ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মঠবাড়িয়ায় অর্থের বিনিময়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করার অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটিসহ তালিকা বাতিলের দাবি

মঠবাড়িয়ায় অর্থের বিনিময়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করার অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটিসহ তালিকা বাতিলের দাবি

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >>

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে দুর্নীতি ও অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে। আজ শনিবার মঠবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ আনেন।
মুক্তিযুদ্ধে সুন্দরবন অঞ্চলের সাব সেক্টর শরণখোলা থানার ইয়ং কমান্ডিং অফিসার মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক হক মজনু সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মঠবাড়িয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মো. বাচ্চু মিয়া আকন একজন বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা হলেও তাকে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। সে ছাড়াও যাচাই বাছাই কমিটিতে আরও বেশ কয়েকজন অমুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বিতর্কিত এ কমিটি বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময় ৩০০ অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মঠবাড়িয়ায় ৬১০ জন ভাতাধারী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে । যাদের মধ্যে ২৫০/৩০০ মুক্তিযোদ্ধাই ভূয়া। প্রকৃত পক্ষে মঠবাড়িয়ায় ২০০ থেকে ২২৫জনের বেশী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। নতুন করে যাচাই বাছাই করে সেখানে আরও ৩০০জনের ভূয়া তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। এ অমুক্তিযোদ্ধাদের নিকট হতে বর্তমান যাচাই বাছাই কমিটি প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, এ তালিকায় স্বাধীনতা বিরোধি পরিবারের সন্তানদেরও টাকার বিনিমিয়ে নতুন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। মঠবাড়িয়ার ১১ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সর্বসাকুল্যে নতুন তালিকায় ৪০/৫০জন মুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারেন । তবে এদের যাচাই-বাছাই কমিটির চাহিদামত অনেকে টাকা দিতে না পারায় তালিকা থেকে তারা বাদ পড়েছেন। যারা টাকা দিতে পেরেছেন তারাই নতুন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পেরেছেন। এছাড়া পূর্বেকার একটি তালিকা হতে ১৩২জন মুক্তিযোদ্ধাকে নুতন করে বাচাই কমিটির সামনে হাজির হতে মন্ত্রণালয় হতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও তাদের কাছ থেকে বাছাই কমিটি অর্থের বিনিমিয়ে তাালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এসব মুক্তিযোদ্ধারা কোথায় যুদ্ধ করেছেন তা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জানা নেই। এসব অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করতে যাচাই বাছাই কমিটি জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন।
স্থানীয় তুষখালী গ্রামের হাবিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধির দুটি মামলায় ৬ ও ৮ নম্বর আসামী হিসেবে অভিযুক্ত অথচ তিনি তালিকাভূক্ত হিসেবে ভাতা গ্রহণ করছেন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আপত্তি থাকা সত্বেও বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের যোগসাজসে যাচাই-বাছাই কমিটি মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে এ বিষয়ে কোন রেজুলেশন মন্ত্রণালয়ে পাঠাননি।

সংবাদ সম্মেলনে বিক্ষুব্দ মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমান অমুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত যাচাই বাছাই কমিটি বাতিল করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে নতুন বাছাই কমিটি গঠনের দাবি জানান। সেই সাথে বর্তমান বিতর্কিত মুক্তিযেদ্ধাদের তালিকা বাতিলের দাবি করা হয় । অন্যথায় মঠবাড়িয়ার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অমুক্তিযোদ্ধাদের ঠেকাতে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবে ।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাদিকুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে আমলানি যুব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের মটিভেটর মোস্তফা শাহ আলম দুলাল, সদর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক সহকারী কমান্ডার আব্দুল হালিম জমাদ্দার, সহকারী কমান্ডার ইয়াকুব আলী হাওলাদার ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমানসহ মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...