ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - নতুন বছরে শান্তি ফিরে আসুক সম্ভাবনার মঠবাড়িয়ায়

নতুন বছরে শান্তি ফিরে আসুক সম্ভাবনার মঠবাড়িয়ায়

মঠবাড়িয়া আপনার আমার সকলের । দেখতে দেখতে বয়সতো আর কম হয়নি । সেই পাকিস্তান আমলে বাবার চাকুরীর সুবাদে প্রায় সকল জেলা ঘুরার সৌভাগ্য হয়েছে আমার! স্বাধীনতার পর নিজের চাকুরী জিবনেও প্রায় সকল উপজেলাই ঘোরার সৌভাগ্যও হয়েছে। কিন্তু মঠবাড়িয়ার মত এত সুন্দর এলাকা খুব একটা চোখে পরেনি! মঠবাড়িয়ার মানুষ শান্তিপ্রিয় । পাকিস্তান আমলে সুদূর রাজশাহী/চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মা বাবার সাথে দুই দিন দুই রাত জার্নি করে মঠবাড়িয়া আসতাম মাটির টানে, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল ছিলনা । তথাপি কোন ক্লান্তি ছিলনা । বাবাকে দেখেছি মাটির মায়ায় শত কষ্টের পরেও দাদাকে এসে সালাম করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেন ।

আহা ! সে কি এক স্বপ্নে ঘেরা আঁতুর ঘর আমার মঠবাড়িয়া! তখন না বুঝলেও পরে বুঝেছি বাবা শত কষ্টকে আলিঙ্গন করেও কেন আসতেন কিসের টানে! স্বাধীনতার পর দেশ ছিল বিপর্যয়ের মধ্যে! অভাব ছিল মানুষের! শত কষ্টের মাঝেও হাসতে দেখেছি, দেখিনি কাউকে কাঁদতে! নিজের ছাত্র জীবন কর্মজীবনেও মাটির টানে মায়াবী মঠবাড়িয়ার টানে বছরে দু’একবার কখনো বা তার চেয়েও বেশি বার চলে আসতাম বাবার দেখান পথ ধরে। ৮০/৯০ দশক থেকে এই সেদিন পর্যন্তও মঠবাড়িয়ায় সুখের কমতি ছিল বলে মনে হয়না! রাজনীতিতে দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শ্রদ্ধেয় সওগাতুল আলম সগির, শ্রদ্ধেয় জাতীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, শ্রদ্ধেয় এডভোকেট সামসুল হক সাহেব সহ আরো অনেককে একবার জাতীয় নেতা মহিউদ্দিন আহম্মদকে জয়ের মালা পরাতে গেলে বলেছিলেন আমাকে নয় মালা নূর মোহাম্মদ আকনকে পড়াও! তার কারনেই আজ আমি এমপি । আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে কখনো কার্পণ্যতা দেখিনি । অনুসারীদের কখনো বেয়াদবি করতেও দেখিনি । খারাপ ভাষা প্রয়োগতো দূরের কথা মুরুব্বী দেখলে ভিন্ন দল বা মতের হওয়া সত্বেও সম্মান করতে কোন কৃপণতা কেউ করেছে বলে শুনিনি!

মঠবাড়ীয়ার বহু মানুষ দেশ বিদেশে অবস্থান করলেও মাটির মায়ায় মাটির টানে আতুর ঘরে এসে থাকেন! সেই প্রিয় মঠবাড়িয়ায় প্রতিনিয়ত কোন না কোন অঘটন ঘটেই চলছে! হতাহত বেড়েই চলছে! হেন কর্ম নাই হত্যা,ধর্ষণ, মাদক, জমি দখল, খাল দখল আর দলীয় কোন্দলও বাকি নেই! কস্মিনকালে যা দেখিনি আজ তা দেখতে হচ্ছে!

মানুষের ক্ষমতা টাকা এতো আল্লাহ দেন আবার তা তিনিই যখন খুশী ছিনিয়ে নেন! একজনকে অসম্মান করলে প্রস্তুত থাকতে হয়ে নিজেকেও অপমান সহ্য করার জন্য! ইটকেলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়! মানুষের কত সম্মান প্রতিপত্তির দরকার, টাকাই বা কত লাগে! কফিনের কি পকেট আছে ?

ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়না এটা বড়ই পরিতাপের বিষয়! কত দাপোটওয়ালা লোক দেখেছি! শেষ বয়সে তাদের কষ্টও দেখেছি! হাটতে চলতে পারেনা লুঙ্গীটা পর্যন্ত পরিয়ে দিতে হয়েছে! কার সাথে মারামারি, আমরাতো সকলেই কোন না কোন ভাবে একে অপরের আত্মীয়! কারো বড় আকারের ক্ষতি হলে আমরাইতো কাঁদি! কোন্দলে যে ছেলেটি মারা যায় তার জন্য তার পরিবার এবং আমরা সবাই কি কাঁদিনা এখনো ?

মঠবাড়িয়ার সকল দলের নেতৃবৃন্দের নিকট আবেদন মঠবাড়িয়াবাসীর স্বার্থে আগামী প্রজন্মের স্বার্থে দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ আসুন আমরা এক হয়ে কাজ করি! সুন্দর একটা মঠবাড়িয়া বিনির্মাণে কাজ করি । নানাবিধ সমস্যায় মঠবাড়িয়া টইটুম্বুর! সেগুলো থেকে কি ভাবে পরিত্রান পাওয়া যায় সে লক্ষে কাজ করি! রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকবেই সেটি রাজনৈতিক ভাবেই মোকাবেলা করা উচিৎ । জোর করে মানুষের ভালবাসা আদায় করা যায়না । আদর্শিক রাজনীতির মৃত্যু নেই! মৃত্যুর পরেও যাতে মানুষ ভালবেসে দু’ফোটা চোঁখের জল ফেলে আল্লাহর কাছে আখেরাতে মুক্তির জন্য দোয়া করে সেই কাজ করা উচিৎ!

আসুন ২০১৭ র গ্লাণি মুছে ২০১৮ কে স্বাগত জানাই এবং শপথ নেই আগামীর পথ চলা হোক মসৃণ । মাদককে না বলি । একে অন্যকে সম্মান করি । আগামী প্রজন্মকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলি । নতুন বছরে সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, শান্তি ফিরে আসুক সম্ভাবনার মঠবাড়িয়ায়।

লেখক ঃ মো. গোলাম মোস্তফা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মাছরাঙা টেলিভিশন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...