আল আহাদ বাবু >>
“প্যাডের মধ্যে ক্ষিধা,বাড়িতে খাওন নাই,মা-খাইতে দিতে পারে না, হের লাইগ্যা এই হোডেলে কাম করি” – কথাগুলো মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সকাল সন্ধ্যা মিষ্টান্ন ভান্ডারে কর্মরত চার পাঁচজন অবহেলিত শিশুর। শ্রমজীবি এসব শিশুর যখন স্কুলে যাওয়ার কথা, সহপাঠিদের সাথে আনন্দ করার কথা তখন পেটের তাগিদে রোজগারে কাটছে সময়। এইসব বঞ্চিত শিশুর জীবনে ঈদের আনন্দ ম্লান । ওদের জীবনে প্রতিবছর ঈদ আসে তাই দু:স্বপ্নে মতোন।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি জরিপে দেখা গেছে,দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
মোট শিশু শ্রমিকের সংখ্যা এখন প্রায় ৭৯ লাখ,সরকারি হিসেবে:সহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে শিশুশ্রমের প্রবণতা অনেক বেশি।
শিশু শ্রমিকদের মধ্যে ১৫ লাখ শহরে এবং ৬৪ লাখ গ্রামে কাজ করছে,এদের মধ্যে ৭৩.৫০ শতাংশ ছেলে এবং ২৬.৫০ শতাংশ মেয়ে শিশু,এর মধ্যে আবার প্রায় ৪৫ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত।
ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে প্রায় ১৩ লাখ শিশু সপ্তাহে প্রায় ৯০ ঘন্টি কাজ করছে;অনেক শিশু মাদক সেবন,বিভিন্ন ধরনের চুরি-ডাকাতি,ছিনতাই এমনকি যৌন কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে,বাংলাদেশ শ্রম আইন এর ৪৪(১)অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুকে শিক্ষা গ্রহনের সুযোগবঞ্চিত না করে কাজে নিয়োগ দেয়া যাবে।তবে এসব কাজ হতে হবে ঝুঁকিহীন ও হালকা,১৮ বছরের নিচে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম নিষিদ্ধ।
অবহেলিত মুসলমান শিশুদের নেই কোনো ঈদের আনন্দ,দারিদ্রের কবলে হারিয়ে গেছে ওদের দূরন্ত শৈশব,প্রতিনিয়ত অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে ওদের সোনালী ভবিষ্যত।
তাই পথশিশুদের নিরাপত্তা দিতে হবে,এবং আনন্দময় জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে,অভিভাবকহীন শিশু পথের ধারে ঘুমিয়ে থাকে,ডাস্টবিনের খাবার কুড়িয়ে খায়,বৃষ্টিতে ভিজে,রোদে পুড়ে;এইসব শিশুদের কাছে ঈদ একটা বিষণ্নময় স্বপ্ন !
আসুন আমরা সবাই মিলে অবহেলিত শিশুদের জন্য অন্তত ঈদের দিনটাতে বিনোদনের জন্য কিছু একটা করি!
লেখক. আল আহাদ বাবু, শিক্ষার্থী, মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ ।