ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - ১৯৮৬ সালের সিদ্ধান্ত ২০১৭ সালেও ফাইলবন্দি!!🇧🇩️

১৯৮৬ সালের সিদ্ধান্ত ২০১৭ সালেও ফাইলবন্দি!!🇧🇩️

রাসেল সবুজ ➡️

ছোটো বেলা থেকেই শুনে আসছি আমাদের স্কুল মাঠটির নাম হলো- “#মঠবাড়িয়া_শহীদ_মোস্তফা_খেলার_মাঠ।” কিন্তু কে এই মোস্তফা? কেন তার নামে মাঠের নামকরন? তাঁর বাড়ি কোথায়? তিনি দেখতে কেমন? আমরা কিছুই জানিনা।যেহেতু নামের সাথে “শহীদ” জুড়ে দেওয়া আছে তাই বুঝতে পারি তিনি নিশ্চই ৭১ সালে মারা গিয়ে থাকবেন। কিন্তু মঠবাড়িয়ার তরুণদের মধ্যে অনেকেই তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না।যদি মাঠের এক পাশে তার একটি প্রতিকৃতি (ছবি) থাকতো এবং সেখানে তার সম্পর্কে ডিটেইলস তথ্য দেওয়া থাকতো- তাহলে হয়তো সবাই তার সম্পর্কে জানতে পারতাম।এছাড়াও আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি মঠবাড়িয়ায় শহীদ নূর হোসেনের নামে একটা ম্যুরাল নির্মাণের পাশাপাশি শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠ থেকে সাপলেজা বাজার পর্যন্ত সড়কটির নাম (নূর হোসেন এর গ্রামের বাড়ি) #শহীদ_নূর_হোসেন_সড়ক নামে নামকরন করার। এগুলো করা কি খুবই কঠিন কাজ?

শুধু এটাই নয়, আরো দুঃখ জনক খবর হলো (কালের কন্ঠ- ২০১০ সালের রিপোর্ট অনুয়ায়ি) মঠবাড়িয়ায় ২২ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে উপজেলার সড়ক, বাজার, লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের বিষয়টি বহু বছর ধরে ফাইলবন্দি রয়েছে।ফলে নামকরণকৃত এসব সড়ক ও স্থাপনার স্মৃতিফলকও উন্মোচন করা হয়নি। ১৯৮৬ সালের ২৪ নভেম্বর মঠবাড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে স্থানীয় সুশীল সমাজের সমন্বয়ে একটি সভা হয়। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযুক্ত সড়ক ও পৌর শহরের সড়ক, বাজার ও লঞ্চঘাট স্থানীয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।বিষয়টি জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ফলক উন্মোচনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরপর এতটা বছর কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ওই সভায় মঠবাড়িয়া শহরের কাপুড়িয়াপট্টি শহীদ রাজ্জাক বিশ্বাস সড়ক, বহেরাতলা থেকে তুষখালী বাজার পর্যন্ত শহীদ মোতালেব সড়ক, পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দরকে শহীদ জিয়াউজ্জামান বাজার, কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশনের খেলার মাঠ শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠ, মঠবাড়িয়া বাজারের দ্বিতীয় প্রধান সড়ক শহীদ গণপতি সড়ক, পোস্ট অফিস থেকে সরকারি কলেজ পর্যন্ত শহীদ আনোয়ারুল কাদির সড়ক, বহেরাতলা থেকে সাফা বন্দর পর্যন্ত শহীদ আব্দুল মালেক সড়ক, পৌর শহরের প্রধান সড়ক শহীদ আবু সড়ক, তুষখালী লঞ্চঘাটের নাম শহীদ সওগাতুল আলম সগীর লঞ্চঘাট, সাফা বাজার থেকে ঝাউতলা পর্যন্ত শহীদ সালেহ সড়ক, মঠবাড়িয়া বাজার থেকে বহেরাতলা পর্যন্ত শহীদ মাখন দাস সড়ক, মিরুখালী বাজারের দ্বিতীয় প্রধান রাস্তা শহীদ বীরেন সড়ক, হারজী থেকে মিরুখালী পর্যন্ত শহীদ হাকিম সড়ক, দক্ষিণ বন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত শহীদ মোশারেফ হোসেন সড়ক, হাসপাতাল থেকে বড়মাছুয়া বাজার পর্যন্ত শহীদ আসমত আলী সড়ক, সাপলেজা বাজার থেকে নলী পর্যন্ত শহীদ মোজাম্মেল সড়ক, মঠবাড়িয়া থেকে বেতমোড় বাজার পর্যন্ত শহীদ আবুল হোসেন সড়ক, সাপলেজা বাজার থেকে সোনাখালী বাজার পর্যন্ত শহীদ সালাম সড়ক, সাপলেজা থেকে গোলবুনিয়া পর্যন্ত শহীদ হাতেম আলী সড়ক এবং গুলিসাখালী থেকে বান্ধবপাড়া পর্যন্ত শহীদ মানিক সড়ক নামকরণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া আরো আটজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাজেম খাঁ, রুহুল আমিন খন্দকার, নারায়ণ চন্দ্র, হাবিবুর রহমান, ললিত কুমার দাস, নগেন্দ্রনাথ গয়ালি, ধীরেন্দ্রনাথ বাড়ইর নামে সংশ্লিষ্ট এলাকার সড়ক ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়।কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।এমনকি নামকরনের ক্ষেত্রে যদি কোনো নতুন নাম যুক্ত করতে হয় সেটাও নিশ্চয়ই সবার সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাধবে কে?

সুনীলের সেই কবিতার মত বলতে ইচ্ছে করছে- ৩০ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি।

>> রাসেল সবুজ , নির্বাহী সম্পাদক, আজকের মঠবাড়িয়া ও পাঠাগার আন্দোলনের উদ্যোক্তা।

Leave a Reply

x

Check Also

পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক আলমগীর হোসেন আটক

পিরোজপুর প্রতিনিধি : বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনকে আটক করেছে ...