দেবদাস মজুমদার >>
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বুদ্ধিদীপ্ত তরুণদের নানা মতের প্রতিফলন। এসব মতামত সবটা নেতিবাচক নয়। অনেক তরুণ মিলে ফেসবুক ভিত্তিক যখন নানা সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় তখন সে তারুণ্য সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে।পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার কতিপয় মেধাবী তরুণ মিলে সামাজিক সাইট ফেসবুক ভিত্তিক গড়ে তুলেছেন ভান্ডারিয়া উন্নয়ন পরিষদ। উদ্যোক্তা এসব তরুণরা এলাকায় নানা সামাজিক ও মানবিক নানা কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে এলাকায় আশার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সমমনা তরুণরা মিলে ভান্ডারিয়া উন্নয়ন পরিষদ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলে ফেসবুক বন্ধুদের সহযোগিতায় বর্ষা মৌসুমে পঞ্চাশোর্ধ বয়সি রিকশা চালকদের মাঝে রেইনকোর্ট বিতরন, বিভিন্ন দুর্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরন, শীত মৌসুমে গরীব অসহায়দের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরন ও পবিত্র ঈদুল ফিতরে গরীব বয়স্ক ও শিশুদের মাঝে নতুন ঈদ পোশাক বিতরন করে আসছে। এছাড়া ছোট ছোট (চায়ের দোকান) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পন্য কিনে দেওয়া, গরীব ছাত্র/ছাত্রীদের বই খাতা ও কলম বিতরন এবং গরীব মেয়েদের বিবাহে সাহায্য করে থাকে। স্বেচ্ছাশ্রমে এসব মানবিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে উদ্যোক্তা তরুণরা এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা অর্জণ করেছেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, ভান্ডারিয়ার কতিপয় তরুণ যারা নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করে আসছেন। এসব বন্ধুরা এলাকার নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিয়মিত তাদের টাইম লাইনে জনস্বার্থে স্টাটাস দিয়ে থাকেন। মানবিকবোধে তাড়িত সমমনা কতিপয় ফেসবুক বন্ধুদের মধ্যে নিয়মিত তথ্যের আদান প্রদান ও মতামত প্রদানের মাধ্যমে একটা সামাজিক সখ্যতা গড়ে ওঠে। সমাজের জন্য শুভ কিছু কাজ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কেউ কেউ। কয়েকজন বন্ধু মিলে এভাবেই গড়ে তোলেন ফেসবুক ভিত্তিক ভান্ডাািরয়া উন্নয়ন পরিষদ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটি উপজেলার গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে ২০১৪ সালে কাজ শুর করেন। এসব তরুণরা তাদের ফেসবুকে নানা মানবিক উদ্যোগের কথা প্রকাশ করে সহযোগি মানুষের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।এতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বন্ধুদের সাড়া মেলে। এসব ফেসবুক বন্ধুদের সহযোগিতায় ভান্ডারিয়ায় নানা সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে।
ভান্ডারিয়া উন্নয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শামসুদ্দিন খান শিপলু জানান, সমাজে মানুষের মূল্যবোধ সৃষ্টিসহ মেধা ও মননশীলতা চর্চার শক্তিশালী মাধ্যম এখন সামাজিক সাইট ফেসবুক। আমরা সমমনা কতিপয় তরুণরা মিলে ফেসবুক ভিত্তিক সংগঠনটি গড়ে তুলি। এটি একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আমরা সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈকিতাবোধে এ উদ্যোগটা নেই। সংগঠনটি আর্ত-পীড়িত মানুষের পাশে দাড়ানোর মত নানা সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। আশার কথা যে,এসব কর্মকান্ড পরিচালনার সাথে আমাদের সাথে অসংখ্য তরুণরা যুক্ত হচ্ছেন।
সংগঠনটি চারজন পরিচালক ও চারজন সহ পরিচালক এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। পরিচালনা পর্ষদে আছে সামসুদ্দিন খান শিপলু, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, মো. ওয়াহিদুজ্জামান অপু, পরিচালক, জোবায়দা আক্তার চৌধুরী, পরিচালক, মো. ইয়ামিন হোসেন, পরিচালক। মো. আব্দুস সবুর সহ পরিচালক, তানজিম বিন সোহাগ, সহ পরিচালক, মো. পলাশ, সহ পরিচালক, সৈয়দ মাইনুল ইসলাম মঈনসহ পরিচালক।
সংগঠনের পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান অপু বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২০ রমজান ৫০০ জন গরীব বয়স্ক ও শিশুদের মাঝে নতুন ঈদ পোশাক বিতরনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে আমাদের ফেসবুক বন্ধুদের সার্বিক সহযোগিতায়।
সংগঠনের পরিচালক জোবায়দা আক্তার চৌধুরী বলেন, ফেইজবুক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভাল কাজ গুলো বিশ্বের মাঝে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারি। অনেক বিপদগামী যুবক আছে যারা মন্দ কাজে ফেইজবুক ব্যাবহার করে। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা আমাদের যুব সমাজ ,তরুন প্রজন্মের যারা আছে তারা অনেক উন্নয়ন মূলক কাজে ফেইজবুক কে ব্যবহার করছেন। তার ভেতর ভান্ডারিয়া উন্নয়ন পরিষদ একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান। তাদের এই মহত কর্মকান্ড ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গরীব অসহায় মানুষ সাহায্য পাচ্ছে। শীতবস্ত্র বিতরন, ঈদের পোশাক বিতরন থেকে শুরু করে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাড়ানোই প্রধান উদ্দেশ্য ভান্ডারিয়া উন্নয়ন পরিষদের। ফেইসবুক এমন একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে খুব ধ্রুত ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে আমরা দাড়াতে পারি।