ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - চাঁদনী রায় এর গুচ্ছ কাব্য

চাঁদনী রায় এর গুচ্ছ কাব্য

চয়নিকা
তুমি তো সেই চয়নিকা চৌধুরী।
যার ভালোবাসায় আকাশ বাতাস তরুলতা ও প্রেমী হয়ে উঠে ছিলো।
চয়নিকা চৌধুরী একদিন কোন উচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছিল
শুধু চিৎকার করে পৃথিবীর মানুষকে শুনাতে এই কথাটি যে সে ভালোবাসে কোন এক মানুষ রুপি প্রাচুর্য কে।
আর বলিতে লাগিল আমি ভালোবাসি প্রাচুর্য রায় কে।
প্রাচুর্য তুমি কি শুনতে পাচ্ছ আমি আজ ও তোমাকে ভালো বাসি।
কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলল, জানি তুমি আর কখনও আসবে না আমার সম্মুখে,।
আজ তুমি হয়তো রাতের আঁধারের সেই ধ্রুব তারা।
আমি কখনো তোমাকে স্পর্শ করতে পারবো না,
আমি কখনো অভিমান করতে পারবোনা,
কারণ তুমি অভিমানী হয়ে বন্ধু তারাদের নিয়ে লুকোচুরি খেলছো।
এমন কথা শোনাতেই চয়নিকা সামনে হাঁটতে থাকে।
শোকে কাতর ভালোবাসা হারিয়ে, সম্মুখে না ছিলো পা রাখার অস্তিত্ব-
আর সেই অস্তিত্ব বিহীন পা সমগ্র পৃথিবীকে হাতছানি দিয়ে উড়তে লাগিল।
আর উঁচু পাহাড় থেকে নিচু পাহাড়।
সুপ্রিয়া চয়নিকা চৌধুরীর সুন্দর দেহখানি টুকরো টুকরো হয়ে সমতলে ছড়িয়ে পড়লো।
দেহের খন্ড ছিলো কাটা পশুর মাংসের স্তুপের মত,
খানিক দূরে বসে থাকা তৃষ্ণার্ত কুকুর তাজা মাংসের খন্ড পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে তার স্বাদ গ্রহণ করিল।
আর সেই মাংসের খন্ড ছিলো প্রাচুর্যের ভালোবাসা স্বীকৃতি দেওয়া অংশ বিশেষ।
ষাট
ষাট তুমি হয়তো বড় বাবু ভাব।
ষাট তুমি হয়তো সোনালী ধুতির চরম জ্ঞানের সুউচ্চ পাহাড়।
ষাট তোমার চোখে সাদা আর কালো সবাই যেন নায়িকা সুচিত্রা।
ষাট ষাট ষাট ষাটের কোঠায় তাই তোমার গালে অবাঞ্চিত দাগ,চামড়া টা ও কেমন জানি ঢিলেঢালা হরতাল ভাব।
তবু ও তুমি ঘোষণা দিলে তুমি নব যৌবন,তোমার একের পর দুই, দুইয়ের পর তিন যদি থাকে সুনয়না লক্ষ্মী!
তবু ও তুমি খুঁজো কিছু অলক্ষ্মী।
তোমার মত বুঝি না
যখন সময় তোমার চল্লিশ তখন আমার সময় একুশ।
কেবল মাত্র হাতে কাঁচের চুরি দিয়ে তোমার শার্টের রং এ রং মিলাতে শিখেছি।
তখন তুমি মনের রং এ রাঙ্গানো দীর্ঘ মেয়াদি সুপ্রিয় প্রেমের পাঠক।
তুমি এমন পাঠক যে হারিয়ে যাওয়া স্রোত ও ফিরে আসে,
ওই মরা নদীর বালুচরে কৃষাণির বাহুডোরে।
আরো বিস্তৃত জড়িয়ে পূর্ণিমা চাঁদের আলোর মত ছনের চালের ফাঁকা থেকে ও আলো দিয়ে যাও‌।
এখন তুমি আমার

আজ শুনতে পেলাম এখন তুমি আমার
কাল আরো শুনতে পাবো আরো আগে
তুমি আমার ছিলে।
আজ তুমি বলেছিলে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
আমি একটু দিকবিদিক হতভম্ব হয়ে
বললাম তুমি কি আমাকে বলছো?
তুমি বললে হ‍্যা গো প্রিয় থেকে প্রিয়তমা
তোমাকে তোমাকে শুধু তোমাকে বলছি।
তোমার মুখে প্রিয়তমা শুনে আমি আরো
ভরা পূর্ণিমা।
আমার চোখে তুমি সুদর্শন পুরুষ
তুমি ঊনচল্লিশে এর নব যৌবনা।
তোমার চোখে শুধু শুধু ভালোবাসা
আমি দেখেছি তোমার উদ্দাম সাহসী নৃত্য,আর সুর তোলা অকেতু ভয়।
আজ ও তোমায় স্পর্শ পাই নি পেয়েছি তোমার গন্ধ।
তুমি সাদামাটা তবে চোখের আড়ালে
কাজল ও রয়েছে বটে।
ভালোবাসি তোমায় ভালোবাসি তা ও বটে।
তোমার কন্ঠ উচ্চ সুরেলা তাতে গান
তুলো ঐ গোপন বিহঙ্গে।
আচ্ছা সুরের সাথী তুমি বললে না
কত ভালোবাসো কত আমার আছো
কত আমার থাকবে?
আমার বড্ড ভয় কখন তুমি হারিয়ে যাবে!
বলো না তাহলে প্রতিদিন সাঝ সকালে
কার জন্য সাজবো,
কার জন্য নিশি রাতে তারা গুনবো।
তুমি যত ই হও ঊনচল্লিশ পঁয়তাল্লিশ।
তবু তুমি আমার দুইয়ের পরে এক
ঐ যে আমার একুশে ঊনচল্লিশ।
তোমার হাতে লিখো একুশের ভরা
যৌবন লেখা, তোমার রক্তে তরুলতার
ছোঁয়া, সকল বাধা তোমার পায়ের
তলে নিঃসন্দেহে নিস্তেজ।
বড্ড দেরী হয়ে দেখা হলো এখন
তোমার পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার একটুও
সময় নেই তবু ও তুমি উঠছো তো উঠছো।
আমার রং নীলে তুমি সাজছো তো সাজছো
আর আমাকে বলছো আমি তোমার
রঙে আজ রঙিন।
এখানে ই স্বর্গ সুখ এখানে ই তোমার আমার ভালবাসা ভালবাসা ভালবাসা।

আমি আর তুমি

ভর দুপুরে এ যেন ভরা পূর্ণিমার চাঁদ!
আমি জানি,জানি,জানি গো আমার
শশী ঠাকুর,ভর দুপুরে কি কখনো
পূর্ণিমা চাঁদ উঠে?না,গো না ও বুঝি
তোমার মনের পূর্ণিমা চাঁদ উঠেছে।
তুমি হয়তো ভালোবাসার স্পর্শে
কাতর হয়ে অমন করে অবাস্তব কে
বাস্তব করে তুলতে চাচ্ছ।
তুমি ভালোবাসা পেয়ে উৎফুল্ল
কন্ঠে দিকবেদিক।
তোমার সাথে এখন আর কাজন আছে
তুমি এখন অষ্টাদশী সুনয়না প্রেমিকার
প্রেমিক‌।
তুমি না খেলেও আজ তোমার পেট ভরা।
আজ তুমি নায়িকার কাছে উপস্থাপন
করতে তুমি সুদর্শন নায়ক হতে চাচ্ছ।
আরো কত কি।
আমি তো জানতাম কখনো গান গাইতে
পারতে না,আজ তো দেখছি প্রেমিকাকে
শোনাতে তুমি গানের শিল্পী।
মস্ত বড় সুর, তাল, বিহীন কন্ঠ তে আজ
বিখ‍্যাত শিল্পীদের গান ধরছো।
আর কত প্রস্তুত করবে সখা সখী কে
ধরে রাখতে।
প্রতিদিন সকালে রায় বাড়ি সামনে যেতে
কোন না কোন অযুহাতে।
কারণ সপ্তদশী ছিলো ঐ বাড়ির রুপে গুনে
যুবতী কন‍্যা।
আর সপ্তদশী ও দুনয়নে তাকিয়ে তাকিয়ে
এদিক ওদিক দেখে হতাশ
হতো,আর বলতো মনে মনে আজ কেন
এল না আজ কি দেখা পাবো না!
তাহলে তার জন্য আজ যে সেজেছি
চুলে লম্বা বেনী,ওষ্ঠ করিয়া লালে লাল।
তা কি সে দেখতে পাবে না।
হে সৃষ্টি কর্তা একবার তার সাথে দেখা
করিয়ে দাও,এ যেন নাড়ি নিস্তেজ হচ্ছে।
হতাশ হয়ে চোখের জলে কপোল ভিজিয়ে
খানিক বাদে দেখতে পায়
সে এসেছে।
ঠিক তখনই হয়তো নিস্তেজ হওয়া নাড়িটা
সচল হলো।
খানিক বাদে সামনে গিয়ে বললো
এত কেন দেরি হলো কখন তোমার
আসার কথা।
আজ দেখো আমি সেজেছি কেমন
লাগছে, বলো বলো।
একটু হেসে বললো তুমি যেমনি থাকো
না কে,আমি ভালোবাসি ভালোবাসি
ভালোবাসি।
তুমি আমার আমার আর আমি তোমার।

আমি তোমার

আমি কি তোমার?
আমি তোমারি!
আমি তোমার।
শুধু নয়কো তুমি আমার।
কত কাল কাটিয়ে দিলে
কত সুসময় কে অসময়
করে দিলে বলো???
তোমার না বলা পথ যত দূর
আমার হ‍্যা বলা পথ যত সুমধূর।
যুগের পর যুগ,দুই যুগ বলি দিলাম
তোমার প্রতিক্ষায়।
এ চাওয়া আমার,নয়কো তোমার
স্পর্শ,নয়কো সোহাগ,
শুধু তোমার অন্তঃস্থলের গভীর
অনুভূতি।
তুমি মিশ্রিত আমার রক্তে,
নয়কো কোন রক্তিম লগ্নে।
তুমি হয়তো না না না শুনাতে
শুনাতে একদিন হয়তো
হ‍্যা শুনিয়ে দিবে।
আমি সেই প্রতিক্ষায়
প্রতিক্ষিত মায়াবিনী।
আমি তোমার হরিনী।
কত দিন হারিয়ে দিলে
আমার জীবনের তুমি বিহীন।
যেদিন তুমি ময় হবো সেদিন
হয়তো দিন ই হারিয়ে দিবে তোমায়।
আমি তো অলক্ষুনে প্রতিক্ষীত
কাঙালীনি।
দাও দাও দাও আরো উড়িয়ে দাও
আমার ভালোবাসা।
ফুরিয়ে দাও ভাসিয়ে দাও
অবিরাম সমুদ্রের ঢেউয়ে।
আমি সেই সমুদ্র কে ছলনায়
উপেক্ষা করে আবার ফিরে
আসিবো বটে!
ভেবো না চিরতরে চিতার আগুনে
দগ্ধ হবো,যে তুমি হবে সেই দগ্ধ
আগুনের দর্শনার্থী।
মায়া মায়া মায়া আজ শুধু
মায়া আমার,
আর তোমার মায়া কাটানোর
ছায়া।
আজ আমার মনে আমিই
গোলাপ ফুটিয়ে দিলাম।
আর তুমি দিলে নষ্ট হওয়া
গোলাপের দূরগন্ধ।
আজ না হয় তোমার ভরা পূর্ণিমা
আর আমি তোমার না বলা পূর্ণলক্ষী।
আমি ভরা যৌবনা উদাসিনী।
ঐ পাহাড়ের সম তম তুমি আমার
ততশত বার হাজার বার
সেই ভালোবাসা।
যেখানে শুধু হাহাকার ময় আত্ম
পিপাসা।
আমি মিটাবো না সে
গভীর পিপাসা,মিটাবো সেথা
তত বার তব পিপাসা যতবার
তুমি তুমি তুমি ময় হবে সেথা।
তবু ও আমি তোমার।

ভালোবাসার নিমন্ত্রণ

কে যেন আমাকে দিয়ে গেল
নিমন্ত্রণ ভালোবাসার!
কিন্তু আমি তো রবী ঠাকুরের
গীতাঞ্জলি নই,
শরৎ বাবুর বিজয়া নই,
নিওলারদো-দ‍্যা ভিঞ্চির
অপূর্ব সৃষ্টি মোনালিসার
মত কারুর নই।
কবি নজরুলের বিষের
বাঁশী নই,
এ যে আমি
আমি তো নাটরের বনলতা
সেনের গভীর চুলের অরন‍্য
নই,
পার্বতী দেবদাসের ভালোবাসার
স্বাক্ষী ও নই।
মমতাজের ভালোবাসার উপহার
শ্বেত পাথরের তাজমহলের এক
টুকরো পাথর ও নই।
আমি তো মাইকেল মধুসূদন দত্তের
সনেট ও নই।
আমি তো উদাস দুপুরের মাতাল
হাওয়া নই।
এ যে আমি শুধু আমি
শুধু আমি শুধু আমি ।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...