ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - পথে পথে বিপন্ন শিশু❗

পথে পথে বিপন্ন শিশু❗

সাইফুল বাতেন টিটো 🔘
পথের শিশুটি কোন রোহিঙ্গা শিশু নয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে জন্ম নেয়া আপনার মতো আমার মতো একজন নাগরিকও। এরকম হাজার হাজার শিশু আপনি দেখতে পাবেন ফুটপাথে, ওভার ব্রিজে, মসজিদের সামনে, রেলস্টেশনে, বাসস্টান্ডে।

এমন শিশু একা ভিক্ষা করে না। ও আসলে ভিক্ষুকও না। ও ভিক্ষার একটি ‘টুল’ (বসার টুল না, উপকরণ) মাত্র। হতে পারে ও ভিক্ষুক সরদারদের ডেরায় থাকে কিংবা কোন মা ওকে রোজ হিসেবে ভাড়া দেয়।

সুস্থ হৃষ্টপুষ্ট শিশুর ভাড়া কম। কারণ তাতে পথচারীর দরদ উথলে ওঠে কম, ভিক্ষা মেলে না। যে শিশু যত অসুস্থ যত বিকলাঙ্গ- ভিক্ষার বাজারে তার দাম তত বেশী। এই আজন্ম ভিক্ষুক শিশুটি যদি বেশী চঞ্চল হয় তবে তাকে অসুস্থ করার নানা কায়দা-কৌশল রয়েছে। সুস্থতা-অসুস্থতা, সৌন্দর্য-কুৎসিত ভেদে ভাড়ার তারতম্য হয়। কিন্তু তাতে শিশুটির জীবন যাপনে কোন পরিবর্তন আসে না।

এমন যে চলে তা সবাই জানে। আমি জানি, আপনি জানেন, পাড়ার দোকানদার জানে, সাংবাদিকেরা জানে, মানবাধিকার কর্মী জানে, পুলিশ জানে, আইনজীবি জানে, জজ সাহেব জানে, মন্ত্রী মহোদয় জানেন- এমনকি আমার ধারণা প্রেসিডেন্ট-প্রাইম মিনিস্টারও জানেন। কিন্তু পতিতা ব্যবসার মতো এ ব্যবসাও চলে।

শোনা যায়, এই ব্যবসার মূল নিয়ন্ত্রকেরা নাকি বিশাল বড় হ্যাডোমঅলা লোকজন। তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে। তাই সবাই দেখে সবাই জানে কিন্তু কেউ কিছু বলে না।

বরং রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পকেট হাতড়ে ছেঁড়া দুই টাকার নোট কিংবা বাসওয়ালার ফেরৎ দেয়া কয়েনটা ওর দিকে ছুড়ে দিয়ে যায়। কেন? কিসের আসায়? আমি আমার অনেক বন্ধুকে দেখেছি সওয়াব কামানোর আশায় এমন কাজ করতে। তখনই বলেছি, ‘তুই কি জানিস এই টাকাটা শিশুটি পাবে না?’ তার ঈমানদারি জবাব, ‘না পাইলে না পাক, আমি তো নিয়ত কইরা দিছি।’

আমি পাপ পূণ্যের বিষয় কিছু বলতে চাই না। ছেঁড়া অচল নোট দিয়ে এমন সোয়াব কামাই করার সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে চায় না। কিন্তু তাতে শিশুটির ভবিষ্যৎ কোথায় যায় তা কারো ভাবার দরকার নেই। আমার বেহেস্ত, হুর পরি নিশ্চিৎ হলেই হলো।

এইসব শিশুরা কি সুলতানা কামাল, মিজানুর রহমান খান, আবুল মকসুদ, রামেন্দু মজুমদার, আসাদুজ্জামান নুরদের চোখে কিংবা সেভ দ্যা চিলড্রেন বা এরকম কারো চোখে পড়ে না? কে কবে ব্যবস্থা নিতে চেয়েছে?

আমরা শিশু শ্রম নিয়ে কথা বলছি, শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন নিয়ে কথা বলছি, রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য চোখের পানি ফেলছি কিন্তু এই সকল শিশুর কথা কেউ কোনদিন বলেছে বা বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে আমার চোখে পড়েনি।

কেউ এদের নিয়ে ভেবে দেখেছেন, এই শিশুটি যখন কিশোর হবে বা যুবক হবে, তখন সমাজের কোন অংশে তার অবস্থান হবে? সত্যি বললে, ছেলে শিশুরা হয় ছিনতাইকারি থেকে খুনি পর্যন্ত, আর মেয়ে শিশু যায় স্রেফ পতিতালয়ে।
সূত্র > সম্পাদক ডট কম

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...