ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ

মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ

সাংবাদিক,রাজনীতিক,ইসলামী শাস্ত্রজ্ঞ। সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন আহল-ই-হাদিস এ। মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ ১৯০৮ খেকে ১৯২১ মধ্যে মোহাম্মদী ও আল-এসলাম পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে কাজ শুর করেন। ১৯৬৩ সালের অক্টোবরে হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী আকরাম খাঁ সে সময়ের একমাত্র বাংলা দৈনিক হিসেবে আজাদ প্রকাশ করেন। এ পত্রিকাটি বঙ্গ বিভাগোত্তর মুসলিম লীগের পক্ষে জনসমর্থন সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

বাংলার মুসলিম চিন্তাবিদদের মধ্যে আকর্ষণীয় ব্যকিতত্ব, বাংলার মুসলিম মনীষীদের অন্যতম, সকল ধর্ম, গোত্র, সম্প্রদায়ের ঐক্যের ভিত্তিতে গঠিত ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা, উপমহাদেশের আজাদী আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী, মুসলিম বাংলার সাংবাদিকতার জনক, বিশিষ্ট বক্তা, সমাজসেবক, খ্যানামা সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ ১৯৬৮ খৃষ্টাব্দে ১২৭৫ বঙ্গাব্দের ২৪শে জ্যৈষ্ঠ শুক্রবার ২৪ পরগণা জেলার অন্তর্গত হাকিমপুর গ্রামে এক ঐতিহ্যবাহী আলেম পরিবারে জনমগ্রহণ করেন।
আকরাম খাঁর পূর্বপুরুষদের বাড়ি ছিল যশোর-খুলনা সীমান্ত অঞ্চলে পয়গ্রামে।
আকরাম খাঁর পিতা আলহাজ্ব গাজী মাওলানা আব্দুল বারী খাঁ একজন খ্যাতিসম্পন্ন আলেম ও নামজাদা পীরসাহেব ছিলেন। মাওলানা আকরাম খাঁর মাতা রাবেয়া খাতুন একজন বিদুষী মহিলা ছিলেন।
পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আকরাম খাঁ মায়ের কাছে আল কোরআন, গুলিস্তা, বুস্তা ইত্যাদি কিতাব পাঠ শেষ করেন। মাত্র দশ বছর বয়সে তিনি কোলকাতা চলে যান। তিনি বর্ধমানের খ্যাতনামা মাওলানা নেয়ামতউল্লাহ সাহেবের মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। রেপর কোলকাতা জুবিলী হাইস্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু স্কুলশিক্ষায় তাঁর অনাগ্রহ দেখা দেয়। ১৮৯৬ খৃষ্টাব্দে কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৯০১ সালে তিনি কৃতিত্বের সাথে মাদ্রাসা ফাইনাল পরীক্ষায় পাশ করেন।
মাওলানা আকরাম খাঁ ছাত্রজীবনেই আরবী, উর্দু, ফারসী ও বাংলা ভাষায় কবিতা চর্চা শুরু করেন। ঢাকার শাহাবাগে স্যার সৈয়দ আহমদের শিক্ষা সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর প্রথম জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটে।

মাওলানা আকরাম খাঁ কর্মজীবনের প্রথমে “সাপ্তাহিক আহলে হাদীস” পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর মাওলানা আব্দুল খালেক প্রতিষ্ঠিত “মোহাম্মদী আখবারে” পেশাগত সাংবাদিকতা আরম্ভ করেন।
১৯০১ খৃষ্টাব্তিনি সর্বপ্রথম ত্রৈমাসিক মোহাম্মদী প্রকাশ করেন। তিনি এর প্রধান সম্পাদক এবং মাওলানা হাবিবুর রহমান সাহিত্যরত্ন এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন।

১৯১৩ সালে “আঞ্জুমানে ওলামায়ে বাংলা” গঠিত হলে মাওলানা সাহেব এর সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। এ সমিতির পরিচালক বেং মাওলানা আকরাম খাঁ ও মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর যুক্ত সম্পাদনায় “আল ইসলাম” নামক একখানা মাসিক আত্মপ্রকাশ করে। পত্রিকাখানি ছয় বছর চালু ছিল। খেলাফত আন্দোলনকে জোরদারকরার জন্য ১৯২০ সালে উর্দু ভাষায় “দৈনিক জমানা” ত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯২১ সালে তিনি “দৈনিক সেবক” প্রকাশ করেন। জমানা, সেবক ও মোহাম্মদীসহ তখন তিনি ।
মাওলানা আকরাম খাঁ সাপ্তাহি মোহাম্মদী, পাশাপাশি সাহিত্য বিষয়ক মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলমান লেখকদেরকে উৎসাহ ও সাহিত্যচর্চ ার সুযোগ দেওয়ার জন্য সেকালের বাধাধরা নিয়মকে ভঙ্গ করে মুসলমান লেখকদের সাহিত্যচর্চার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

মাওলানা আকরাম খাঁ মুসলিম বাণীকে দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৯৩৬ সালের ৩১ অক্টোবর তারিখে কলকাতা হতে “দৈনিক আজাদ” পত্রিকা প্রকাশ করে মাওলানা আকরাম খাঁ বাংলা ও আসামের মুসলমানদের যে উপকার করেছিলেন তা চিরকাল জাতীয় জাগরণের ইতিহাসে ভাস্বর হয়ে থাকবে।
জাতির এক সংকটময় সময়ে মাওলানা আকরাম খাঁ “দৈনিক াজাদ” প্রকাশ করেছিলেন এবং
ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে তিনি তদানীনতন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় চলে আসেন। তিনি ঢাকায় এসে “দৈনিক আজাদ” পুনরায় চালু করেন।
করেছিলেন।
খ্যাতনামা বাগ্মী, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মুসলিম বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল। তঁর সাহিত্যকর্ম হতে যে কোন ঐতিহাসিক, গবেষক, ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক প্রচুর উপকরণ সংগ্রহ করতে সমর্থ হবেন।

মুসলিম রেনেসাঁর অগ্রদূত মাওলানা আকরাম খাঁ ১৯৬৮ সালের ১৮ই আগষ্ট ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। মাওলানা আকরাম খাঁর বর্ণময় জীবন ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হরফে লেখা থাকবে।
তথ্যসূত্র > মুক্ত বিশ্বকোষ, ছবি সূত্র > ইত্তেফাক

Leave a Reply

x

Check Also

লাইটার জাহাজের ধাক্কায় চরখালী ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে বিধ্বস্ত 🔴 যানবাহন চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কঁচা নদীর চরখালী-টগরা ফেরিঘাটের চরখালী ঘাটে একটি জাহাজের ধাক্কায় ফেরির ...