দেবদাস মজুমদার >>
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী মডেল কে.এম. লতীফ ইনস্টিটিউশন অবিলম্বে জাতীয়করণের দাবিতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে ওইদিন সকাল ১০ ঢাকার সেগুনবাগিচায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মূখ চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থী ও চিত্রশিল্পী চঞ্চল কর্মকার জানান, আমাদের উপকূলীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মডেল ঐতিহ্যের মঠবাড়িয়া কে.এম লতিফ ইনস্টিটিউশন আজও জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা হতাশ। তাই আমরা যারা এ গর্বের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলাম তারাই এ মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দিয়েছি। আমরা আশা করছি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থী এ জনগুরুত্বপূর্ণ দাবিতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকায় প্রেস ক্লাব চত্বরে সমবেত হবেন। আমাদের প্রাণের স্কুল জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত অব্যত আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি জাতীয়করণের দাবিতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া সদরে মানববন্ধন ও সমাবেশসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থী, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীসহ তিন সহস্রাধিক এলাকাবাসি অংশ নেন।
প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে শহরের শহীদ মিনার সম্মূখ সড়কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ওইদিন স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে একটি মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্কুল জাতীয় করণের দাবিতে অব্যহত আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা প্রেস ক্লাব চত্বরে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মঠবাড়িয়া সদরের প্রাণকেন্দ্রে ১৫ দশমিক ৮৪ একর জমি জুড়ে ঐতিহ্যবাহী মডেল কে.এম. লতীফ ইনস্টিটিউশনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৪৬ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়।
বিদ্যালয়টি দক্ষিণ উপকূলে মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে। একাধিকবার মেধা তালিকায় চারবার প্রথম স্থানসহ (১৯৬৬, ১৯৬৭, ১৯৮২, ১৯৮৪) একাধিকবার মেধা তালিকায় সম্মানজনক স্থান লাভ করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি কো-এডুকেশন প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী(ছাত্র-৮১০ ও ছাত্রী-৬৬৫) নিয়মিত লেখাপড়া করছে। দুইটি আবাসিক ছাত্রাবাসে দুরদুরান্তের শিক্ষার্থী অবস্থান করে পড়াশুনা করছে। ৩৭জন শিক্ষক ও ৯জন কর্মচারী এখানে কর্মরত।
এছাড়াও এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলে প্রতিবছর উপজেলা ও জেলায় এখনও সগৌরবে শীর্ষ স্থান অর্জন করে আসছে। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৭ এ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কৃতিত্ব অর্জন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আজও প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয়নি। এমন একটি মডেল স্কুল জাতীয়করণ না হওয়ায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষ বিস্মিত ও ক্ষুব্দ।