
চর বাসি বৃদ্ধা সোমত্ত বেগম (৬৫) বলেন, শরীরের যা অবস্থা এইবার ওই পাড়ে ভোট দিতে যাইতে পারমুনা। সরকার মোগো ভোট কেন্দ্র চরে দেয়না ক্যা?
এ ব্যাপারে বেতমোড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. শহীদুল ইসলাম বিচ্ছিন্ন চরে ভোট কেন্দ্রের অভাবে দুর্ভোগের কথা শিকার করে বলেন, মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন প্রায় ৪৩০ জন ভোটার প্রতিবছর এপারে ভোট কেন্দ্রে আসতে যেতে দুর্ভোাগ পোহায়। এমন অবস্থায় মাঝের চরে একটি ভোট কেন্দ্র করা হলে। বিচ্ছিন্ন চরবাসির কষ্ট দুর হত।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি.এম সরফরাজ বলেন, জনস্বার্থে বিচ্ছিন্ন চরে একটি ভোট কেন্দ্র প্রয়োজন। কিন্তু ওখানে ৪৩০ জন ভোটারের জন্য একটি ভোট স্থাপন জটিল বিষয়। তাছাড়া চরটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নিরাপত্তা জনিত কারণে ভোট কেন্দ্র করা হয়না। তবে জনস্বার্থে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...