বিশেষ প্রতিনিধি >
মহান মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সুন্দরবন অঞ্চলের সাবসেক্টকর কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধে উপক’লীয় অঞ্চলে অন্যতম সংগঠক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মেজর(অব:) জিয়াউদ্দিন আহম্মদের স্মরণে শোভসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঠবাড়িয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার সংসদ কার্যালয়ে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা,রাজনীতিক,সুধিজন ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।
ইয়াং অফিসার নবম সেক্টরের সাবসেক্টর সুন্দরবন অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক মজনুর সভাপতিত্বে শোক সভায় বক্তব্য দেন, মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আশরাফুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সাদিকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আ.লীগ নেতা মো. এমাদুল হক খান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান বাদশা, মুক্তিযুদ্ধে আমলানী ট্রেনিং ক্যাম্পের পলিটিক্যাল মটিভেটর ও উপজেলা আ.লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা শাহ আলম দুলাল, মুক্তিযোদ্ধা ও আ.লীগ নেতা মো. জালাল আহম্মেদ, উপজেলা আ.লীগের সহ সভাপতি ও শিক্ষানুরাগী মো. আরিফ-উল-হক, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী মো. আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর প্রমূখ।
সভায় বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অকুতভয় বীর সেনানী ও সুন্দরবনের মুকুটহীন স¤্রাট প্রয়াত মেজর(অব:) জিয়া উদ্দিন আহম্মেদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করে বলেন। স্বাধীন বাংলাদেশ এক সূর্য সন্তানকে হারিয়েছে। আর মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের একজন অভিভাকভাবককে হারিয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মেজর জিয়া উদ্দিনের অপরিসীম অবদানের জন্য তিনি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমাদের অধিকার আর লড়াই সংগ্রামে শক্তির প্রতীক হয়ে তিনি আমাদের হৃদয় মাঝে বেঁচে থাকবেন। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
শেষে মঠবাড়িয়া কেন্দ্রীয় জামেমসজিদের ছানি ইমাম হাফেজ মাওলানা গোলাম কিবরিয়ার সঞ্চালনায় মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিলের অধীনে সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সুন্দরবন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেন মেজর জিয়াউদ্দিন। গত শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জিয়াউদ্দিনের, শনিবার রাতে তার মরদেহ ঢাকায় পৌঁছায়।
রবিবার বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে বিকাল ৩টার দিকে জিয়াউদ্দিনের কফিন সর্বস্থরের জনগনের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এসময় রাষ্ট্রীয়ভাবে এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জাতীয় পতাকায় মোড়ানো এই মুক্তিযোদ্ধার কফিনের সামনে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
মঙ্গলাবর দুপুর ১২টায় শহরের পাড়েরহাট রোডে পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মাতা শাহিদা বেগমের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। দাফন শেষে যশোর সেনা নিবাসের ৫৫ ডিভিশনের ২১ পদাতিক ব্রিগ্রেডের ব্রিগ্রেড কামান্ডার ব্রিগ্রিডিয়ার জেনারেল মাইনুর রহমান সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদকে মরোনত্তর সালাম জানান। পরে সেনা বাহিনীর পক্ষ হতে তাঁর কবরে পুস্পমাল্য অপর্ন করা হয়। এ সময় সেনা বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী মরদেহের সাথে থাকা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর পরিবারের কাছে হস্থান্তর করে।