ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - বামনায় স্বেচ্ছাশ্রমে স্মৃতিসৌধ পরিচ্ছন্ন করলো ছাত্রলীগ

বামনায় স্বেচ্ছাশ্রমে স্মৃতিসৌধ পরিচ্ছন্ন করলো ছাত্রলীগ

মনোতোষ হাওলাদার, বামনা (বরগুনা) 🔹

মানুষের অসচেতনতা ও প্রশাসনের উদাসীনতায় শহরের প্রাণকেন্দ্রের স্মৃতিসৌধটির পরিবেশ বিঘিœত হয়। স্মৃতিসৌধের চার পাশ শহরের বর্জ্য-ময়লার ভাগারে পরিনত হয়। ফলে এর পরিবেশ ও পবিত্রতা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমন অবব্যবস্থাপনায় পরিবেশ বিনষ্ট স্মৃতিসৌধটির ছবি সামাজিক সাইটে ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষের মনে স্মৃতিসৌধের পবিত্রতার এমন বেহাল দশায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
স্মৃতিসৌধটির পবিত্রতা ফিরিয়ে আনতে ও নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে স্মৃতিসৌধ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ নেয়।
বরগুনার বামনা উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র গোলচত্ত্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মরনে গড়ে তোলা স্মৃতিসৌধটি ছাত্রলীগ কর্মীরা মিলে সামাজিক উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ স্বেচ্ছাশ্রমে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে। এসময় বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা তরুণদের এমন সামাজিক উদ্যোগে সংহতি জানায়।
কর্মসূচী শেষে স্মৃতিসৌধ চত্ত্বরে এর পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক সচেতনতামুলক একটি বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়। এছারা সৌধটির চারপাশে ফুলের চারা রোপন করা হয়।
শেষে স্মৃতিসৌধের পরিবেশ সুরক্ষায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা, বামনা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক নাসির মোল্লা, ছাত্রলীগ সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়া গোলদার, সাধারণ সম্পাদক আল-আমীন হোসেন জনি, কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা প্রমূখ। সভায় স্মৃতিসৌধের পরিবেশ রক্ষায় শহরের নাগরিকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানানো হয়।
স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, ১৯৮৮ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মানজুরুর রব মুতার্যা আহসান মামুন সহ তৎকালীন ইউএনও, উপজেলা প্রকৌশলী, ম্যাজিষ্ট্রেট মিলে শহরের প্রাণ কেন্দের গোলচত্ত্বরে জেলা পরিষদের একখন্ড পতিত জমিতে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার নান্দনিক স্মৃতিসৌধটি নির্মান করা হয়। সেই থেকে উপজেলা প্রশাসন এই স্মৃতিসৌধটি দেখভাল করে আসছে। সকল সভা সমাবেশ নাগরিক দাবী ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এই স্মৃতিসৌধের বেদীতে অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি শহরের কিছু অসচেতন মানুষ স্মৃতিসৌধ চত্ত্বরে বর্জ্য আবর্জনা ফেলে পরিবেশ বিনষ্ট করে। এছারা স্মৃতিসৌধ চত্তরের সামনে রিকশা ও টেম্পু স্ট্যান্ড গড়ে তোলায় স্মৃতিসৌধটির পরিবেশ আরো বিনষ্ট হয়। সামাজিক সাইট ফেসবুকে পরিবেশ বিপন্ন স্মৃতিসৌধটির ছবি ছড়িয়ে পরলে মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ছাত্রলীগ সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে স্মৃতিসৌধটি চারপাশের ময়লার ভাগার অপসারণের উদ্যোগ নেয়। এসময় নাগরিক সচেতনতা একটি বিলবোর্ড ও কিছু ফুলের চারা রোপন করে উদ্যোগক্তা তরুণ দল।
এবিষয়ে বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়া গোলদার বলেন, শহীদদের স্মরণে গড়ে ওঠা এই স্মৃতিসৌধ আমাদের গর্বের প্রতীক। এর পবিত্রতা সুরক্ষার দায়িত্ব স্বাধীনতাকামী সকল নাগরিকের। ছাত্রলীগ কর্মীরাও এ সামাজিক কাজের অংশীদার।
স্মৃাতসৌধটির নকশাকার তৎকালীণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মানজুরুর রব মৃতর্যা আহসান জানান, এটি একটি শুভ উদ্যোগ, এই উদ্যোগ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। শহীদ বেদীর পবিত্রতা রক্ষায় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ যে মহৎ উদ্যোগ গ্রহন করেছে এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।
বামনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার বলেন, সামাজিক সাইটে স্মৃতিসৌধটির আশেপাশে ময়লা আবর্জনা ফেলার বিষয়ে জানতে পেরেছি। উপজেলা প্রশাসন স্মৃতিসৌধটির পবিত্রতা রক্ষায় উদ্যোগ নিবে। তবে ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাশ্রমে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার যে মহতী উদ্যোগ নিয়েছে এজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু বলেন, বামনা ছাত্রলীগের তরুণ নেতাদের এই স্বেচ্ছাশ্রমে স্মৃতিসৌধ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার উদ্যোগ এলাকায় বেশ প্রশংসা পেয়েছে। তাদের এই উদ্যোগ অব্যহত থাকলে দেশ একদিন প্রকৃত সোনার বাংলায় পরিতন হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...