ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - চরখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের ইতিহাস

চরখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের ইতিহাস

নূর হোসাইন মোল্লা >
১৮৫৯ সালের ২৮ অক্টোবর পিরোজপুর মহকুমার শুভ উদ্বোধন হয়। একই সাথে কচা নদীর দক্ষিণে বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর মধ্যবর্তী ভূ-ভাগে মঠবাড়িয়া থানা গঠিত হয়। এর অস্থায়ী কার্যালয় করা হয় সোনাখালীতে। ১৮৬৩ সালে মঠবাড়িয়ায় স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করা হয়।
১৮৮৭ সালে বাকেরগঞ্জ (বর্তমানে বরিশাল) জেলা বোর্ড গঠিত হয়। ১৮৮৭ সালের পর বরিশাল জেলা বোর্ড পিরোজপুর-পাড়েরহাট পর্যন্ত কাচা রাস্তা নির্মান করে। চরখালী-তুষখালী- মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা-কাচা রাস্তা নির্মানের কাজ কখন শুরু হয় তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে অনুমান করা হয় ১৯২০ সালের পর এর নির্মান কাজ শুরু হয় এবং ১৯৪০ সালের মধ্যে শেষ হয়। এ সময়ে পিরোজপুর আসন থেকে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন যথাক্রমে জাতীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের পিতা মুসলিম লীগের পার্থী জাহার উদ্দিন আহমেদ (১৯২০-১৯২৬), কৃষক প্রজা পার্টি প্রার্থী চাখারের সৈয়দ মোহাম্মদ আফজাল (১৯২৬-২৯), শেরে বাংলা এ,কে, ফজলুল হক (১৯২৯-৩৪) এবং নেছারাবাদের খান বাহাদুর হাসেম আলী খান (১৯৩৪-৩৬)। উল্লেখ্য, এ সময়ে বরিশাল জেলায় ৩টি মুসলিম এবং ২টি হিন্দু আসন ছিল। ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের নির্বাচনে বরিশাল জেলায় ৯টি মুসলিম, ২টি তফসিলী সম্প্রদায় এবং একটি হিন্দু আসন ছিল। মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া, বামনা ও পাথরঘাটা থানা নিয়ে পিরোজপুর দক্ষিণ আসন গঠিত ছিল। ১৯৩৭ সালের জানুয়ারি মাসের নির্বাচনে জাতীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের পিতা মুসলিম লীগের প্রার্থী আজাহার উদ্দিন আহমেদকে পরাজিত করেন কৃষক প্রজা পার্টির প্রার্থী খান সাহেব হাতেম আলী জমাদ্দার। শেরে বাংলা এ,কে, ফজলুল হক ১৯৩৭-৪৩ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। চরখালী-ঝাউতলা-তুষখালী-মঠবাড়িয়া পর্যন্ত রাস্তার মাটির কাজ ১৯৩৬ সালের মধ্যেই শেষ হয়। দীর্ঘ সময়ের কারণ ছিল জেলা বোর্ড কর্তৃক পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ না করা। মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা রাস্তার মাটির কাজ শুরু হয় ১৯৩৭ সালে এবং শেষ হয় ১৯৪০ সালের মধ্যে। এ সময়ে জেলা বোর্ড পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ করার কারণ ছিল শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হক ছিলেন প্রধান মন্ত্রী, খান বাহাদুর হাসেম আলী খান জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং খান সাহেব হাতেম আলী জমাদ্দার ছিলেন বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য একই সাথে জেলা বোর্ড সদস্য। তিনি মঠবাড়িয়া-গুলিসাখালী-মানিকখালী-মুন্সীর হাট হয়ে পাথরঘাটা রাস্তা নির্মান না করে মঠবাড়িয়া-সাপলেজা-চরদুয়ানী-হাতেমপুর হয়ে পাঘরঘাটা পর্যন্ত রাস্তা নির্মান করেন। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের কারণে ১৯৪২ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৪৬ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে খান সাহেব হাতেম আলী জমাদ্দার মুসলিম লীগের প্রার্থী এ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিনকে (অবসরপ্রাপ্ত মেজর জিয়াউদ্দিনের পিতা) পরাজিত করেন। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের সদস্য হিসেবে খান সাহেব হাতেম আলী ১৯৫৪ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত বহাল ছিলেন।
(চলবে)

> লেখকঃ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সদস্য সচিব, মঠবাড়িয়া উপজেলা নাগরিক কমিটি।

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...