ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - শিক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশে রাজপথে প্রথম মিছিল বের করেছিল মঠবাড়িয়ার শিক্ষক সমাজ

শিক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশে রাজপথে প্রথম মিছিল বের করেছিল মঠবাড়িয়ার শিক্ষক সমাজ

 

দেবদাস মজুমদার, ঢাকা থেকে ফিরে >>

দেশের শিক্ষা ব্যকস্থা জাতীয় করণসহ ১১ দফা দাবিতে শিক্ষক কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির ডাকে ঢাকায় মহাসমাবেশে গতকাল বুধবার( ১৪ মার্চ) ঢাকার রাজপথে প্রথম মিছিল বের করেছিল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার শিক্ষক বৃন্দ। এর আগে মঠবাড়িয়ার সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষিা ও কর্মচারীরা মঠবাড়িয়ার তুষখালী লঞ্চঘাট থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূবালী-৭ লঞ্চযোগে ঢাকার উদ্যেশে যাত্রা করেন।

জানাগেছে, রাতে লঞ্চে বসে শিক্ষকরা জানতে পারেন ঢাকায় সমাবেশ পন্ড করতে কয়েকজন কেন্দ্রীয় শিক্ষক নেতাকে আটক করা হয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশটি বাতিল করে প্রেস ক্লাবের সামনে এঘন্টার অনুমতি দিয়েছে সরকার। রাতভর আন্দোলনরত শিক্ষকরা রাতভর উৎকণ্ঠা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকায় সদরঘাটে নামেন। সিদ্ধান্ত ছিল সদরঘাটের জুবিলী স্কুলে মঠবাড়িয়ার শিক্ষকরা অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি বুঝে প্রেস ক্লাব অভিমুখে যাত্রা করবেন। কিন্তু সদরঘাটে নেমেই আন্দোলনরত শিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শ্লোগান ওঠে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় শিক্ষা বৈষম্যের ঠাঁই নাই। আর কোন দাবি নাই, শিক্ষা জাতীয়করণ চাই।

মঠবাড়িয়া শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন খান, প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান,অধ্যক্ষ আজিম-উল-হক,অধ্যক্ষ শাহ আলম আল মারুফ, প্রধান শিক্ষক সাবেক আব্দুল কুদ্দুস,আব্দুল লতিফ সিকদার, আবদুর রাসেদ, মো.নাসির উদ্দীন, প্রভাষক মোতালেব হোসেনের নেতৃত্বে মঠবাড়িয়ার শিক্ষকরা তুমুল শ্লোগানে মুখরিত করে ঢাকার রাজপথ।

তখনও ঢাকার রাজপথে ঘুম ভাঙা শহরবাসির পদচারণা ঘটেনি। শিক্ষকরা মাথায় হলুদ টুপি পড়ে মিছিলের শ্লোগানে সদরঘাট মুখরিত করে প্রেস ক্লাব অভিমুখে রওয়ানা দেন। নয়টায় সমাবেশে স্থলে উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও মঠবাড়িয়ার শিক্ষকরা সমাবেশস্থলে পৌঁছেন সকাল সাতটায়। তখন ‌পর্যন্ত গোটা দেশের শিক্ষকরা কেউ এসে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হননি। মঠবাড়িয়ার শিক্ষকরা পুলিশের ঘোর আপত্তির বিরদ্ধে প্রেস ক্লাব সড়কে মিছিল করে সড়কজুড়ে অবস্থান নেন। এরপর আস্তে আস্তে সারাদেশের শিক্ষকরা সমাবেশ স্থলে সমবেত হন। দুই লক্ষাধিক শিক্ষক শিক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে সেখানে অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আসেন কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা। তারা আন্দোলনরত শিক্ষকদের কোন আশার বাণী শোনাতে পারেননি। এতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা হতাশ হয়ে পড়েন।

দুপুর ১২টার দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শিক্ষকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাপ দিতে থাকেন। পুলিশের মারমুখি ঠেলা ঠেলিতে শিক্ষকরা আর সড়কে বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি। ফলে অবস্থান মহাসমাবেশ আর ধর্মঘট পন্ড হয়ে যায়।

শিক্ষকদের মহাসমাবেশে মঠবাড়িয়ার শিক্ষকদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে সমাবেশস্থলে উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান, নূরজাহান এন্ড খলিলুর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা মো. খলিলুর রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা; রুস্তুম আলী ফরাজির সহধর্মীনি খাদিজা আক্তার খুশবু, মঠবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র রফিউদ্দীন আহমেদ ফেরদৌস। উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা মো. এমাদুল হক খান, আওয়ামীলীগ নেতা ও শিক্ষানুরাগী আরিফ-উল-হক আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি জানাতে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন খান আজকের মঠবাড়িয়াকে বলেন, মঠবাড়িয়ার শিক্ষকরাই মহাসমাবেশে ঢাকার রাজপথে মিছিল করে । এর আগে সমাবেশ বানচালে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হলে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হওয়া নিয়ে ঝুঁকি ছিল। তা উপেক্ষা করে আমরা মিছিল করেছি। পরে গোটা দেশের শিক্ষকরাও মিছিল করে সমাবেশে আসেন। দুই লক্ষাধিক শিক্ষকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিরুত্তাপ ভূমিকা নিয়ে সংগ্রামরত শিক্ষকরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। শান্তি পূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের বাঁধাও প্রশ্নবিদ্ধ। তাই বঞ্চিত শিক্ষকদের কেউ আশার বাণীও শোনাতে আসেনি। এটা দুর্ভাগ্য জনক।

তিনি আরও জানান, সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠকে বসেন। সেখানে নতুন করে সিদ্ধান্ত হয় শিক্ষা জাতয়ি করণের আন্দোলন থেকে দেশের গোটা শিক্ষক সমাজ পিছু হটবে না। তাই লাগাতার ক্লাস বর্জণের কর্মসূচি বহাল ধাকবে।

 

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...