ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - অমর শিল্পী আব্দুল আলীমের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অমর শিল্পী আব্দুল আলীমের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আজকের মঠবাড়িয়া অনলাইন ডেস্ক >>

বাংলা লোকসংগীতের অমর শিল্পী আব্দুল আলীমের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ১৯৭৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তৎকালীন ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

ভারতের বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের তালিবপুর গ্রামে ১৯৩১ সালের ২৭ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল আলীম। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইউছুফ আলী ও মায়ের নাম খাসা বিবি।

লোকসংগীতের গবেষক কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, “এ শিল্পী লোকসংগীতকে অবিশ্বাস্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। যেখানে জীবন জগৎ এবং ভাববাদী চিন্তা একাকার হয়ে গেছে। তার আধ্যাত্মিক ও মরমী মুর্শিদী গানের জন্য তিনি অমর হয়ে থাকবেন উল্লেখ করে আসাদ চৌধুরী আরও বলেন, “সমাজটকে যারা জাগিয়েছেন আব্দুল আলীম ছিলেন তাদের একজন। ”

বাল্যকাল থেকেই আব্দুল আলীম সংগীতের প্রতি প্রবল অনুরাগী ছিলেন। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় গ্রামোফোন রেকর্ডে গান শুনে তার গান গাইবার আগ্রহ জন্মে। অর্থনৈতিক অনটনের কারণে তেমনভাবে শিক্ষকের কাছে গান শেখার সৌভাগ্য তার হয়নি। তিনি অন্যের গাওয়া গান শুনে গান শিখতেন আর বিভিন্ন পালা পার্বণে সেগুলো গাইতেন।
এভাবে পালা পার্বণে গান গেয়ে তিনি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

ওই অল্প বয়সেই বাংলার লোকসংগীতের এ অমর শিল্পী গান গেয়ে বেশ নাম করেছিলেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে তার গানের প্রথম রেকর্ড বের হয়। রেকর্ডকৃত গান দুটি হলো ‘তোর মোস্তফাকে দে না মাগো’ এবং ‘আফতাব আলী বসলো পথে’। কলকাতায় আলিয়া মাদ্রাসায় গান গাওয়ার সময় থেকে তিনি সাফল্য অর্জন করতে থাকেন। সে সময় লাহোরে অনুষ্ঠিত অল পাকিস্তান সংগীত সম্মেলনে তিনি পাঁচটি স্বর্ণপদক লাভ করেন।

বাংলা সংগীতের এ কিংবদন্তি শিল্পী ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা রেডিওতে স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে গান গাইতে শুরু করেন। ঢাকায় টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে তিনি সেখানেও তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে সংগীত পরিবেশন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা সংগীত কলেজের লোকগীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

আব্দুল আলীম ঢাকায় মুমতাজ আলী খান ও ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরুর কাছে সংগীতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি পরবর্তীকালে কলকাতায় যান এবং সেখানে আব্বাসউদ্দিন ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে গান করেন। তিনি লোক ও শাস্ত্রীয় সংগীতের ওপর দীক্ষা নেন বেদার উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল লতিফ, কানাই লাল শীল, আব্দুল হালিম চৌধুরীর খ্যাতিমান ওস্তাদদের কাছে। লেটো দল ও যাত্রা দলেও তিনি কাজ করেছেন।

আব্দুল আলীম বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশসহ বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রে গান করেছেন। তার কণ্ঠ দেওয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো ‘লালন ফকির’। সব মিলিয়ে তার ৩০০টির ওপর গান রেকর্ড করা হয়েছিল।

আব্দুল আলীম লোকসংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতা পদক ও ১৯৭৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। ‘সুজন সখী’ চলচ্চিত্রে গানের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। তিনি ৫০টিরও অধিক চলচ্চিত্রের নেপথ্য কন্ঠশিল্পী ছিলেন।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো এদেশ তোমার আমার, জোয়ার এলো, সুতরাং, পরশমণি, বেদের মেয়ে, রূপবান, সাত ভাই চম্পা, পদ্মা নদীর মাঝি ইত্যাদি।
সূত্র > কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...