বিশেষ প্রতিনিধি >>
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দুলালী রানী মিস্ত্রী (২২)নামে এক গৃহবধূকে গলায় কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালিয়েছিল স্বাামী রিপন মিস্ত্রী(৩০) । স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে বাঁধা দেওয়ায় পাষন্ড রিপন রবিবার দিবাগত গভীর রাতে স্ত্রীর গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ওই হত্যাকান্ড ধামাচাপা দিতে সে আত্মহত্যা বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায় ।
আজ সোমবার দুপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের ছোট শিংগা গ্রামে স্বামীর বসত ঘর হতে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে। অভিযুক্ত স্বামী রিপনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নিহত ওই গৃহবধূ ছোট শিংগা গ্রামের মাখম চন্দ্র মিস্ত্রীর ছেলে রিপন মিস্ত্রীর স্ত্রী। সে পেশায় কাঠ মিস্ত্রী । নিহত গৃহবধূর কলি নামে পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে ও হৃদয় নামে তিন বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের ছোট শিংগা গ্রামের মাখম চন্দ্র মিস্ত্রীর ছেলে রিপন মিস্ত্রীর সাথে গত নয় বছর আগে উপজেলার বেতমোর ইউনিয়নের শীতলপুর গ্রামের নারায়ণ মন্ডলের মেয়ে দুলালী রানীর পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রিপন মিস্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ পরকীয়ার জের ধরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। প্রায়ই ওই গৃহবধূ স্বামীর মারধরের শিকার হন। রবিবার রাতে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে । একপর্যায় ক্ষিপ্ত স্বামী স্ত্রী দুলালীর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখে। আজ সোমবার সকালে স্বামী রিপন হত্যার ঘটনা আত্মহত্যা বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায়। পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে আমিই আমার স্ত্রীকে শ্বাস রোধে হত্যা করেছি।
নিহত গৃহবধূর বাবা নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করে অভিযোগ করেন, তার মেয়ের জামাই দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রায় তার মেয়েকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এমনকি জামাই রিপন তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে অন্যথায় সে দ্বিতীয় বিয়ের হুমকী দেয়।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মো. শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানান, গ্রামবাসিদের কাছে খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর লাশ স্বামীর বসতঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার করা হয়। তার গলায় আঘাতের আলামত রয়েছে। গৃহবধূর স্বামীকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাসে সে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে। লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল বাদি হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।